ঝালকাঠি নার্সিং কলেজ অতিথি শিক্ষকের নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা
- মো.শাহাদাত হোসেন মনু, ঝালকাঠি:
-
২০২৪-০৩-১৭ ০৪:৫৬:২৩
- Print
অতিথি শিক্ষকের ভূয়া নাম ব্যবহার করে ঝালকাঠি নার্সিং কলেজের ক্যাশিয়ার লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কামরুল হাসান নামে আইসিটির কোন অতিথি শিক্ষক ওই কলেজে পাঠদান তো দূরের কাগজ কলমের বাইরে তার কোন অস্তিত্ব না থাকলেও অতিথি শিক্ষক হিসেবে তার নামে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে টাকা। এ ছাড়া নার্সিং কলেজটি মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলেও ক্যাম্পাসের মধ্যেই রাত্রি যাপন করেন অভিযুক্ত ক্যাশিয়ার কামাল হোসেন। নার্সিং কলেজ অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) গীতা রানি সমদ্দার, ইন্সট্রাক্টর জাহানারা বেগম ও কামাল হোসেন যোগসাজসে এ দুর্নীতি করে যাচ্ছেন।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন দুজন ইন্সট্রাক্টর ও ক্যাশিয়ার কামাল হোসেনের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কলেজকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তোলা হয়েচে। এদের সহায়তায় ক্যাশিয়ার কামাল হোসেন নার্সিং কলেজের মধ্যে আবাসিক ছাত্রীদের যৌনহয়রাণিসহ একের পর এক অপকর্ম করেই যাচ্ছেন। এর বিরুদ্ধে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারী মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসকসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ভুক্তভোগীসহ সংশ্লিষ্ট সচেতনরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। প্রায় দুইমাস অতিবাহিত হতে চললেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এতে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রয়েছে অভিযোগকারীরা। তারা জানান, ঝালকাঠি নার্সিং কলেজের অফিস সহায়ক কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, যৌন হয়রানি, ভুয়া বিল উত্তোলনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। কলেজের সাতজন ইন্সট্রাকটর মহাপরিচালক, ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বরাবর ৩০-১-২৪ তারিখ এ অভিযোগ দায়ের করেছিলাম।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে,‘আমরা বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। এখানে বহুদিন যাবৎ ছাত্রী নিবাসে পুরুষ অফিস সহায়ক কামাল হোসেন অবস্থান করে-ছাত্রীদের মেসের টাকা আত্মসাৎ, যৌন হয়রানি, পরকীয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা করে আসছে। যেমন-নিজের নাম পরিবর্তন করে কামরূল হাসান বলে আইসিটি অতিথি শিক্ষকের নামে ভূয়া বিল করে। যার প্রতিবাদ করায় ছাত্রীদের ছাত্রী নিবাস থেকে বের করে দেওয়া, ছাত্রীত্ব বাতিল করা, পরীক্ষায় ফেল করানো, মৌখিক (ভাইভা) পরীক্ষা এবং ফর্মেসির মার্ক কম দেওয়া হয়েছে। যার সাথে সিনিয়র শিক্ষক জাহানারা বেগম সরাসরি ইন্ধন যোগায়। জাহানারা বেগম লিখিত পরীক্ষার হলে নকল এবং মোবাইল সাপ্লাই দেয়। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর থেকে ছাত্রীদের ওয়াইফাই বিল দিলেও ছাত্রীরা ওয়াইফাই ব্যবহার করতে পারে না। পরে ছাত্রীদের তোপের মুখে এখন ওয়াইফাই দিলেও ছাত্রীদের নিজেদের টাকায় রাউটার কিনতে হয়। অনেক আগে জাহানারা বেগম ছাত্রীদের মেসের টাকায় বাজার করে নিতো। এ নিয়ে শিক্ষিকা নিপা'র সাথে হামলা ও মামলা হয়। জাহানারা বেগম ছাত্রীদের দিয়ে ক্লাসে মোবাইল রেকর্ড করে প্রতিবাদকারী অন্যান্য ইন্সট্রাক্টর দিয়ে মানহানি করে। প্রতিবাদ করলে জাহানারা বেগম ও তার স্বামী মো. মান্নান প্রতিবাদকারী ইন্সট্রাক্টর (শিক্ষক)’র পা কেটে ফেলাসহ জীবন নাশের হুমকি দেয়।”
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গীতা রাণি সমদ্দার সাফাই করে জানান, সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী নার্সিং কলেজ পরিচালনা করা হচ্ছে। আমার দৃষ্টিতে কোন অনিয়ম হচ্ছে না। তবুও যদি কারো কোন অভিযোগ থাকে তাহলে আমাকে জানাবে। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম জানান, নার্সিং কলেজের কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে তা তদন্ত পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ### ১৭ মার্চ ২০২৪ইং।