ঢাকা শুক্রবার, মে ১০, ২০২৪
চার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সন্নিকটে ইট ভাটা, স্বাস্থ্য ঝুকিতে শিশুরা
  • আমতলী, বরগুনা প্রতিনিধিঃ
  • ২০২২-১২-১৯ ০৬:১৫:০৯
চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আধা কিলোমিটারের মধ্যে গড়ে উঠেছে ইটের ভাটা। সেখানে ইট পোড়ানোর কারণে সৃষ্ট কালো ধোঁয়া আর উড়ে আসা ধুলাবালুতে শিক্ষার্থীরা শ্বাসকষ্টজনিত অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে বিদ্যালয়ে পাঠদানের পরিবেশ। বরগুনার আমতলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ আমতলী এলাকায় আমতলী - তালতলী সড়ক ঘেঁষে গড়ে উঠেছে এই ইটভাটা। সাগর ব্রিকস নামের ইট ভাটার দক্ষিণ দিকে আরপাঙ্গাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আরপাঙ্গাশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উত্তর দিকে আমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং দক্ষিণ পশ্চিমে আরপাঙ্গাশিয়া দ্বীনিয়া মাদ্রাসা অবস্থিত। আমতলী উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি নাজমুল আহসান এই ভাটার মালিক। এত গুলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে এমন একটি ভাটার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ের ছাড়পত্র কিভাবে পেয়েছেন তা নিয়ে রয়েছে বড় এক প্রশ্ন বোধক চিহ্ন। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৯ বলছে, বিশেষ কোনো স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিংবা অনুরূপ কোনো স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। তাহলে এই ইট ভাটার অনুমতি আসলো কিভাবে? এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় সহকারী পরিচালক আবদুল হালিম বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না। এমন হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে এমন ইট ভাটা স্থাপনের কারনে স্থানীয় লোকজনের রয়েছে চাপা ক্ষোভ , তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাগর ব্রিকস নামের এই ভাটা স্থাপনের সময় এলাকার লোকজন ও বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়েছিল। ইটভাটার খুব নিকটেই বসবাস করা এক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ইট পোড়ানোর ধোঁয়ায় আমরা শ্বাসকষ্টে ভুগছি। আমাদের বাড়িতে কোনো গাছে ফল ধরে না। ইটের ধুলায় আমাদের বাড়ি-ঘর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা ভাত খাই না, ইটের লাল ধুলা খাই।’ ভাটাটির কারণে শিক্ষার্থীদের খুব ক্ষতি হচ্ছে। বিদ্যালয়ের পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে। ইটের ভাটা লোকালয়ের বাইরে স্থাপনের নিয়ম থাকলেও এটি করা হয়েছে স্কুলের আধা কিলোমিটারের কম দূরত্বে। ভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে বলে জানান আড়পাঙ্গাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুন্নাহার। ইট ভাটাটির মালিক নাজমুল আহসান বলেন, ‘আমার ভাটার মতো বাংলাদেশে হাজারো ইটভাটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে গড়ে তোলা হয়েছে। আমার সব কাগজ (অনুমতিপত্র) আছে। আমতলীতে শুধু আমারটা না, বরগুনা জেলা সবাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে ইট ভাটা করছে। আগে তো এক মাইলের মধ্যে স্কুল গড়ে উঠত, এখন এক মাইলের মধ্যে দুইটা, তিনটা স্কুল গড়ে উঠছে।’ আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ‘আমি এখানে নতুন এসেছি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’ আমতলী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবদুল মোনায়েম সাদ বলেন, ইটভাটার ধোঁয়া শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। এই ধোঁয়ায় একদিকে যেমন শ্বাসকষ্ট হয় অন্যদিকে হাঁপানি, চোখ দিয়ে পানি পড়াসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা দেখা দেয়।
তীব্র প্রবাহ থেকে স্বস্তি পেতে বৃষ্টির জন্য দিনাজপুরে ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
নীলফামারীতে বৃষ্টির জন্য নামাজ
দিনাজপুরে প্রচন্ড তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন
সর্বশেষ সংবাদ