রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উদ্যোগে করোনাকালীন সময়ে বন্ধ থাকা সব স্কুলে নির্মাণ করা হয় শহিদ মিনার। বহুল প্রত্যাশিত দেড়বছর পর স্কুল খুলে দেওয়ায় প্রিয় স্কুল প্রাঙ্গণে এসে শহিদ মিনার পেয়ে উচ্ছ¡সিত কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা।
শিশুরা স্কুলে এসেই ভিড় করছেন নতুন শহিদ মিনার দেখতে। উপজেলার স্কুলগুলোতে আগে কোনো স্থায়ী শহিদ মিনার ছিল না। ফলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারত না স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, উপজেলায় সরকারি ৮৩ প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে কোন শহিদ মিনার ছিল না। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও জাতীয় শহিদ দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে এসব শিশু শিক্ষার্থীদের যেতে হতো অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের শহিদ মিনারে। কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অস্থায়ীভাবে শহিদ মিনার বানিয়ে দিবসটি পালন করতো। গত বছরের শেষের দিকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদেন মোকলেছুর রহমান। তারপর পরিকল্পনা করেন সব স্কুলে শহিদ মিনার তৈরির। সরকারি কোনো বরাদ্দ নয়, স্কুল ফান্ডের নিজস্ব তহবিল থেকে তৈরি হয় ৮৩টি স্কুলে নান্দনিক এসব শহিদ মিনার।
কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থী মায়া, সুমাইয়া, রাফান, তানিয়া জানান, দেড়বছর স্কুল বন্ধ ছিল। এ সময় নির্মাণ করা হয় স্কুলে শহিদ মিনার। তাদের স্কুলে শহিদ মিনার ছিল না। সব শিক্ষার্থীরা স্কুলে শহিদ মিনার পেয়ে উচ্ছ্বসিত। তারা আরও বলেন, বিভিন্ন দিবসে তাঁরা অস্থায়ী শহিদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা নিবেদন করতো। এবার স্কুলে নতুন শহিদ মিনার নির্মিত হয়েছে। এতে আনন্দের সহিত বিভিন্ন দিবসে সকল শিক্ষার্থীরা শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারবেন।
উপজেলার কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্কুলে স্কুলে শহিদ মিনার নির্মাণ হওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা খুশি। দেড় বছর স্কুল খুলছে। স্কুলে এসেই শিক্ষার্থীরা প্রথমেই তাদের শহিদ মিনার দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। এবার শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ স্কুলেই শহীদ মিনারে শহিদদের প্রতি প্রথম শ্রদ্ধা জানাতে পারবে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান জানান, তিনি পবা উপজেলায় থাকা অবস্থায় সব বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার স্থাপন করেছেন। গত বছরের শেষের দিকে দুর্গাপুর উপজেলায় যোগদানের পর এ উপজেলায় সব স্কুলে নিজ¯^ অর্থায়নে শহিদ মিনারের পরিকল্পনা করা হয়। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দিবসে বীর শহিদদের প্রতি কোমলমতি শিশুরা যাতে শ্রদ্ধা জানাতে পারে এবং দিবসগুলোর তাৎপর্য উপলব্ধি করতে পারে, সেজন্য শহিদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন হয়েছে।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, সব স্কুলে এখন শহিদ মিনার। এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করতে পারবেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অদিপ্তরের এ সাফল্য শিশু শিক্ষার্থীদের সাথে তিনিও উচ্ছ্বসিত বলে জানান।