ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাসপাতাল থেকে অভিনব পন্থায় চুরি করে নিয়ে যাওয়া এক নবজাতককে টানা পাঁচ ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল সোয়া ৫টা পর্যন্ত চলে সদর মডেল থানা পুলিশের এ অভিযান। এ ঘটনায় তানিয়া (২৩) নামে এক নারীকে আটক করা হয়েছে। তিনি সদর উপজেলার সিন্দুরা গ্রামের নিয়াজ আহমেদের স্ত্রী।
পুলিশ ও নবজতাকের স্বজনরা জানিয়েছেন, গত তিনদিন আগে জেলা সদর হাসপাতালে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন রেখা আক্তার (২৭)। তিনি সদর উপজেলার তেলিনগর গ্রামের ফরিদ মিয়ার স্ত্রী। এই দম্পতির ঘরে আগেও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। ফরিদ মিয়া পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক।
বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তানিয়া এসে নবজাতেরক ঠান্ডা লেগেছে বলে জানায় রেখাকে। পাশাপাশি রেখার স্বামী দরিদ্র হওয়ায় নিজ খরচে নাবজাতকটিকে ভালো চিকিৱসক দেখাবেন বলেও জানান তানিয়া। এরপর রেখাকে ৫শ’ টাকা দিয়ে ফল কিনে আনার জন্য বলে রেখার ছোটবোন তিশামনিকে নিয়ে নবজাতকটিকে চিকিৱসক দেখানোর জন্য হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যান তানিয়া।
রেখা আক্তার তার বোন তিশামনির বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের জানান,তানিয়া প্রথমে শহরের আমিন কমপ্লেক্সে নিয়ে যান নবজাতক ও তিশামনিকে। এরপর একটি স্বর্ণালংকারের দোকানে নিজের হাতের আংটি বিক্রি করে ১৫ হাজার টাকা তিশামনির হাতে গুজে দিয়ে নাবজাতক নিয়ে উধাও হয়ে যান তানিয়া।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক টিম নবজাতকটিকে উদ্ধারে অভিযানে নামে। স্বর্ণের দোকানের সিসি ক্যামেররার ফুটজে দেখ এবং প্রযুক্তির সাহায্যে তানিয়াকে সনাক্ত করা হয়। এরপর বিকেলে তার বাড়ি থেকে নবজাতকটিসহ তাকে আটক করা হয়।
সদ্যজাত শিশুকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে পেরে পুলিশ আত্মতৃপ্ত এবং এটি নিজের জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা বলেও জানান ওসি এমরানুল ইসলাম।পাশাপাশি রেখাও তার নাড়িছেড়া ধনকে ফিরে পেয়ে ধন্যবাদ জানান পুলিশ সদস্যদের।
তবে, হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরি যাওয়ার ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতিকে দায়ী করছেন অনেকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায় ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি নেই। তবু বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে, এ ঘটনায় আমাদের কোনো গাফিলতি ছিল কিনা। যদি কারও গাফিলতি পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।