ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েও মানবেতর জীবনযাপন মানুষে-পশুতে একাকার, শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি
  • সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
  • ২০২২-০৬-২১ ০৫:১৮:৫৭
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ভিটেমাটি ছেড়ে আশপাশের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের ১০লাখ মানুষ। ফলে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে তিলধারণের জায়গা নেই।নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষে-পশুতে একাকার। শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এসব মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েও মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এদিকে, জেলার ১২টি উপজেলায় যে পরিমান মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছে তার চেয়ে সরকারের বরাদ্দ একেবারেই কম। জেলার তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর, উত্তর শ্রীপুর, দক্ষিণ বড়দল, উত্তর বড়দল বেশি দূর্ভোগে আছে। আশ্রয় কেন্দ্র ও বন্যা আক্রান্ত পরিবার গুলোর সাথে কথা বলে জানাযায়, জেলার বেশির ভাগ আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত খাবার ও বিশুদ্ধ পানি নেই। অনেকেই আবার না খেয়ে আছেন। মানুষজন ত্রাণসামগ্রীর জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। হাওর পাড়ে যে কোনো ধরনের নৌকা দেখলেই বন্যার ক্ষতি গ্রস্থরা ত্রাণের আশায় দৌড়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, কোনো কোনো আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের এতটাই গাদাগাদি যে শ্বাস ফেলার জায়গাটুকুও নেই। খাওয়ার পানি নেই, খাবার নেই। এর মধ্যে প্রতিনিয়ত ভিটেমাটি ছেড়ে মানুষজন এসব আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছেন। অসুস্থ মানুষ শুয়ে আছেন চিকিৎসাসেবা তো দূরের কথা, এক বেলা খাবার নিয়েও দুশ্চিন্তা করতে হচ্ছে তাদের। জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়,সরকার কিংবা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে যতটুকু ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই কম। বিদ্যুৎ না থাকায় মোমবাতি, খাদ্য ও নিরাপদ পানির সংকটে পড়েছে। শুকনো খড় পানিতে ডুবে যাওয়ায় মানুষের পাশাপাশি গোখাদ্য সংকটও তীব্র হয়েছে কৃষক পরিবার গুলোতে। মোঃ শফিকুল ইসলামসহ জেলার সচেতন নাগরিকগন বলেন,শহরের প্রতিটি পাকা বাড়িই একেকটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। পাঁচ দিন ধরে সুনামগঞ্জ শহরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফলে আশ্রয় কেন্দ্রে মোমবাতি, খাদ্য ও নিরাপদ পানির সংকটে পড়েছে সুনামগঞ্জবাসী।দুদিন ধরে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির কিছু উন্নতি হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি কমছে, তবে খুব ধীর গতিতে। সুনামগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কাশেম জানিয়েছেন, অফিস থেকে মোবাইল ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে লোকজনকে নিরাপদ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। বন্যাকবলিতদের মাঝে ৫০হাজার লিটার বিশুদ্ধ পানি ও চার লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। বন্যাকবলিতদের সহায়তায় সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি আরও বলেন,বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের সঙ্গে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ কাজ করছে। জেলায় ৬৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ উঁচু বাসাবাড়িতে দেড় লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তাদের জন্য ৪৫০ টন চাল, ৮০ লাখ টাকা ও ১০ হাজার বস্তা শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সুনামগঞ্জ শহরে প্রতিদিন ৪০ হাজার মানুষকে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে।
১৩ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি কুতুবদিয়ার এলপিজিবাহী জাহাজের আগুন
২৩ নভেম্বর ১০০ স্বঘোষিত মাদক ব্যবসায়ীর রায়
আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েও মানবেতর জীবনযাপন মানুষে-পশুতে একাকার, শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি