ড্রাগন ফল চাষ করে স্বাভলম্বী চাষী কামরুজ্জামান
- নাজমুল হোসেন, সিরাজগঞ্জ
-
২০২২-০৭-২৩ ০৬:১৩:৩০
- Print
ড্রাগন ফল। কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশের মানুষ জানতো এটি বিদেশি ফল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে দেশে এর চাষ এতোটা বেড়েছে যে, এখন এটি দেশি ফল বলেও পরিচিত।সিরাজগঞ্জে উল্লাপাড়ার তালায় ড্রাগনের চাষ হচ্ছে। জানা গেছে, টক-মিষ্টি ও মিষ্টি স্বাদের ড্রাগন চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন চাষী কামরুজ্জামান স্বপন। নিজ বাড়ির ছাদ ও কৃষি জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ড্রাগন ফলের চাষাবাদ,চারা উৎপাদন ও ফল বিক্রি করে এখন সচ্ছল ও স্বাভলম্বী। এই কৃষকের উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতির উন্নত ড্রাগন চারা বিক্রি হচ্ছে সারা দেশে। ইতিমধ্যে এ চাষাবাদে তিনি তার ভাগ্যর চাকা ঘুরিয়েছেন। তার এমন সাফল্যর পর ড্রাগন চাষাবাদে ঝুঁকছে স্থানীয় বেকার যুবকরা।
জানাগেছে, সিরাজগঞ্জ জেলা সদর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দুরে উল্লাপাড়া পৌর শহরের ঝিকিড়া মহল্লার ড্রাগন চাষী কামরুজ্জামান স্বপন। একটি সরকারি অফিসের কর্মচারী।
ইউটিউবে ড্রাগন চাষাবাদ দেখে তিন বছর আগে চাকুরীর পাশাপাশি সখের বশে ঝুঁকে পড়েন এ ড্রাগন ফল চাষাবাদে। প্রথমে অন্যর জমি লিজ নিয়ে ড্রাগন চাষাবাদ করতে গিয়ে ক্ষতির সন্মুখিন হন। কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। পরবর্তীতে নিজ বাড়ির ছাদ ও আঙ্গিনায় স্ত্রীকে সাথে নিয়ে চাকুরির ফাঁকে নতুন উদ্যামে শুরু করেন চাষাবাদ। এরপর সাফল্য পেতে থাকেন তিনি। নিজেই বিভিন্ন উন্নত জাতের ড্রাগন চারা সংগ্রহ করে চাষাবাদ করেন।
এভাবে তিনি তার বাড়ির ছাদে প্রায় ১৫ শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির বড় ড্রাগন গাছ তৈরি করেছেন। এসব গাছে ধরেছে নানা রঙ্গের ড্রাগন ফুল ও ফল। শুধু বাড়ির ছাদই নয়। পাশাপাশি আরো দুই বিঘা জমিতে বৃদ্বি করেছেন এ চাষাবাদ। স্বপন এই ড্রাগন গাছ থেকে ড্রাগন চারা উৎপাদন করে বিক্রি করছে সারা দেশে। ফল ও চারা বিক্রি করে তিনি বছরে আয় করছে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা।
ড্রাগন চাষী কামরুজ্জামান স্বপন জানান,ড্রাগসের এই চাষাবাদ আরো ছড়িয়ে দিতে তৈরি করেছেন ইউটিউব চ্যানেল। সেখানে এ চাষাবাদের খুটিনাটি বিষয় তুলে ধরেন তিনি। আর তা দেখে উৎসাহিত হয়ে সারা দেশ থেকে নতুন চাষীরা আসছে স্বপনের ড্রাগন চাষাবাদ দেখতে। তারা এখানে এ চাষাবাদ দেখে উৎসাহিত হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির ড্রাগন চারা সংগ্রহ করে নতুন চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন।
স্বপনের বাড়ির ছাদ আর খেতে নানা জাতের সারি সারি ড্রাগন গাছে ধরেছে বাহারী সব ড্রাগন ফল আর ফুল। প্রতিদিন নানা রঙ্গের সুস্বাদু ফল কিনতে আর দেখতে আসছে উৎসুক মানুষ। স্বপনের পুরো বাড়িটি যেন ড্রাগনের বাগান। পাইকারি ও খুচরা ফল বিক্রি হচ্ছে নিজ বাড়িতেই।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি জানান,বিদেশি ফল ড্রাগন চাষে খরচ কম । দেশেই নানা জাতের ড্রাগন চারা পাওয়ায় এ চাষাবাদে বেকার যুবকদের স্বাভলম্বী হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ ড্রাগন চাষীদের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগীতা করছে।
তিনি আরো বলেন দেশের বেকার যুবকদের এ চাষাবাদের উপর প্রশিক্ষণ ও সহায়তা করা গেলে তাদের ভাগ্য বদলের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।