চাঁদপুরে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র মোবাইল ম্যাসেঞ্জারে নকল সরবরাহ; পাঁচজন বহিষ্কার
- শাহাদাত হোসেন শান্ত, চাঁদপুর
-
২০২৩-০৫-২৭ ১১:৫৪:২০
- Print
পরীক্ষার শেষ সময়ে এসে পাঁচ ডিজিটাল নকলবাজ ধরা পড়লো। মোবাইল ম্যাসেঞ্জারে নকল সরবরাহের মাধ্যমে পুরো পরীক্ষা পার করেছে তারা। শেষ রক্ষা আর হয় নি তাদের। ধরা পড়লো এসি-ল্যান্ডের হাতে। বহিষ্কার হয়েছে এই পাঁচ পরীক্ষার্থী। এসএসসি পরীক্ষায় চাঞ্চল্যকর এমন নকলের ঘটনা ঘটেছে মতলবগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। আর এটি হলো ভেন্যু কেন্দ্র। মূল কেন্দ্র হলো মতলবগঞ্জ জেবি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়।
শনিবার ২৭ মে দুপুর ১২টায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার দুই ঘণ্টার মাথায় এ ঘটনা ঘটেছে। বহিষ্কার হওয়া পাঁচ পরীক্ষার্থী হচ্ছে ওমর ফারুক, মশিউর রহমান, ইব্রাহিম খলিল, ফারদিন ইসলাম ও মাহবী হাসান মুহিন। এদের মধ্যে মশিউর রহমান বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের, আর বাকি চারজন মতলবগঞ্জ জেবি পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
পরীক্ষার শুরু থেকে এই পাঁচজন পরীক্ষার্থী ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুরো পরীক্ষা নকল করে দিয়ে আসছিল। তাদের পাঁচজনের কাছে স্মার্ট ফোন থাকতো। এই পাঁচজনের মধ্যে একটা গ্রুপ ম্যাসেঞ্জার ছিল। বাইরে থেকে তাদেরকে ওই মোবাইলের ম্যাসেঞ্জারে নকল সরবরাহ করা হতো। চারজনের একটা গ্রুপ বাইরে থেকে তাদেরকে নকল সরবরাহ করতো। তাদেরকেও আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান মতলব দক্ষিণ উপজেলার এসি-ল্যান্ড তাসনিম আক্তার।
পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন দেয়ার পর পরই এই প্রশ্নের ছবি তুলে তারা বাইরে পাঠিয়ে দিতো। পরে তাদেরকে ম্যাসেঞ্জারে প্রত্যেক প্রশ্নের উত্তর সরবরাহ করতো। এভাবেই তারা পুরো পরীক্ষা পার করেছে।
গতকাল ছিল পদার্থ বিজ্ঞান বিষয় পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর মতলব দক্ষিণ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম আক্তার গোপন সূত্রে এমন একটি চাঞ্চল্যকর নকলের খবর পান। তিনি দুপুর ১২টার দিকে পরীক্ষার হলে গিয়ে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১নং কক্ষে গিয়ে পরীক্ষার্থী মাহবী হাসান মুহিনকে চ্যালেঞ্জ করেন। আর তখনই তার কাছ থেকে একটি স্মার্ট ফোন উদ্ধার করা হয় এবং পুরো নকলের বিষয়টি বের হয়ে আসে।
এসি-ল্যান্ড তল্লাশি শুরু করার সময় এই পাঁচজনের একজন তার সাথে থাকা মোবাইলটি ময়লার ঝুঁড়িতে ফেলে দেয়। পরে ট্যাগ অফিসার তা উদ্ধার করেন। আর বাকি তিনজনের কাছে তল্লাশি করে তাদের কাছে মোবাইল পাওয়া যায় নি। ধারণা করা হচ্ছে তল্লাশির সময় তারা কৌশলে জানালা দিয়ে তারা ফেলে দিয়েছে। এ ঘটনার পর তাদের সবাইকে বহিষ্কার করা হয়।
নিয়ম অনুযায়ি পরীক্ষা কেন্দ্রে শুধুমাত্র কেন্দ্র সচিব মোবাইল ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু তা স্মার্ট ফোন নয়। সে জায়গায় পাঁচজন পরীক্ষার্থী পরীক্ষার হলে কীভাবে মোবাইল নিয়ে ঢুকলো সে প্রশ্ন সবার। ধারণা করা হচ্ছে তাদেরকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর বাইরে থেকে মোবাইল সরবরাহ করা হতো।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য কেন্দ্র সচিব শরিফুল ইসলামকে একাধিক ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।