ঢাকা মঙ্গলবার, মে ৭, ২০২৪
সুযোগ না থাকায় প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারছে না আদরী রানী সরকার
  • সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, দিনাজপুর
  • ২০২১-১১-২২ ০৬:৫৩:২২

এক লাখ ৪৭ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে লুকিয়ে আছে অনেক প্রতিভাবান শিল্পী। প্রত্যন্ত অঞ্চলের এসব প্রতিভাবান শিল্পীর কেউ কেউ বিকশিত হওয়ার সুযোগ পেলেও উপযুক্ত সুযোগের অভাবে নিভৃতেই থেকে যাচ্ছে দরিদ্র পরিবারের প্রতিভাবান শিল্পীরা। উপযুক্ত সুযোগ ও সহযোগিতা পেলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র শিল্পীরাও প্রতিভার বিকাশ লাভ করে হয়ে উঠতে পারে খ্যাতিমান শিল্পী। মুখোজ্জল করতে পারে দেশের সুনাম। এমন এক কন্ঠশিল্পীর খোঁজে পাওয়া গেছে দিনাজপুর জেলা শহর থেকে ৩৫ কিলো মিটার দূরে বিরলের সীমান্ত ঘেষা প্রত্যান্ত অঞ্চল চৌপুকুরিয়া গ্রামের মেয়ে দিনাজপুর সরকারী কলেজ (অনার্স) তৃতীয় বর্ষ (সমাজ বিজ্ঞান) পড়ুয়া আদরী রানী সরকার (২১) খোঁজ পাওয়া গেছে।   

চোখ বন্ধ করে এই কন্ঠটি শুনলে যে কারও মনে হতে পারে হয়তো গানটি গাইছেন ভারতে জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী চিত্রা সিং, অথবা বিখ্যাত কোন শিল্পী। আসলে তা নয়, কন্ঠটি দিনাজপুরের বিরল উপজেলার নিভৃত পল্লীর দরিদ্র পরিবারের মেয়ে আদরী রানী সরকারের। 

দিনাজপুর বিরল উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবেষ্টিত প্রত্যন্ত গ্রাম চৌপুকুরিয়া গ্রামের আদরী রানী এভাবেই খালি কন্ঠে গান গেয়ে চললেও তা পৌছায় না দেশের মানুষের কাছে। প্রতিভা থাকলেও দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় তা বিকশিত হওয়ার ন্যুনতম কোন সুযোগ না থাকায় তার সেই সুমধুর সুর বিলীন হয়ে যাচ্ছে নিভৃত পল্লীর বাতাসেই। গ্রামের ছোট ঘরে জম্ম হলেও তার গান বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও পুজা মন্ডবে গান গাওয়ায় এ এলাকায় পরিচিতি আছে। 

দিনাজপুর শহরের একটি ছাত্রীনিবাসে থেকে দিনাজপুর সরকারী কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে (তৃতীয় বর্ষে) লেখা পড়া করছে আদরী রানী সরকার। তার পড়ার সহপাঠিরা আদরী রানীর গান গেয়ে অনেক দূরে এগিয়ে যাবে এমন স্বপ্ন দেখে। ছাত্রীনিবাসেই সুযোগ পেলেই বান্ধবীরদের সাথে নিয়ে  খালি গলায় গানের আসর বসিয়ে দেয়।

বান্ধবী তাজমিরা জানায়, আদরী রানীর গানের কন্ঠ আল্লাহ প্রদত্ত। খালি গলায় এত সুন্দর করে যে কেউ গান গাইতে পারে তা আগে কখনও শুনিনি। বই পড়ার ফাঁকে ফাঁকে তার গান শুনে আমরা ক্লান্তি দুর করি ।  তার গানের যে গলা আছে কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান একটু সুযোগ করে দেয় তাহলে যে এক সময় দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে। 

স্থানীয় গোবিন্দ্র সরকার বলেন, গ্রামের মানুষের কাছে আদরী রানী কন্ঠ শিল্পী হিসাবে পরিচিত । গ্রামাবাসীও তার কন্ঠে গান শুনে মুগ্ধ। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের হওয়ায় তার এই প্রতিভা বিকশিত হওয়ার কোন সুযোগ পাচ্ছে না। সুযোগ পেলে আদরীর এই প্রতিভা ছড়িয়ে দিতে পারে সারাদেশে। বয়ে আনতে পারে এলাকার সুনাম।
আদরী রানীর মা, চৈতি রানী সরকার বলেন, আমরা অত্যন্ত গরীব প্রকৃতির মানুষ। আমাদের অনেক ইচ্ছা থাকলেও সামর্থ নেই যে আমরা আদরী রানীকে কোন গানের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়ে দেব। ছ্টো বেলা থেকেই আদরীর গানের প্রতি ভালবাসা। একটু সুযোগ পেলেই গান গায়। কন্ঠও অসাধারন। 

আদরী রানী’র বাবা পলাশ চন্দ্র সরকার বলেন গানের প্রতি মেয়ের প্রচুর আগ্রহ থাকলেও গানের কোন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করাতে পারিনি। সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত কন্ঠের বিকাশ ঘটানোর সুযোগ তৈরীর জন্য  সকলের সহযোগিতা কামনা করি। অনেক কষ্ট করে মেয়ে লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছি । 

আদরী রানী সরকার বলেন ছোটবেলা থেকেই তার গান গাওয়ার শখ। এই শখের বসে  নিজে নিজেই গান গেয়ে থাকি। প্রতিষ্ঠানিক ভাবে কখন গান ও কোন ওস্তানের কাছে গান গাওয়ার সুযোগ হয়নি। শুধুমাত্র ইউটিউব, মোবাইলে, ক্যাসেটের গান শুনে শুনে গান গাই। আমার এই গানের মেধার বিকাশ ঘটাতে চাই। কন্ঠের সুর ছড়িয়ে দিতে আদরী রানী সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

সুন্দরবনের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মূল্যায়ন করবে আরণ্যক ফাউন্ডেশন ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
ফিলিস্তিনি নারী ও শিশু হত্যা বন্ধের দাবিতে দিনাজপুরে শিশু শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও স্বারকলিপি প্রদা
সর্বশেষ সংবাদ