দিনাজপুরে বিয়ে পড়ানোর কথা বলে( নিকাহ রেজিস্টার) কাজী মোজাফফর হোসেন (৫০) অপহরণ করে মুক্তিপণ হিসেবে ২ লক্ষ টাকায় দাবি করা মামলায় ৫ অপহরণকারী কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার দুপুর একটার দিকে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ আটক ৫ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তারের সংবাদ প্রেস কনফারেন্স মাধ্যমে করেছে পুলিশ।
অপহরণকারী আটক ব্যক্তিরা হল রাকিবুল আলম রাকিব (১৬) সে দিনাজপুর পৌরসভা এলাকার মিশন রোড কুঠিবাড়ি গেট মহল্লার এরশাদ আলীর ছেলে। ইউসুফ আলী (২৬) একই মহল্লার আব্দুর রশিদ খানের ছেলে। জোবায়ের হোসেন জুয়েল (২২) একই এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে। আইজুল ইসলাম ওরফে আজিজুল (২৬) একই এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে। অপরজন হল আব্দুল কাদের( ৬০) একই মহল্লার আব্দুল বাহেদের ছেলে।
ভিকটিম কাজী মোজাফফর হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ গোলাম হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৩০ জুলাই রবিবার সকালে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার কামদেবপুর গ্রামের কাজী মোজাফফর হোসেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয় একটি জরুরী কাজের জন্য আসেন। শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণকারীদের একজন কৌশলে দিনাজপুর পৌর এলাকার মিশন রোড কুঠিবাড়ি সিনেমা হলের পিছনে ছেতড়া পাড়ায় একটি বাড়িতে বিয়ে পড়ানোর কথা বলে তাকে অনুরোধ করে। তাকে তাদের সাথে সেই বাড়িতে নিয়ে যায় নিয়ে যাওয়ার একপর্যায়ে তাকে হাত-পা বেঁধে বেদম মারপিট শুরু করে। এরই এক পর্যায়ে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ২ লক্ষ টাকা পাওনা বাবদ জোর করে স্বাক্ষর গ্রহণ করেন। কাজী মোজাফফর হোসেন এর ব্যবহারিত মোবাইলের থেকে তার ছেলের নিকট মুক্তিপণের দুই লক্ষ টাকা দাবি করে এবং তাকে বেধক পিটানোর চিৎকার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার ছেলেকে এবং তার পরিবারকে শোনানো হয়।
তাৎক্ষণিকভাবে তার ছেলে গোলাপ হোসেন বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা অপহরণকারীদের নিকট পাঠিয়ে দেন এবং কাজী সাহেবের নিজের কাছে ২০ হাজার টাকা থাকায় সেটিও জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেন অপহরণকারীরা।
অপহরণকারীরা একটি নির্জন বাসায় আটকে রেখে বেদম মারপিট ও মুক্তিপনের টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে পাঠানোর জন্য কাজী মোজাফফর হোসেন এর ব্যবহৃত মোবাইল থেকেই তার পরিবারের নিকট বারবার মোবাইলে তাগাদা দেওয়া হয়।
ভিক্টিমের ছেলে গোলাপ হোসেন টাকা জোগাড় করতেছি এইভাবে কিছু সময় কালক্ষেপণ করার সুযোগে বিষয়টি কোতোয়ালি থানাকে অবগত করে। থানার একটি চৌকস টিম মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাকিং করার এর মাধ্যমে গত রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার মধ্যেই কুঠিবাড়ি সেতড়া পাড়ার নির্জন বাড়ি থেকেই ভিকটিম সহ দুই অপহরণকারীকে হাতেনাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন পুলিশ।
পরে পুলিশের হাতে আটক হওয়া দুই অপহরণকারীকে জিজ্ঞাসাবাদে একপর্যায়ে আরো তিন অপহরণকারীকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ তানভিরুল ইসলাম মোট ৫ অপহরণকারীকে আটকের পর প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের সাথে আরও ৩-৪ জন অপহরণ কাজে সম্পৃক্ত আছে বলে তারা স্বীকার করেছে বলেও নিশ্চিত করেন, ওসি।
তিনি আরো বলেন এই অপহরণকারীদের একটি চক্র দিনাজপুর শহরে অবস্থান করছে বলেও আমরা বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। বিভিন্ন সময় মানকে জিম্মি করে অপহরণ কাজটি করে আসছে। এই অপহরণকারী পাঁচজনের কে আদালতের মাধ্যমে সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
বিকালে আদালতের মাধ্যমে আটক ৫ অপহরণকারীদের কে আদালতে প্রেরণ করা হবে বলেও তিনি নিশ্চিত করেছেন।