হাঁড় কাপানো শীতে জবুথবু অবস্থা উত্তরের জনজীবন
- শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর:
-
২০২৪-০১-১৪ ০৮:৫০:৪১
- Print
হাঁড় কাপানো কনকনে শীত আর হীমেল হাওয়ায় জবুথবু অবস্থা উত্তরের জনজীবন। শীতের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। আজ রবিবার (১৪ জানুয়ারি) দেশের সর্বোনিন্ম তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে। যা এ জেলায় এ মৌসুমে সর্বোনিন্ম তাপমাত্রা বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিদরা। আদ্রতা ৯০ শতাংশ এবং বাতাসের গতি ০১নটস। দিনাজপুরের উপর দিয়ে মৃদু শৈত প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলার আঞ্চলিক আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান। তিনি জানিয়েছেন, চলমান শীতের তীব্রতা কমার কোনো সম্ভবনা নেই। হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যেই ১৮ এবং ২৯ জানুয়ারি বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
গত চার দিন ধরে শীতের প্রচণ্ডতায় জনজীবন মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিশেষ করে শ্রমজীবী নিন্ম আয়ের মানুষের বেহালদশা। প্রয়োজন ছাড়া অনেকে বের হচ্ছে না ঘর থেকে।
শীত আর ঘন কুয়াশায় উত্তরের শষ্যভান্ডারে কৃষি উৎপাদন সবজি চাষেও চরমভাবে ব্যাঘাত ঘটছে। এই শীতের তীব্রতায় গবাদিপশু-পাখিসহ প্রাণিকুলের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা।মানুষ বেচা-কেনার হাট বলে খ্যাত দিনাজপুরের ষষ্টিতলার শ্রমবাজারে শীতে কাবু শ্রমজীবী মানুষ।
গত কয়েক দিনে অধিকাংশ সময় সূর্যের আলো দেখা যাইনি।
ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতের মধ্যে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। দিনের বেলাতেই সড়কে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
দিনের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় রাস্তায় মানুষের চলাচল কমেছে। উষ্ণতার আশায় মানুষ খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করে নিচ্ছেন।দিনের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায়, বেশি বিপাকে পড়েছেন, খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ। শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল,অরবিন্দু শিশু হাসপাতালে শীতজনীত রোগির সংখ্যা বাড়ছে।
হিমেল হাওয়ার সঙ্গে জেঁকে বসা শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। কনকনে শীত আর হিমেল হাওয়ায় চরম বিপাকে এ অঞ্চলের শীতার্ত মানুষ। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছিন্নমূল মানুষদের দুর্দশাও বেড়েছে।
দিনভর কনকনে ঠান্ডা বাতাস কাঁপিয়ে তুলছে পথে-প্রান্তরে থাকা ছিন্নমূল ও হতদরিদ্র মানুষগুলোকে। খোলা আকাশের নিচে থাকা এ হতদরিদ্র মানুষগুলো শীতে নাকাল হয়ে পড়েছেন। একটু উষ্ণতার খোঁজে পথের পাশে খড়কুটো কুড়িয়ে আগুন জ্বেলে ঘিরে বসে থাকছেন তারা। শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে নিম্ন আয়ের মানুষ ভিড় করছেন পুরোনো শীতবস্ত্রের গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানের লন্ড্রি বাজার হকার্স মার্কেটে । আর সামর্থ্যবানরা দৌড়াচ্ছেন অভিজাত মার্কেট ও শপিংমলে। হালে তাই শীতবস্ত্রের কেনাবেচাও জমে উঠেছে।
হাড় কাঁপানো শীতের মাস ‘মাঘ’। যে শীত তীব্র শক্তির বাঘকেও হার মানায়। তাই পৌষের শেষলগ্নে এ যেন বিদায়ের আগে প্রকৃতিকে কাঁপিয়ে দিচ্ছে। এ দিকে হুল ফুটানো এই কনকনে ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলার চরম ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিবিদরা।