ঢাকা সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
নরসিংদী আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে উজ্জ্বল নক্ষত্র সাবেক মানবিক মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল
  • হাজী জাহিদ, নরসিংদী
  • ২০২৩-০৭-১৪ ০৯:২৩:৫১

২০১১ সালে পহেলা নভেম্বর গুলি করে নিশংসভাবে হত্যা করা হয় নরসিংদী পৌরসভার স্বর্ণপদক প্রাপ্ত শ্রেষ্ঠ মেয়র জনবন্ধু লোকমান হোসেন কে। নরসিংদীর রাজনীতি থেকে লোকমান পরিবারকে বিচ্ছিন্ন করাই ছিল এই হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু মেয়র লোকমানেরই আপন ছোট ভাই মো: কামরুজ্জামান কামরুলের বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতায় সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। লোকমান হত্যাকাণ্ডের পর উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে মেয়র হিসেবে জয়লাভ করেন মোঃ কামরুজ্জামান কামরুল।

নরসিংদী পৌরসভার নগর পিতা হওয়ার পর কামরুল বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন যে , নরসিংদীর রাজনীতিতে টিকতে হলে জেলা জুড়ে তার জনপ্রিয়তা বাড়াতে হবে। তাইতো কামরুল তার আপন ছোট ভাই নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মোঃ শামীম নেওয়াজকে নরসিংদী জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব এনে দেন। তিনি অত্যন্ত সাফল্যের সাথে এ দায়িত্ব পালন করছেন। জনবন্ধু লোকমানের স্ত্রী তামান্না নুসরাত বুবলি কে নিয়ে শুরু হয় বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ড। কিন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুবলিকে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেন এবং নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এর দায়িত্ব দেন। ফলে বুবলিকে নিয়ে অপপ্রচার বন্ধ হয়ে যায়। কামরুল কাউন্সিলের মাধ্যমে নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

তার এ ধরনের কর্মকাণ্ডে বিচলিত হয়ে পড়ে লোকমান পরিবার বিরোধী নরসিংদীর রাজনৈতিক অপশক্তি। এই অপশক্তি একজোট হয়ে কামরুলের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়। নরসিংদীর রাজনীতিতে কামরুলের আধিপত্য বিস্তার রোধে নরসিংদী সদরের এমপি নজরুল ইসলাম হিরুর সাথে কামরুলের সম্পর্কের দূরত্ব সৃষ্টি করেন। কিন্তু কামরুলের পক্ষে অবস্থান নেন নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নরসিংদী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত আব্দুল মতিন ভূঁইয়া। এমপি হিরো ও আব্দুল মতিন ভূইয়ার দ্বন্দ্বে বিভক্ত হয়ে যায় নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় হাই কমান্ড দুইজনকেই সভাপতির দায়িত্ব থেকে নজরুল ইসলাম হিরুকে এবং সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে আব্দুল মতিন ভূঁইয়াকে অব্যাহতি দেয়। কিন্তু কামরুলের কারিশমাটিক নেতৃত্বে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান জিএম তালেব হোসেন ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান পীরজাদা মোহাম্মদ আলী। তারা দুজনেই কামরুলের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেই পরিচিত। পরবর্তীতে তাদেরই সম্মেলনের মাধ্যমে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর  ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান মো: কামরুজ্জামান কামরুল। ফলে কামরুল বিরোধী অপশক্তি নরসিংদী রাজনীতিতে আবারো কোণঠাসা হয়ে পড়ে। 

অন্যদিকে কামরুল দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর নরসিংদীতে জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন আবু হেনা মোরশেদ জামান। সস্তা তোষামোদ প্রিয় এই আবু হেনা মোরশেদ জামান কে দিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটান কামরুল বিরোধী অপশক্তি। কামরুলকে মনোনয়ন না দিতে প্রধানমন্ত্রীর উচ্চ পর্যায়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে গুপ্ত চিঠি পাঠান এই আমলা। ফলে নরসিংদী শহরের সর্বোত্তম উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করলেও কামরুল কে মেয়র হিসেবে মনোনয়ন না দিয়ে লোকমান হত্যাকান্ডের অভিযুক্ত নরসিংদী শহর যুবলীগের সাবেক সভাপতি আশরাফ হোসেন সরকারকে মেয়র হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। কিন্তু কামরুল থেমে থাকেনি। উচ্চ পর্যায়ে তদবির করে সেই মনোনয়ন বাতিল করে কামরুলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ জন হিসেবে পরিচিত শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন বাচ্চুকে মনোনয়ন এনে দেন এবং তাকে জয়লাভ করাতে সক্ষম হন। 

কামরুলকে মেয়র হিসাবে মনোনয়ন না দেওয়া রাজনৈতিক ভুল ছিল সেটি তিনি প্রমাণ করতে সক্ষম হন।কিন্তু লাভ কামরুলেই হয়েছে। তার অনুসারীরা এখন তাকে এমপি হিসেবে দেখতে চান মানবিক মেয়র কামরুজ্জামান।কামরুল অনুসারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কামরুলের অনেক গুণের মধ্যে একটি বড় গুণ হচ্ছে কোন কর্মী যদি বিপদের সম্মুখীন হয় কামরুল তার সর্বোচ্চ আর্থিক এবং মানসিক সাহায্য দিয়ে তার পাশে এসে দাঁড়ান। তাই নরসিংদীর তৃণমূল আওয়ামী লীগের আস্তা ও ভালোবাসা অর্জন করতে পেরেছেন তিনি। তাছাড়া লোকমান পরিবারের প্রতি নরসিংদীর সাধারণ ভোটারদের রয়েছে পরম শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি। 

বর্তমানে মাধবদী পৌরসভার মেয়র মোশারফ হোসেন মানিক এবং নরসিংদী পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন বাচ্চুসহ নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামী লীগের বড় অংশটি কামরুলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ফলে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কামরুলকে উপেক্ষা করা কোন ভাবেই সম্ভব নয়। যদিও কামরুলকে কোন কারনে মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করা হয় যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে , যদি কামরুল তার পক্ষে অবস্থান না নেন , তাহলে ঐপ্রার্থীর এখানে এমপি হওয়া সম্ভব নয়। কারণ নরসিংদীর রাজনীতিতে বহুলাংশে বেড়েছে কামরুলের প্রভাব ও জনপ্রিয়তা।

সোনারগাঁও জাদুঘরের বৈশাখীমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সমাপ্তি
গাজীপুরে শেখ জামালের ৭১তম জন্মদিন পালন
নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে প্রাণ গেল বীর মুক্তিযোদ্ধার
সর্বশেষ সংবাদ