ঢাকা বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪
ছিনতাই হওয়া পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা দিলেন -হাজী আব্দুস সাত্তার
  • সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
  • ২০২৩-০৭-২০ ০৭:৪৩:১৭

সিরাজগঞ্জে পুলিশ পরিচয়ে হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার সামনে অভিনব কায়দায় ১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ছিনতাই হওয়া পরিবারকে মানবিক দৃষ্টিতে  ৫০ হাজার টাকা হাতে তুলে দিলেন হাজী আব্দুস সাত্তার।

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুর ১২টায় ধানবান্ধি মতি সাহেবের ঘাট জামে মসজিদ মাঠে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রধান বিধবা শাপলা খাতুনের হাতে এটাকা তুলে দেওয়া হয়।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গত ২৪ জুন ২০২৩ইং তারিখে সকালে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চন্ডিদাসগাঁতী গ্রামের মৃত সোহরাব আলী মন্ডলের পুত্র ছানোয়ার হোসেন ও শাহ আলী মন্ডল ৩টু গরু ক্রয় উদ্দেশ্যে ১লাখ ৩৪ হাজার টাকা নিয়ে চান্দাইকোনা হাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। দুই সহোদর ভাই চন্ডিদাসগাঁতী থেকে পাবনাগামী বাসে ওঠায় সিরাজগঞ্জ রোডে পাবনা-বগুড়া মহাসড়কে নামিয়ে দেয় হেলপার। বাস থেকে নামার সাথে সাথে দারোগা পরিচয়ে মাঝায় ঝুলানো ওয়াল্লেজ পরিধানকারী মামুন নামে একজন এসে বলে আপনাদের বাড়ি চন্ডিদাসগাঁতী স্কুলের পিছনে। আমি চন্ডিদাডগাঁতী স্কুলে ছাত্র ছিলাম। আমি এখন এই থানায় চাকরি করি চান্দাইকোনা হাটে যাওয়া যাবে না। সামনে মারামারি হচ্ছে। আসুন আমার থানা থেকে একটা কার্ড করে দেই। কার্ড দেখালে কেউ আর আপনাদের যেতে বাঁধা দিবে না। সাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাসপাতাল পার হওয়ার সাথে সাথে দারোগা মামুন বলেন আপনাদের কাছে কত টাকা আছে, টাকাগুলো দেন। কার্ডে টাকার কথা লিখতে হবে। তাই থানায় ঢোকার আগে টাকাগুলো গুনে নিয়ে যায়। ছানোয়ার হোসেন মাঝার লুঙ্গির মধ্য থেকে টাকাগুলো বের করে দেওয়ার সাথে সাথে পিছন থেকে একটা সাদা মাইক্রোবাস এসে দারোগা মামুন ও আরেকজনকে দ্রুত উঠিয়ে নিয়ে যায়। মাইক্রোবাসের পিছনে পিছনে ছানোয়ার ছুটতে থাকে, কিন্তু মাইক্রোবাস আর ধরতে পারে না। তৎক্ষনা ছানোয়ার হোসেন ও তার ভাই শাহআলীকে চিৎকার করতে করতে কাঁদতে থাকে। তাদের কান্নায় আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে।

তথ্যানুসন্ধানে আরো জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ১৭ বছর পুর্বে ২টি মেয়ে জন্ম জন্মগ্রহন করার  পর শাপলা খাতুনের স্বামী মারা যায়। স্বামী মারা যাওয়ার পর অতিকষ্টে জীবনযাপন করে আসছে। ২টি মেয়ে বড় হয়ে গেলে তাদের বিবাহ দেওয়ার চিন্তায় ৩বছর পূর্বে ২৫হাজার টাকা দিয়ে ১টি গরু কিনে লালন পালন করতে থাকেন শাপলা খাতুন। গরুটি লালন পালন করে বিক্রি করে মোট ৪০ হাজার টাকা পান। ৪০ হাজার টাকা দিয়ে আরো ২টি গরু কিনে লালন পালন করে ৬৫ হাজার টাকা পান শাপলা খাতুন। ভবিষ্যতে আরো ২টি গরু ক্রয় করে লাভ করার জন্য ১৫হাজার টাকা ঋন নিয়ে মোট ৮০ হাজার টাকায় গরু ক্রয় করার জন্য সহোদর ভাই ছানোয়ার ও শাহ আলীকে চান্দাইকোনা হাটে পাঠান। ছানোয়ার হোসেন নিজেও ১টি গরু ক্রয় জন্য ৫৪হাজার টাকা সহ মোট ১লাখ ৩৪হাজার টাকা নিয়ে হাটে রওনা হন। পথিমধ্য ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটায় ২টি পরিবার নিঃস্ব হয়ে যান।

বিধবা শাপলা খাতুন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ২টি মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য আমি গরু বেচা টাকা না খেয়ে আরও টাকা জোগাড় করার জন্য ভাইদের কাছে গরু কিনতে দিয়েছি। কিন্তু টাকাগুলো ছিনতাইকারীরা নিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত পুলিশ, জনপ্রতিনিধি কেউ আমার খোজ নেয়নি। বিষয়টি হাজী সাত্তার জানার পর ঈদের আগের দিন পরিবারের ঈদ বাজার করে দেন। পুনরায় ঘুরে দাড়ানোর জন্য আজ গরু কেনার আজ ৫০হাজার টাকা হাতে তুলে দিয়েছে। আমি আমার জীবন আবার পুনরায় শুরু করব। আপনারা সকলেই দোয়া করবেন।

হাজী আব্দুস সাত্তার বলেন, বিধবার ছিনতাইয়ের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। আমি যতটুকু পেরেছি, বিধবার দুই মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য অনুদান দিয়েছি।

দিনাজপুরের আলোচিত ব্যবসায়ী কাশেমের বিরুদ্ধে দুদকে মামলা
পঞ্চগড় সদর উপজেলায় ঘোড়া প্রতীক নিয়ে শাহনেওয়াজ প্রধান শুভ চেয়ারম্যান নির্বাচিত
দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ন ভাবে সরাইল ও নাসিরনগরের ভোট সম্পন্ন
সর্বশেষ সংবাদ