রাজশাহীর দুর্গাপুরে সাড়ে ১২কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে অত্যাধুনিক মডেল মসজিদ। তবে এর নির্মাণ কাজের ধীরগতির নিয়ে অভিযোগ উঠছে। কাজের সময় সীমা ১৮মাস পার হয়ে গেলেও ২০ভাগের বেশি করতে পারেনি বাদ্রারর্স কনস্টাকশন নামের এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মডেল মসজিদ নির্মাণে পুরাতন মসজিদ ভেঙে ফেলায় অস্থায়ী মসজিদে নামাজে জায়গায় লোকসংখ্যার সংকুলান হচ্ছে না। এতে করে মুসল্লিদের মধ্যেও অন্তোষ দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, মোট ৫৬০টি দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার। ইতোমধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৫০টি মডেল মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করা হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এ কাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের গণপূর্ত অধিদপ্তর। তারই ধারাবাহিকতায় তারই ধারাবাহিকতায় রাজশাহীর দুর্গাপুরে ২০১৯ সালের ১লা অক্টোবর মডেল মসজিদ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে ৪০ শতাংশ জায়গার ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে অত্যাধুনিক তিনতলা বিশিষ্ট এ মসজিদ। এর উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্যে প্রফেসর ডা. মনসুর রহমান।
রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ জানায়, প্রায় সাড়ে ১২ কেটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে দুর্গাপুর মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সটি। থাকছে নারী ও পুরুষদের পৃথক ওজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরি, গবেষণা ও দীনি দাওয়া কার্যক্রম, পবিত্র কুরআন হেফজ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজ যাত্রীদের নিবন্ধন, প্রশিক্ষণ ও ইমামদের প্রশিক্ষণসহ ইত্যাদি ব্যবস্থা। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এ মডেল মসজিদে এক সাথে ৯০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের পূর্ব দিকে প্রায় ৪০শতাংশ জায়গার ওপর নির্মিত হচ্ছে অত্যাধুনিক মডেল মসিজদ। গত ২০১৯ সালের ১অক্টোবর এ মসজিদের কাজ শুরু হয়। কাজের মেয়াদ ১৮মাস। তবে ২৪ মাস পেঁরিয়ে গেলেও ২০ভাগের বেশি কাজ করতে বাদ্রারর্স কন্সটাকশন নামের ওই টিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তিনতলা বিশিষ্ট এ অত্যাধুনিক মসজিদে শুধু পিলার গুলো দাঁড় করানো হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাদ্রারর্স কনস্টাকশনের ম্যানেজার সৈয়দ জাকির বলেন, দুর্গাপুরে মডেল মসজিদ প্রজেক্টের ফান্ড নাই। এক সাথে গোদাগাড়ী তানোর উপজেলায় কাজ শুরু হয়। সেখানে ৭০-৮০ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু দুর্গাপুরে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের অভাবে ২০ভাগের একটু বেশি কাজ হয়েছে মাত্র। তিনি বলেন, করোনা সংকটে এমনটা হয়েছে। আরও বছর খানেক সময় লাগতে পারে বলে তিনি জানান।
স্থানীয় মসলেম উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন ও সুলতান বলেন, এক সাথে কাজ শুরু হওয়া অন্য উপজেলায় মসজিদ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের উপজেলায় কাজের সময় সীমার আরও ৬মাস বেশি পেরিয়ে গেলেও প্রথমতলার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ এখনও হয়নি। এ ২৪মাসে শুধু পিলার গুলো দাঁড় করানো হয়েছে। তাঁরা বলেন, পুরাতন মসজিদ ভেঙে ফেলায় তারা এখন জায়গায় নামাজ আদায় করছেন। ছোট জায়গায় শত শত মানুষের নামাজ আদায় কষ্ট কর হয়ে পড়ছে। উপজেলা বাসী অধির আগ্রহে আছে কবে নাগাদ এ মসজিদ নির্মাণ কাজ শেষে হবে।
রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বরাদ্দের টাকা নাই ফান্ডে। এজন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কিছু দিতে পারছি না। এ জন্য দুর্গাপুরে কাজ কম হয়েছে। তাছাড়া অন্যান্য উপজেলা গুলোতে মসজিদ নির্মানের কাজ অনেক এগিয়েছে। কোথায় কোথাও ৭০-৮০ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
রাজশাহী-৫ দুর্গাপুর-পুঠিয়া আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ডা. মনসুর রহমান বলেন, কাজের সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে। বরাদ্দের কারণে এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে শুনেছি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।