গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বড় অঙ্কের লেনদেন হতে দেখা গেছে। এদিন মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা, যা গত সাড়ে ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর ডিএসইতে লেনদেন ছিল দুই হাজার ৭১০ কোটি টাকা।
যদিও গতকালের লেনদেনের পুরোটাই ছিল শুভঙ্করের ফাঁকি। বড় লেনদেন দেখে বিনিয়োগকারীরা অনেকেই ভেবেছিলেন, লেনদেনে বুঝি গতি ফিরল। পরে তারা জানতে পারেন বড় লেনদেনের অন্তরালে ছিল ব্লক লেনদেন। এই মার্কেটের কল্যাণেই ডিএসইতে গতকাল রেকর্ড লেনদেন ছিল।
গতকাল লেনদেনের প্রায় পুরোটাই ছিল ব্লক মার্কেটের লেনদেন। এই মার্কেটেই লেনদেনের পরিমাণ দুই হাজার ৪৭৯ কোটি টাকার শেয়ার, যার বড় অংশই ছিল জিএসকের শেয়ার হাতবদল হওয়ার ঘটনা। আর মূল মার্কেটে লেনদেন হয় মাত্র ৬৪ কোটি টাকার।
বাজার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ব্লক মার্কেটে ৩৭টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির দুই হাজার ৪৭৯ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনেরই শেয়ার লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ২২৫ কোটি টাকার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২০ কোটি ২০ লাখ টাকার ইউনাইটেড পাওয়ারের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৪ কোটি ১৪ লাখ ২৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে রেনেটার, যে কারণে ডিএসইতে বড় ধরনের লেনদেন চোখে পড়ে।
মূল মার্কেটে লেনদেন তেমন না হলেও আগের কার্যদিবসের মতো দর বাড়িয়ে শেয়ার কিনতে দেখা গেছে বিনিয়োগকারীদের, যে কারণে দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির সংখ্যা বেড়েছে। গতকাল ডিএসইতে মোট ৪৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বাড়তে দেখা গেছে। এর বিপরীতে দর কমতে দেখা গেছে ১২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের। আর ফ্লোর প্রাইসে আটকে গতকালও সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত থাকে, যার সংখ্যা ছিল ২৩৫টি।
এদিকে গতকাল বেশি সংখ্যক কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পাওয়ায় ভূমিকা রেখেছে ব্যাংক খাত। গতকাল এই খাতের ১০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর বাড়তে দেখা যায়। সারা দিনই এই খাতের শেয়ারের চাহিদা দেখা যায়। সম্প্রতি এই খাতের শেয়ার চাহিদা একটু একটু করে বাড়তে দেখা যাচ্ছে। এর মূল কারণ ব্যাংক খাতে মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির সংখ্যা বেশি। পাশাপাশি এসব শেয়ারের দরও কম, যে কারণে এই খাতটিতেও ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা। ব্যাংক খাতের পাশাপাশি গতকাল প্রকৌশল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং বিমা খাতের শেয়ারের চাহিদাও পরিলক্ষিত হয়। এসব শেয়ারেও ছিল বিনিয়োগকারীদের সন্তোষজনক চাহিদা, যে কারণে এই দুই খাতের কিছুসংখ্যক কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে দেখা যায়।