ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
বর্ষাকালেও দিনাজপুরে বৃষ্টি না হওয়ায় আমন ধানের চাষ ব্যাহত, জেলায় ৫০ ভাগ জমি এখনো অনাবাদি
  • সুলতান মাহমুদ
  • ২০২৩-০৮-০১ ০৮:৪২:২২

বর্ষাকাল হলেও বৃষ্টি না হওয়ায় দিনাজপুর সহ এই আশপাশের বেশ কয়েকটি জেলায় আমন ধান চাষ ব্যাহত হচ্ছে। এখনো জেলার ৫০ ভাগ জমি অনাবাদীর রয়েছে।

বর্তমানে শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি তেও আকাশে কোন বৃষ্টি না হওয়ায় চাষিরা শ্যালো মেশিন দিয়ে আমন ধান চাষ করলেও চাষাবাদের ব্যয় অনেক বেড়ে যাওয়ায় চাষিরা আশঙ্কা করছে।

বর্তমানে দিনাজপুর জেলার ৫০ ভাগ জমিতে আমন ধান চাষ করা হলেও ৫০ ভাগ জমি এখনও পানির অভাবে আমন ধানের চাষের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।

চাষিরা এই তীব্র রোদের মধ্যে শ্যালো মেশিন চালিয়ে কিছু কিছু জমিতে আমন ধানের চারা রোপন  করলেও পানির সেচ না দেওয়ায় অনেক জমি ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছে। কিছু কিছু জমিতে পানির সেচ কার্য অব্যাহত থাকলেও কৃষির চাষাবাদ এর অধিক খরচ হয়ে যাচ্ছে বলেও চাষীরা মনে করছেন।

দিনাজপুরের চাঁদগঞ্জ গ্রামের চাষি  হবিবুর রহমান হবি বলেন, শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝিতে ও আকাশের বৃষ্টি নেই। তিনি বলেন আমন ধান তো সময়ের মধ্যে আবার না করলে ধান হবে না। তাই নিজের মনকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য হলেও এই শুকনো জমিতে ইরি বোরো মৌসুমের মত শ্যালো মেশিন চালিয়ে আমন ধানের চারা রোপন করতেছি।। এ প্রচন্ড রোদের মধ্যে কৃষি শ্রমিকও পাওয়া যায় না। যেহেতু আমরা কৃষক মানুষ তাই নিজেই কাজ করছি 

একই গ্রামের আব্দুল কাদের বলেন, সময় মতো ধানের চারা রোপন না করলে ফসল হবে না। তাই ১১৫ টাকা লিটার ডিজেল তেল ক্রয় করে জমিতে পানির সেচ দিচ্ছি।  আমরা কৃষক  কৃষি আবাদ না করলে খাব কি ? পরিবার পরিজনই বা চলবে কি করে ? প্রত্যেক বছর বর্ষাকালে বৃষ্টি হয় সেই বৃষ্টির পানিতেই আমরা আমন ধান রোপন করি। এবছর একেবারেই বৃষ্টি নেই তাই শ্যালো মেশিন দিয়েও আমন ধানের জমিতে পানির সেচ অব্যাহত রেখেছি।

একই কথা বলেন মমিনুল ইসলাম নামে আরেক কৃষক। তিনি বলেন, বীজ তোলাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেক বছর বর্ষাকালে পানিতে চারদিক থৈ থৈ করে। বৃষ্টির পানির মধ্যেই আমার মত শত শত চাষীরা আমান ধান রোপন করে ব্যস্ত থাকে। কিন্তু এবছর শত শত বিঘা জমি এখন পর্যন্ত পড়ে রয়েছে। পানির অভাবে আমন ধানের চারা রোপন করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেকে শ্যালো মেশিন দিয়ে আমন ধানের চারা রোপন করলেও ঠিকমতো পানির সেচ না দিতে না পারায় সেই আমন ধানের চারা নষ্ট  যাচ্ছে।

দিনাজপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, বর্ষাকাল শেষ হওয়ার পথে কিন্তু এবছর একেবারেই বৃষ্টি নেই। আষাঢ় ও শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল হলেও শ্রাবণ মাসের শেষ ১৫ দিন শেষ। এই সময়ের মধ্যে যদি চাষিরা তাদের আমন ধানের চারা রোপন করতে না পারে। তাহলে ফসল তেমন ভাল হবে না। তাই আমরা চাষীদেরকে শ্যালো মেশিন চালিয়ে কিংবা অন্য কোন উপায়ে, বরেন্দ্র বহুমুখী প্রকল্প সহ বিভিন্ন  সেচ যন্ত্র চালু রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। চাষিরা যেন যেমন করে পারছে শুকনো মৌসুমের মতো বর্ষাকালেও জমিতে পানি সেচ দিয়ে কাঁদো করে আমন ধানের চারা রোপন করে  ।  এবং রোপণকৃত চারার জমিতেও সেচ কার্যাব্যহত রাখার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছি।

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গত ১৫ দিন ধরে দিনাজপুরে তেমন বৃষ্টি বাদ হয়নি। ফলে দিনাজপুরের উপর দিয়ে মাঝারি তাপদহ অব্যাহত রয়েছে এবং বাতাসে জলীয় বাষ্পর পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় গরম তীব্রতর হচ্ছে। তবে আশার কথা হল আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিনে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মাউশির প্রদর্শক ও গবেষণা সহকারি পদের ফল প্রকাশের দাবিতে মানববন্ধন
পঞ্চগড়ে ভারী বর্ষণে ভেঙে গেছে সড়ক, বন্ধ যান চলাচল
পলাশে ঘণ ঘন লোডশেডিং, ৪ হাজার মুরগীর মৃত্যু