চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আসামী পরিবারের অপতৎপরতার অভিযোগ
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি :
-
২০২১-০৯-২১ ১০:৩৩:৩৭
- Print
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতানপুরের চাঞ্চল্যকর একটি হত্যা ঘটনার রহস্য উন্মোচনের পর ঘটনায় জড়িতদের পরিবারের সদস্যরা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ওলিও এবং তার ছেলে সুলতানপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান শেখ ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সবকিছুর মুলে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন রয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফিরোজুর রহমান ওলিও এই অভিযোগ করেন। এরআগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে করে সুলতানপুর ইউনিয়নের হাবলাউচ্চ গ্রামের স্বপন হত্যাকাণ্ডে পুলিশের একটি সংস্থাকে হাত করে প্রতিপক্ষের লোকজনকে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ করা হয় ফিরোজুর রহমান ও তাঁর ছেলে ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে। হত্যা ঘটনার বিষয়ে আদালতে স্বীকারুক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদানকারী শফিকুল ইসলাম হৃদয়ের মা নারী ইউপি সদস্য ইসরাত জাহান ও আরেক আসামী সাধন চৌধুরীর ভাই মতিলাল চৌধুরী ওই সংবাদ সম্মেলনটি করেন।
ফিরোজুর রহমান ওলিও তার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি ২৫ বছর সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এই সময়ে তিনি কোন অন্যায় বা খারাপ কাজে জড়িত হয়েছেন তা কেউ বলতে পারবেনা। মানবিক এবং সামাজিক কাজকর্ম-ই ছিলো তার একমাত্র লক্ষ্য। তিনি উপজেলায় চলে আসার পর তার ছেলে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সামনেও সে প্রার্থী হবে। আর একারনেই তাদের লক্ষ্য করে নানা অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে একটি মহল। তবে এতে ইউনিয়নের একটি পরিবার ছাড়া সবার মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, হাবলাউচ্চ গ্রামের প্রয়াত মতিউর রহমান তাঁর জীবদ্দশায় বিগত সময়ের ইউপি নির্বাচনে তার কাছে দুইবার পরাজিত হন। পরাজয়ের সেই যন্ত্রণা থেকে মতিউর রহমানের পরিবার এবং তাঁর সমর্থকরা প্রতিহিংসাবশত তার সবকিছুতেই বিরোধীতা করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় স্বপন হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে আমার ও আমার ছেলের বিরুদ্ধে ওই মহলটি উঠে-পড়ে লেগেছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করে ওই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে। কী কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে এবং কারা এর সঙ্গে জড়িত, সবকিছুই গ্রেপ্তারকৃত আসামি হৃদয় তাঁর স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, স্বপন হত্যকাণ্ডে আমার ও আমার ছেলের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। সিআইডির তদন্তেও সেটি স্পষ্ট হয়েছে। মুলত আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বক্তব্য প্রচার করে সম্মানহানি করা ছাড়াও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। স্বপন হত্যকাণ্ডে স্বীকারোক্তি দেওয়া হৃদয়ের মা নারী ইউপি সদস্য ইসরাত জাহান আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে যে বক্তব্য দিয়েছেন- সেটি বানোয়াট ও নির্জলা মিথ্যা। বরং ওই সংবাদ সম্মেলনের পর হত্যাকান্ডে তার যোগসাজস থাকার কথা বলছেন সাধারন মানুষ। এছাড়াও ওই সংবাদ সম্মেলনে জেলে থাকা সাধন চৌধুরীর বড় ভাই মতিলাল চৌধুরী আমাকে জড়িয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন- তাও বাস্তব বিবর্জিত। সাধন চৌধুরী আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা কর্জ নিয়ে কয়েক বছর পর ৪ লাখ টাকা ফেরত দেয়। বাকী ১ লাখ টাকা এখনো দেয়নি। এই টাকা চাওয়ার কারনে সে আমার ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধচারন শুরু করে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুলতানপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ কে এম সেলিম খান, ইউনিয়ন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি রতন কুমার দে, সাধারন সম্পাদক ও স্কুল শিক্ষক পূর্ন চন্দ্র রায়, ইউপি সদস্য আবুল খায়ের, বিশিষ্ট সর্দার জসিম উদ্দিন ভূইয়া, ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা অরবিন্দু চৌধুরী প্রমুখ। এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে ৯ জন ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন। শেখ ওমর ফারুক সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের আগামী নির্বাচনেও প্রার্থী হচ্ছেন। এছাড়া ফিরোজুর রহমান নিজেও সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।