পার্বতীপুরে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ
- মামুনুর রশিদ, পার্বতীপুর (দিনাজপুর)
-
২০২৩-০৯-০৬ ০১:০৫:৫১
- Print
পার্বতীপুরের মন্মথপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, পিওন ও চুক্তি ভিত্তিক কাজে নিয়োজিত দালালদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।
জমি জমা সরকারী ক/খ তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হওয়া, খারিজ খতিয়ান ভূলসহ নানা রকমের মিথ্যা ত্রæটি বা অজুহাত দেখিয়ে খাজনা দিতে আসা মানুষদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘটনা অফিসটিতে এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
আরিফ মাহামুদ নামের এক যুবক পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগে জানায়, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃ মমিনুর রহমান এর নিকট তার পিতা মামুনুর রশিদের নামীয় জমির খাজনা দিতে গেলে তিনি বলেন, এই জমি সরকারী ক তালিকাভূক্ত হয়ে গেছে। তোমার খাজনা নেওয়া যাবেনা। সরকারী গেজেট দেখতে চাওয়া হলে ওই কর্মকর্তা আরিফকে নানা রকমের অসংলগ্ন কথা বলেন। এ ঘটনার কয়েকদিন পর আরিফ ওই কর্মকর্তার নিকট গিয়ে অনুরোধ করলে তার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। দাবীকৃত টাকা দেয়া হলে ওই কর্মকর্তা আরিফকে মাত্র ৪০ টাকার খাজনা রশিদ কেটে দেন। আরিফের অভিযোগ, তার কাছে অতিরিক্ত ৪ হাজার ৯শ ৬০ টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
এদিকে, আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় ২নং মন্মথপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সরেজমিনে গেলে দেখা হয় মন্মথপুর সরদার পাড়া গ্রামের আবু তাহের ও খোরাখাই সরদার পাড়া গ্রামের সাদেকুলের সাথে। এসময় ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মমিনুর রহমানের সামনেই আবু তাহের অভিযোগ করে বলেন, তিনি গত ১০ দিন পূর্বে খোরাখাই মৌজার ১০১৯নং খারিজ খতিয়ানসহ ৪২০২, ৮৪৭,৪২১,৫৩৫৭ নং খতিয়ানের কয়েকটি দাগের ১.৮৪ একর জমির খাজনা দিতে চাইলে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মমিনুর রহমান ও তার অধিন্যস্ত কম্পিউটার অপারেটর তার কাছ থেকে ১৫ হাজার ৭শ টাকা নেন। কিন্তু অদ্যাবদি কোন খাজনা রশিদ না দিয়ে হয়রানী করছেন।
খোরাখাই সরদার পাড়া গ্রামের সাদেকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তিনি খাজনা দিতে গেলে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মমিনুর রহমান তাকে বলেন, সরকারী ভলিউমে আপনার জমির খতিয়ান ভূল রয়েছে। খতিয়ান সংশোধন না করলে খাজনা নেওয়া যাবেনা। সাদেকুল এ বিষয়টি উল্লেখ করে সহকারী কমিশনার(ভূমি) এর নিকট লিখিতভাবে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। সাদেকুল এ প্রতিনিধির নিকট অভিযোগ করেন, ভলিউম বইয়ে খতিয়ান নম্বর ভূল ছিলনা। টাকা কামানোর ফন্দি হিসেবে সংশ্লিষ্টরাই লাল কালি দিয়ে লিখে নম্বর পাল্টিয়েছেন। সঠিকভাবে তদন্ত করলে তাদের শতশত অবৈধ কর্মকান্ডের তথ্য বেরিয়ে পড়বে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে মন্মথপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মমিনুর রহমানের ভাষ্য জানতে চাওয়া হলে তিনি সব অভিযোগই সাজানো বলে অস্বীকার করেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমাদুল হাসান অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং দুই পক্ষকেই অফিসে উপস্থিত করে বিস্তারিত শুনে বিষয়টির সুরাহা করা হবে।