নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসবে মেতে উঠেছে কিছু কুচক্রী মহল। উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের হোসেননগর গ্রামের কাকন নদী,বাজনাব ইউনিয়নের বাঘবের নতুনবাজার আড়িয়াল খাঁ নদী এবং বিন্নাবাইদ ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করা হলেও রহস্যজনক কারণে নিরব রয়েছে প্রশাসন।
সরেজমিনে এসব নদী থেকে নির্বিকারে বালু উত্তোলনের চিত্র দেখা গেছে।এখানে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কিছু নেতা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, আড়িয়াল খাঁ নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নির্বিকারে বালু উত্তোলন করে চলেছে। এতে নদীর পানি প্রবাহ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন স্থানে ফসলি জমিতে ভাঙন সৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে কৃষি জমি ও বসতভিটাও পড়েছে হুমকির মুখে। বাধা দিলেও কোনো প্রতিকার হচ্ছে না।পাশপাশি মেশিনের বিকট শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে আশপাশের মানুষেরা। অসাধু বালু ব্যবসায়ীরা ক্ষমতাসীন ব্যক্তি ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে উপজেলার বেশ কিছু স্থানে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ওইসব স্থানে ড্রাম ট্রাক, ট্রাক্টরের সারিবদ্ধভাবে আনা-নেয়ার লম্বা লাইন দেখে যে কারো মনে হবে যেন অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের মহাউৎসব চলছে।
আর যত্রতত্র ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে রাস্তাঘাট ও বাঁধ নষ্ট হয়ে একদিকে যেমন চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে অন্যদিকে ধুলা স্তুপ পড়ে গেছে। এসব ধুলার কারণে বাসা-বাড়িতে থাকার অযোগ্য পরিবেশ হয়ে পড়েছে। অনেকেই এসব ধুলা বালির মধ্যে চলাচল করায় নানা ধরনের শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে বে-পরোয়া ভাবে ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টর চলাচল করায় দুর্ঘটনাও ঘটছে। বালুদস্যুরা অসাধু কিছু লোকের সাথে আতাঁত করে নির্বিচারে বালু ব্যবসা করে আসছে।বালু উত্তোলনকারীদের বক্তব্য নিতে চাইলে তারা কোনো বক্তব্য দিতে চাইনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামিলীগ নেতা বলে, ক্ষমতার দাপটে কিছু নেতা প্রশাসনের সাথে যোগসাজশে এসব কাজ করে থাকতে পারে। না হয় প্রশাসনের নাকের ডগায় এ সব হচ্ছে কিস্তু প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
নরসিংদী জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা বিজয় ইন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন,পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক কোন প্রকার কাজ চলমান নেই, যদি কেউ বালু উত্তোলন করে তাহলে অবৈধ বলে বিরেচিত হবে। যারা অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। প্রয়োজনে রাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মহোদয় অবগত রয়েছে।