দিনাজপুরের বিরলের ঘাগড়া গাছি গ্রামে চিকিৎসার অভাবে খেয়ে, না খেয়ে কষ্টে মানবেতর জীবন যাপন করছে অসহায় ইউনুছ আলী (৪৪)। তার সু চিকিতসার জন্যে দেশের স্বহৃদয়বান বিত্তশালী দানবীর মানুষদের কাছে আর্থিক সহযোগীতা চেয়েছেন তিনি।
দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ৬ নং ভান্ডারা ইউনিয়নের নিভৃত পল্লী ঘাগড়াগাছি গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের পুত্র মোহাম্মদ ইউনুস আলী শারীরিক সুস্থতা ও কর্মদক্ষতা নিয়ে গত ২০১২ সালে গাজীপুরের এক সোয়েটার কোম্পানিতে চাকরি করতেন। বেতনও ভাল পেতেন। পরিবার পরিজন নিয়ে ভাল ভাবেই সংসার চলতে ছিল ।
গাজীপুর থেকে একদিন বাড়িতে অবসর সময় কাটানোর সময় প্রতিবেশী অসুস্থ একজনের জন্য ডাব পাড়তে নারিকেল গাছে উঠেন এবং ডাব পাড়তে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে যান। এসময় ইউনুসের মেরুদন্ডের হার ভেঙে যায় গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তখন প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে দেন কিন্তু অর্থের অভাবে সেখানে ভালো চিকিৎসা করতে না পেরে স্ত্রীসহ গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরে চলে আসেন ।
নিজ গ্রামে এসেই পৈতৃক সুত্রে পাওয়া ৪ শতাংশ বসতভিটা জমি বিক্রি করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা: লুৎফর রহমানের তত্ত্বাবধানে ভর্তি হন এবং চিকিৎসা শুরু করেন। সেখানে ইউনুসকে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার ব্যাপারে চিকিৎসক লুৎফর রহমান তাকে দেশের বাহিরে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন। এজন্য প্রয়োজন অনেক টাকা কিন্ত অর্থ সংকটের কারণে সেটা সম্ভব না হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই বাড়ী বিক্রির টাকায় ডা: লুৎফর রহমান মেরুদন্ডের অপারেশন করেন। তবে এই অপারেশনেও তিনি সুস্থ্য হতে পারেননি,বরঞ্চ অপারেশনের ৩/৪ দিন পর তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোস্কা পড়ে এবং পরবর্তীতে সেগুলো ঘা হয়ে যায়। তখন থেকে শুরু হয়ে যায় ইউনুসের দুর্বিসহ জীবন।
আর্থিক অভাবের কারনে এক সময় প্রিয় স্ত্রী মমতাজ বেগম স্বামী ইউনূস আলীকে তালাক দিয়ে অন্যত্র চলে যায় । পরে অসহ্য যন্ত্রণায় জর্জরিত ইউনুসকে নিয়ে বৃদ্ধ মা তাকে টেনে বেরোচ্ছিল। মাঝে কোহিনুর বেগম নামের একজন নারী স্ব-ইচ্ছায় তাকে বিয়ে করে দেখ ভালের দায়িত্ব নিয়েছেন। অসুস্থ ইউনুস অন্যের জমিতে বানানো ঘরে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন ও স্বপ্ন দেখছেন মহান আল্লাহ চাইলে অবশ্যই সে সুস্থ্য হবেন। ঘরের বিছানাই তার নিত্য সঙ্গী হয়েছে। দিন রাত বিছানায় শুয়ে থেকে থেকে ইউনুসের সাড়া শরীরে হয়েছে ঘাঁ।
স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ সাইদুর রহমান ও বর্তমান চেয়ারম্যানের প্রচেষ্টায় একটি হুইল চেয়ার ও প্রতিবন্ধী ভাতা নসিব হয়েছে তার। প্রতি ৩ মাস পর পর ২২৫০ টাকা প্রতিবন্ধী ভাতা পান তিনি, সামান্য এ টাকায় তাঁর সংসারে চলে না, চিকিৎসা করবেন কিভাবে। এত সমস্যার মাঝেও ইউনুস আলী শারীরিক ভাবে সুস্থ হয়ে উঠার জন্য দেশের সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং বিত্তবান দানশীল মানুষসহ সকলের কাছে চিকিতসার জন্য সাধ্যমত মানবিক সাহায্য কামনা করেছেন।
এব্যাপারে ভান্ডারা ইউপির ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ হামিদুর রহমান বলেন, এক সময়ের প্রান চঞ্চল্যে ভরা ইউনুস আলী আজ মেরুদন্ডের হাড় ভেঙে অসহায় এবং শয্যাশায়়ী। কোনো কাজ কর্ম করতে পারে না, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চিকিৎসা সহায়তা করার মতো কোনো ফান্ড নেই, তাই তাঁর জন্য তেমন কিছু করা সম্ভব হয়নি। তবে তাকে একটি হুইল চেয়ার ও প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। শুনেছি সুচিকিৎসা পেলে হয়তো সে ৬০/৭০ ভাগ শারীরিকভাবে সক্ষম কিংবা ভালো হবে,এজন্যে তার বিপুল পরিমান টাকার প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে অর্থ সংকটের কারণে সে একেবারেই চিকিৎসা করতে পারছেনা । অসুস্থ ও অসহায় ইউনুস আলী তার চিকিৎসার জন্য দেশের বিত্তশালী দানবীর ব্যক্তিদের কাছে সাধ্যমত সাহায্য কামনা করেছেন। ইউনূস আলীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা যায় ০১৭৯৯১৭৪১৩৪/০১৩২৪১২১৯০০।