ঢাকা শনিবার, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
ভালোবাসার টানে এসে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক এখন দিনাজপুরের জামাতা
  • সুলতান মাহমুদ, দিনাজপুর
  • ২০২২-০৮-১১ ১২:৫৮:৩৩
ভালোবাসার টানেই বাংলাদেশে এসে প্রেমিকাকে বিয়ে করলেন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক অ্যান্ড্রিয়ান বারিসো নীরা। এখন প্রেমিকা হল বধূকে নিয়ে দিনাজপুরের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বাংলাদেশী বধু আর অস্ট্রেলিয়ান স্বামী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক)এ পরিচয় সুদূর অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী আড্রিয়ান বারিসো নীরা (৩৫) যুবকের সাথে দিনাজপুরের মেয়ের জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাঙালি রীতিমতো বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিয়ের দ্বিতীয় দিন, দিনাজপুর পর্যটন হোটেল রেস্টুরেন্টে ফুলসজ্জা হয়েছে তাদের। দিনাজপুরের কন্যা নুসরাত জাহান রুম্পা অস্ট্রেলিয়ান স্বামী নিরাকে নিয়ে এখন তার নিকট আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি সহ দিনাজপুরের পর্যটনকেন্দ্র গুলোতে ঘুরে দেখাচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ান স্বামীকে। গত মঙ্গলবার ৯ আগস্ট রাতে দিনাজপুরের ইয়াম্মি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে দুই শতাধিক বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীকদের উপস্থিতিতে নুসরাত জাহান রুম্পা প্রেমিক অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক অ্যান্ড্রিয়াল বারিসো নিরা কে ইসলাম ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেছেন। দিনাজপুরের মেয়ে নুসরাত জাহান রুম্পা দিনাজপুর ৩নং উপশহর এলাকার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের কন্যা। দিনাজপুর উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি সভাপতি জান্নাতুন সাফা শাহিনুর বলেন, রুম্পা আমার ছোট বোনের মত। সেই অনুযায়ী তার বিয়ের অনুষ্ঠানে আমি উপস্থিত ছিলাম। অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক নিরা হলেও অনেক মিশুক একটি ছেলে। বাংলায় কথা বলতে না পারলেও ইংরেজিতে একটি মানুষের সাথে মিশতে বেশি সময় লাগে না। আমার মনে হয় আমি রুম্পার কাছে শুনেছি তাদের এই প্রেমের সম্পর্ক ২০১৯ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে। ২০২০ এবং ২০২১ সালে বিশ্বে করোনার পরিস্থিতির ভয়াবহ হওয়ায় নীরা বাংলাদেশে আসতে পারেনি। এই সময় সুযোগ পেয়ে পরিবারের সম্মতি নিয়েই তিনি বাংলাদেশে আসেন এবং বাংলাদেশের আইন কানুন অনুযায়ী এবং ধর্মীয় নীতি অনুসরণ করেই রুম্পার পরিবারের অনুমতি নিয়েই তাদের বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। দিনাজপুর আইনজীবী সমিতির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সলিমুল্লাহ বলেন, অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক আড্রিয়ান বারিসো নীরা এর সাথে নুসরাত জাহান রুম্পার এফিডেভিট এর কাজ সুসম্পন্ন করা হয়েছে। পরবর্তীতে তারা ইসলামের রীতির নীতি অনুসরণ করে বিয়ের কাজও সম্পন্ন করা হয়েছে বলে আমি জানতে পেরেছি। দিনাজপুর পর্যটন মোটেল রিসিপশন কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, গত ৯ আগস্ট থেকে আমাদের পর্যটন হোটেলের দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়েছেন প্রবাসী নাগরিক আড্রিয়ান বারিসো নীরা১১ তারিখ পর্যন্ত এখনো তার হোটেল বুক রয়েছে । তাদের বিয়ের সাজে তারা এখানে উঠেছিলেন এখনো এখানেই রয়েছেন। আমরা তাদেরকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। এবং এখানে প্রায় অনেক আত্মীয়-স্বজন বিভিন্ন সামাজিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা তাদের দেখার জন্য এখানে আসেন, এবং বাংলাদেশী বধু ও প্রবাসী স্বামীর জন্য অনেকেই দোয়া কর। নুসরাত জাহান রুম্পা বলেন ২০১৯ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে নীরার সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকেই তার সাথে বন্ধুত্ব করে ওঠে। বন্ধুত্ব হওয়ার পর থেকেই ভালোলাগা শুরু হয়। এক সময় ভালোলাগা থেকেই ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। তার এই ভালোবাসা আজকে আমাদের বিয়ে পর্যন্ত গড়িয়েছে। তার সবচেয়ে শিশুসুলভ ব্যবহার মাধুর্যপূর্ণ কথা বার্তা আমাকে আরো বেশি ভালো লাগতে শুরু করে। তার ভালোবাসা সাগরের মতই অসীম। তাই সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে আমার কাছে ছুটে এসেছে। তার পরিবার ও আমার পরিবারের সম্মতিতেই বাংলাদেশের আইন মেনেই আমাদের এই বিয়ের কাজ সুসম্পন্ন করা হয়েছে। আড্রিয়ান বারিসো নিরা বলেন, ২০১৯ সালে রুম্পার সাথে ফেসবুকে পরিচয় হওয়ার পর থেকেই তাকে একনজর দেখার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে থাকতো । যদিও আমাদের ভিডিও কলে প্রায়ই কথা হতো কিন্তু তাকে স্বচক্ষে দেখার জন্য মনটা সবসময়ই ব্যাকুল হয়ে যেত। রুম্পা অত্যন্ত একটি শান্ত, বুদ্ধিমতি মেয়ে তাকে জীবনসঙ্গিনী পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। বাংলাদেশকে এখন আমার শ্বশুরবাড়ির দেশ হিসেবেই মনে করি। বিশেষ করে দিনাজপুরের প্রতিটি মানুষ এখন আমার আত্মার আত্মীয় হয়ে গিয়েছে।
Utilitarianism (পালংবাদ) মূলত কী?
দ্রুত নির্বাচনের জন্য এত মানুষ শহীদ হয়নি: উপদেষ্টা আসিফ
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে হলো ‘কোস্টাল ক্লিনআপ’