দিনাজপুর কাহারোলে ব্যবসায়ীদের উপর জুলুম, অত্যাচার ও হয়রানির প্রতিবাদে অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি এবং ব্যবসায়ীদের ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন মানববন্ধনে অংশ গ্রহনকারীরা ।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে দিনাজপুর কাহারোলের আমতলা মোড়ে় রাসায়নিক সার, বীজ, কীটনাশক ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির আয়োজনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন ।
মানববন্ধন চলাকালে সংগঠনের সভাপতি আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজ কাহারোলে বদলী হয়ে এসেই ঘুষ বাণিজ্য শুরু করেছেন, তিনি ব্যবসায়ীদের আলাদা ভাবে তার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন, ব্যবসায়ীরা দেখা না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে নিজে এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে অন্যায় ভাবে দোকানের মালামাল জব্দ এবং কোনোরূপ পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই তা ধ্বংস করছে।
বক্তারা বলেন,অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজ তার স্বামী দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কর্মরত অতিরিক্ত উপ পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষন) মো: মাহাবুবুর রশীদের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের নানান রকমের হুমকি ধমকি এবং ভয়ভীতি দেখান। এতে করে কাহারোল উপজেলার প্রায়় সাড়ে ৩ শত সার, বীজ ও কীটনাশক ব্যবসায়়ীরা আর্থিকভাবে যেমন কোটি কোটি টাকা ¶তিগ্রস্থ্য হচ্ছে তেমনি ব্যবসায়িক সুনামও নষ্ট হচ্ছে তাদের ।
সমাবেশে ব্যবসায়়ীদের স্বার্থ রক্ষার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে সেলিনা আফরোজকে কাহারোল থেকে প্রত্যাহার করা না হলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এসময়় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মোনায়েম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক পুলিং চন্দ্র রায়়,সহ সা: সম্পাদক আব্দুল সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আনসারুল ইসলাম প্রমুখ। পরে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে তারা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজকে প্রত্যাহারসহ ছয়় দফা দাবি সম্মিলিত একটি স্মারক লিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরুল হাসানের কাছে হস্তান্তন করেন।
অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকার সংক্রান্ত সরকারী নিয়মনীতি মেনেই অভিযান পরিচালনা এবং জব্দকৃত মালামাল ধ্বংস করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে । সরকারী অভিযানে আমাকে অবশ্যই সহযোগিতা করতে হবে ।
এব্যাপারে কাহারোল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর মোহাম্মদ সাদেক জানান, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের এটা রুটিন ওর্য়ার্ক, মনিটরিং এর দায়িত্ব আমার তাই আমার অফিসাররা বিভিন্ন সার ও বালাই নাশকের দোকানে নিয়ম মেনেই অভিযান চালায় এবং পন্য যাচাই বাছাইয়ের পর ভেজাল পাওয়া গেলে তা ধ্বংস করেন।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপ-পরিচালক খালেকুর রহমান বলেন , জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর কর্মকর্তা ঐ এলাকার কয়েকটি সার ও কীটনাশক দোকানে অভিযান পরিচালনা করেন । সেই অভিযানে এক ট্যাকনেশিয়ান হিসাবে আমাদের দপ্তরের এই কর্মকর্তাকে সাথে নিয়েছেন । এখানে তো আমার কৃষি কর্মকর্তাকে দোষারোপ করার কোন সুযোগ নেই ।
উল্লেখ্য, ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে আগামী ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজকে কাহারোল থেকে প্রত্যাহার, অযথা হয়রানিমূলক অভিযান বন্ধ করতে হবে, অভিযান চালানোর সময় আমাদের সমিতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাখতে হবে, কোনো সার, কীটনাশক ধ্বংস করার আগে ল্যাবরেটরিতে রাসায়নিক পরী¶া করতে হবে নকল প্রমাণিত হলে তা ধ্বংস করা যেতে পারে অন্যথায় তা ফেরত দিতে হবে, সার ও কীটনাশক ডিলার ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করা যাবে না ও অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সেলিনা আফরোজ কে সাত দিনের মধ্যে কাহারোল থেকে প্রত্যাহার না করা হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে বৃহত্তর আন্দোলনের এর ডাক দেওয়া হবে ।