ঢাকা বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামী লীগ নেতার দাপটে অসহায় কিশোরীর পরিবার
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
  • ২০২১-১১-১৫ ০৪:৩৭:২১

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের এক কিশোরী ও তার পরিবারের সদস্যদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলার অভিযোগ উঠেছে জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। ওই কিশোরীকে অপহরন করে নেয়ার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্যে প্রতিনিয়ত চাপ দেওয়া হচ্ছে কিশোরীর পরিবারকে। পাশাপাশি সামাজিকভাবেও হয়রানি করা হচ্ছে। ভয়ে ওই কিশোরীকে অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন তার পরিবার।

স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও শহরের কাউতলি এলাকার পূর্বপাড়ার বাসিন্দা সেলিম রেজা হাবিবের ছেলে তোফায়েল আহমেদ একই এলাকার ১৪ বছরের এক কিশোরী স্কুলে যাওয়া-আসার সময় উত্যক্ত করত। বিষয়টি ওই কিশোরীর বাবা তোফায়েলের পরিবারকে জানালে এতে সে ক্ষিপ্ত হয়। পরবর্তীতে গত ১৭ আগস্ট দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তোফায়েল তার স্বজনদের সহযোগীতায় ওই কিশোরীকে তার বাড়ি থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ওইদিনই থানায় অভিযোগ দেয় ওই কিশোরীর পরিবার। পরবর্তীতে ২০ আগস্ট তোফায়েল ও তার বাবা সেলিম রেজা হাবিব, তিন ভাই জুয়েল, রাসেল ও সেন্টু, চাচী মনজু আরা বেগম এবং চাচাতো ভাই শাকিলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় ১লা সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন তোফায়েল ও তার স্বজনরা। ওইদিন আসামিরা অপহ্নত কিশোরীকেও তাদের সঙ্গে নিয়ে যায় আদালতে। পরবর্তীতে স্থানীয় পুলিশের সহযোগীতায় ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশ। এদিকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর তোফায়েল ও তার চাচাতো ভাই শাকিল এবং চাচী মনজু আরা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শাকিল ও মনজু আরা বেগম বর্তমানে জামিনে থাকলেও তোফায়েল কারাগারে আছেন।

এদিকে, কারাগারে থাকা ছেলেকে রক্ষা করার জন্য মরিয়া উঠেছেন আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম। দলীয় প্রভাবে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে বিষিয়ে তুলেছেন ওই কিশোরী ও তার পরিবারের সদস্যদের জীবন। প্রতিনিয়ত তাদেরকে মামলা তুলে নিয়ে আপোষ করার জন্য হুমকি-ধামকি এবং সামাজিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কিশোরীর পিতা। তাদের বাসার পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ারও অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়া সেলিমের অন্য তিন ছেলে জুয়েল, সেন্টু ও রাসেল নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। কিশোরীর স্বজনরা বাসার বাইরে বের হলেই তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ফলে তাদের ভয়ে ওই কিশোরীকে অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন স্বজনরা। কিশোরীর পিতা বলেন, বিভিন্নজনের মাধ্যমে মামলা তুলে নিয়ে আপোষ করার জন্য হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে তাকে। নানা হয়রানি করছে। সেলিম ও তার ছেলেদের কারণে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে আমাদের জীবন। আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাই। রবিবার(১৪ই নভেম্বর) সকালে তিনি কাউতলী বাজারে গেলে সেন্টু তার ওপর দু’দফা হামলার চেষ্টা করে। বিষয়টি তিনি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং থানার ওসিকে জানান। 
তবে আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম রেজা হাবিব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ছেলে এখনো জেলহাজতে আছে। এখন এই সময়ে আপোষ মিমাংসার জন্য চাপ প্রয়োগ করার কোন প্রশ্নই আসে না। আমরা বিষয়টি আইনানুসারে আদালতে মোকাবেলা করবো।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মুত্তালিব জানান, আমরা ইতিমধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছি। ভিকটিমের ২২ ধারা জবানবন্দি ও তদন্ত অনুযায়ী যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাদিপক্ষ জানিয়েছে তাদেরকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। এটা দিতেও পারে, কারণ আসামী ও বাদি পক্ষ একই এলাকায় বসবাস করেন। বাদি স্থানীয় বাসিন্দা, আর বিবাদী এলাকার বাইরে থেকে এসে বাড়ি করেছেন। আজ রোববার সকালেও বাদি কল দিয়ে জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে তাদেরকে হুমকি দেওয়া হয়েছে।

সিরাজগঞ্জে নগদ টাকা সহ ইউপি চেয়ারম্যান আটক
নাগেশ্বরীতে টিসিবির ৭বস্তা ডাল আটক; ৫০বস্তা চাল চিনি ডাল সিলগালা
লক্ষ্মীপুর মেঘনায় অবৈধ জালে মাছ শিকার, ২১ জেলে আটক
সর্বশেষ সংবাদ