ঢাকা শনিবার, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
লালমোহনে বাড়ছে মশা - মাছির উৎপাত; বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে খামারিদের গরু
  • মোঃ জহিরুল হক, ভোলা
  • ২০২৩-০৪-১৭ ০৫:১২:৪৯
ভোলার লালমোহনে মশার কামড়ে ‘লামথি স্কিন ডিজিজ’ নামক একটি নতুন ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে গরু। উপজেলার সবগুলো ইউনিয়নে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যায় । এতে আক্রান্ত গরুর প্রথমে পা ফুলে যায়। এরপর জ্বর হয়ে ২/৩ দিনের মধ্যে গোটা শরীরে বসন্তের মত ফোসকা পড়ে। যা পরবর্তীতে ঘায়ে পরিণত হচ্ছে। স্থানীয় পশু চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ‘লামথি স্কিন ডিজিজ’ একটি নতুন ভাইরাস জনিত রোগ। আগে কখনো দেখা যায়নি। তবে ৯০ এর দশকে আফ্রিকাতে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ছিল। মূলত মশা- মাছির কামড় থেকে এ রোগ ছড়ায়। উপজেলার প্রায় গৃহে গরু পালন কারী কৃষক ও খামারীরা এ অবস্থায় তারা গরুকে মশারির মধ্যে রাখছেন। মশারির মধ্যে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয় পশু চিকিৎসকরা । লালমোহন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ৯ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে মশা মাছির ব্যাপক উৎপাত এতে দেখা দিয়েছে গায়ে ফুলা রোগ। সরেজমিনে কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষকদের হালের বলদ, দুধের গাভী, সদ্যজাত বাছুর- প্রায় গরুই এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্ত গরুগুলোর পা ফুলে গেছে, সারা শরীরে বসন্তের মত গুটিগুটি ফোসকা হয়েছে। পায়ের খুরায় ক্ষত দেখা দিচ্ছে। আক্রান্ত গরুগুলো স্বাভাবিক চলাফেরা করছে না। সারাক্ষণ চুপচাপ থাকছে। খাওয়ারও কোনো আগ্রহ নেই। উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব চরউমেদ গ্রামের আহসান উল্যাহ মেম্বার বাড়ীর মোঃ ফিরোজ জানান, তার গোয়ালের মোট ৫টি গরুর অসংখ্য মাছির কামড়ে শরীর ফুলে গায়ে ফোসকা বের হয়েছে। এরমধ্যে একটি বড় গরুর অবস্থা খুবই খারাপ। গায়ের ফোলা স্থানে জখমের আশংখা করেছেন তিনি । এ জন্য প্রায় পাঁচ হাজার টাকা খরচ করেছেন, কিন্ত এখনও সুস্থ করতে পারেননি। চরমোল্লাজী গ্রামের ফয়েজ আহমেদ বেপারীর ছেলে মফিজ বেপারী জানান, কয়েকদিন আগে তার দু’টি গরুর প্রচণ্ড জ্বর হয়। এর একদিন পরেই সারা শরীরে চাক চাক হয়ে ফুলে উঠে। স্থানীয় পশুচিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, এখন অনেকটা ভালোর দিকে। আজাহার উদ্দিন রোডের পূর্ব মাথা এলাকার খামারি মফিজ জানান, তার মোট ১৪/১৫ টি গরু রয়েছে তার মধ্যে তিনটি দুধের বড় গরু রয়েছে তিনি মশারির মধ্যে রাখেন। তার পরও রোগ বালাই নিয়ে আতঙ্কে আছেন তিনি। ওই এলাকার অজিউল্লা মিয়ার ছেলে কৃষক মোঃ জামাল উদ্দিনের দুটি বড় গরু এক বছর অন্তর মারা গিয়েছে। সে স্থানীয় চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ খাওয়ানোর পরও কিন্ত সুস্থ হননি তার দুটি গরুই মারা গিয়েছে। সরকারীভাবে কোন পশু চিকিৎসকের সহযোগিতা পাননি তিনি। উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলের প্রায় গ্রামেই গরু পালন কারীদের স্থানীয় পশু চিকিৎসকের দারস্থ হতে হয়। একাধিক গরু পালন কারী কৃষক ও খামারী জানান, তারা কোন দিন সরকারী পশু চিকিৎসকের পরামর্শ পাননি। কোন পশু চিকিৎসক গ্রামে আসেন না। তাই তারা স্থানীয় হাতুরে চিকিৎসক দিয়ে তাদের গরুর চিকিৎসা করাচ্ছেন। উপজেলার প্রায় প্রতিটি কৃষক পরিবারেই গরু আছে। গবাদিপশু তারা নিজেদের সন্তানের মত করেই লালন পালন করেন। এগুলো অসুস্থ হলে তারা খুব ভেঙে পড়েন। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সহযোগিতা আশা করেন তারা । সরেজমিন গিয়ে একাধিক গরুর মালীক ও খামারীদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন আমরা শুনেছি সরকারী ভাবে পশু ডাক্তার এলাকায় এসে আমাদের গরুর লালন পালনে বিভিন্ন পরামর্শ ও রোগের চিকিৎসা দেন কিন্তু আমরা কোনদিন উপজেলার সরকারী পশু চিকিৎসক দেখিনি কোন পরামর্শ পাইনি । গরুর খামারী ও গৃহেপালনকারীদের প্রানের দাবী অন্তত প্রতি মাসে যেন সরকারীভাবে ডাক্তার এসে গরু পালনে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়। এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জয়াধর মূমূ বলেন - খামারিদের ও কৃষকদের গৃহপালিত গরু মশা মাছির আক্তান্ত হলে আমাদের করার কিছু নেই।
মাউশির প্রদর্শক ও গবেষণা সহকারি পদের ফল প্রকাশের দাবিতে মানববন্ধন
পঞ্চগড়ে ভারী বর্ষণে ভেঙে গেছে সড়ক, বন্ধ যান চলাচল
পলাশে ঘণ ঘন লোডশেডিং, ৪ হাজার মুরগীর মৃত্যু