বর্তমান সময়ে দেশে হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা দিন দিন যেন বেড়েই চলেছে। দ্রব্য মূল্যের উচ্চ মূল্যে পিষ্ট এবং যন্ত্রনা কাতর হচ্ছে মানব জীবন। একটু ভাতের জন্য একটু রুটির জন্য নিরন্ন মানুষদের দীর্ঘ নিঃশ্বাসে ভারি হচ্ছে আকাশ বাতাশ।
চাঁদপুর শহরের ১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান দর্জির কার্যালয়ের পাশে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় খোলাবাজারে খাদ্যপণ্য বিক্রি বা ওএমএস এর চাউল এবং আটা পেতে আজ ২৩ অক্টোবর ভোর ৬ টায় অসহায়, হতদরিদ্রদের ব্যাগ বিছিয়ে সিরিয়াল দেওয়ার এদৃশ্যটি ২৩ অক্টোবর প্রাত ভ্রমণে গিয়ে চোখে পড়লো। ভোর ছয়টা নাগাদ শতাধিক ব্যাগ বিছিনো সুবিধাভোগীর সিরিয়াল পড়ে যায়। ব্যাগ বিছানো মানুষ গুলো একটু দূরে জড়সড় হয়ে বসে থাকে। সন্মতি না পাওয়ায় তাদের ছবি আর ক্যামেরাবন্দী করনি।
সকাল ১০টা থেকে অল্প মূল্যে ওএমএস এর চাউল, আটা দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ভোর ৬টায় ব্যাগ নিয়ে উপস্থিত হওয়ার কারণ হিসাবে শহরের মাদ্রাসা রোডের সুফিয়া বেগম জানান, দেরীতে আসলে অনেক বড় লাইনে পড়তে হয়। অনেক মানুষ হয় তাই চাউল, আটা শেষ হয়ে যায়। ঘন্টার ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও পাইনা। খালি হাতে বাড়ি গিয়ে খানায় কষ্ট পেতে হয়।
১২ নং ওয়ার্ডের ওএমএস ডিলার মোঃ মোস্তফা জানান, প্রতিজন সুবিধাভোগি পাঁচ কেজি চাউল এবং পাঁচ কেজি আটা পাওয়ার নিয়ম রয়েছে। সরকারের বরাদ্দ সবসময় এক রকম দেওয়া হয় না। কখনো বেশি কখনো কম দেওয়া হয়। বরাদ্দ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে যারা পায়না তাদেরকে পরের দিন দেওয়া হয়।
১২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল মোঃ হাবিবুর রহমান দর্জি দুপুরে ফোনে জানান, আজ বরাদ্দের তুলনায় মানুষ অনেক বেশীই হয়েছে। সেজন্য ডিলারকে বলেছি তিন কেজি করে দেওয়ার জন্য। শূন্য হাতে কেউ যাতে বাড়ি গিয়ে খাওয়ায় কষ্ট না পায়।
হতদরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত এসব মানুষের দুঃখ, কষ্ট তারা বুঝবে কীভাবে? যারা সমাজের সবটুকু সুবিধা ভোগ করে!
পথে প্রান্তরের ভোরের স্নিগ্ধতার মাঝে কষ্টের এই দৃশ্যটি দেখে মনে পড়ে গেল কবি কাজী রোজী'র অভাবের যাতনায় পিষ্ট বর্ণনায় লেখা কবিতার ক'টি লাইন—
" ভাত দিবার পারস না ভাতার হবার চাস
কেমন মরদ তুই হারামজাদা
নিত্যি রাইতে ক্যান গতরে গতর চাস
পরাণ না রয় যদি পরাণে বাঁধা।
ছাওয়াল কানলি পরে পোড়া এ গতরডারে
মাঝির বৈঠ্যা ভেবে দাঁড়ে দেই টান
হায়রে সোয়ামী তোরে ছুঁইয়া কইতে পারি
খরায় জমিন পোড়ে পোড়ে না পরাণ
এটটু ভাতের লাগি এটটু ত্যানার লাগি
গল্পের মতো এই গতর দিলাম
ভাত দিতি পারলিনে তবুও ভাতার হলি "