কুমিল্লায় প্রতারক তাসনুবার প্রেমের ফাঁদে ব্যবসায়ী সহ অনেকে
- রবিউল বাশার খান, কুমিল্লা:
-
২০২৪-০৫-০৪ ১০:৩৭:০৮
- Print
কুমিল্লা চান্দিনা উপজেলার কেশরা গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে ২৩ বছর বয়সী তাসনুবা আক্তার। তারুণ্যের এই সময়টি ভালো কাজে না লাগিয়ে প্রতারক চক্রের টিমে জড়িত হয়ে বেছে নেয় প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী বা তাদের সন্তানকে ব্ল্যাকমেইলিং করে অর্থ রোজগারের ধান্দায়। মোবাইল ফোনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশলে প্রায় ৩০ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগে তাসনুবা আক্তারসহ তার ছয় সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে কুমিল্লা ডিবি পুলিশ।
গতকাল শনিবার (৪ মে) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো: আবদুল মান্নান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বাদী হয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করে। পরে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অভিযানে শনিবার ভোররাতে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত সাত জনকে গ্রেফতার করেন ডিবি পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মংনে থোয়াই মারমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুল হাসান রাফি, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রাজেশ বড়ুয়া।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার জানান, তাসনুবা নামের ওই তরণী ধনাঢ্য ব্যবসায়ী বা চাকরিজীবীদের টার্গেট করে মোবাইল ফোনে পরিচিত হোন। এরপর প্রেম ও আবেদনময়ী কথার ফাঁদে ফেলে দেখান শারীরিক সম্পর্কের প্রলোভন। এক পর্যায়ে ভাড়া নেওয়া বাড়ির নির্দিষ্ট কক্ষে অনৈতিক কাজের ভিডিও ধারণের জন্য গোপনে সেট করে রাখেন ক্যামেরা। এরপর শুরু হয় প্রতারণার নতুন খেলা। তাসনুবা আক্তার মোবাইল ফোনে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে ওইভাবে ব্ল্যাকমেইল করে বিভিন্ন কায়দায় তার চক্রের লোকজনের মাধ্যমে ২৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। তার সহযোগীদের কেউ নিজেকে ডিবি পুলিশ ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতো।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আব্দুল মমিনের পুত্র ফখরুল ইসলাম পুলিশ সুপার কার্যালয় অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন স্থান থেকে ওই তরুণী সহ সাতজনকে গ্রেফতার করে কুমিল্লা ডিবি পুলিশ। এ সময় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর স্বাক্ষরিত সাতটি অলিখিত স্টাম্প, তার স্বাক্ষরিত সাতটি খালি ব্যাংক চেক উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলো- কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার সুবর্ণপুর এলাকার সৈয়দ আব্দুর রউফের ছেলে সৈয়দ আয়াত উল্লাহ, বালুতুপা গ্রামের মো. ইসহাক মিয়ার ছেলে ইমরান হোসেন, একই এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. কবির হোসেন, বরুড়া উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের মো. আব্দুল মালেকের ছেলে মো. মোজাম্মেল হক, গালিমপুর গ্রামের মো. আলী আজগরের ছেলে মো. আব্দুর রহিম, চান্দিনা উপজেলার কেশরা গ্রামের মৃত শফিকুল ইসলামের মেয়ে তাসনুবা আক্তার ও লাকসাম উপজেলার বড় বিজরা গ্রামের মো. মোস্তফা কামালের ছেলে মো. সাখাওয়াত হোসেন।