ইউক্রেনে রকেট হামলার শিকার পণ্যবাহী জাহাজে ২৮জন নাবিক ও ক্রু দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন জাহাজটির ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আসিফুল ইসলাম। সৈয়দ আসিফুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ফুলবাড়িয়া এলাকার সৈয়দ নূরুল ইসলামের বড় ছেলে। আসিফুল সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়ে জাহাজের চীফ ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন। বুধবার রাতে তিনি তার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।
চীফ ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আসিফুল ইসলাম জানান, আমরা আমাদের এক সহকর্মী থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানকে হারিয়েছি। আল্লাহতালা তাকে জান্নাত নসিব করুক। আর যেন কারো এইভাবে প্রাণহানি না হয় আমরা নিরাপদে ছিলাম। হাদিস আসরের নামাজের পরে ৬তলার উপরে ব্রিজে যায় মোবাইলে কথা বলার জন্যে। সেখানে নেটওয়ার্ক ভাল পাওয়া যেত। এরমধ্যে তার থেকে ২/৩ ফুট দূরে রকেটটি পড়ে। প্রথমে আমরা কেউ বুঝতে পারেনি হাদিস মারা গেছে। রকেট হামলায় অগ্নিনির্বাপণের দুই ঘন্টা পর আমরা হাদিস যে মারা গেছে তা বুঝতে পারি। সেদিন তুমুল হামলা হয় ইউক্রেনে। আমরা ভাবতে পারেনি আমাদের জাহাজে হামলা হবে। আমরা তো কারো শত্রু ছিলাম না। আমরা গিয়েছিলাম ব্যবসা করতে। এখন ইউক্রেন নাকি রাশিয়া এই হামলা করেছে তা আমরা বলতে পারছিনা। আমরা ভয়ে ছিলাম। আমাদের দেড় থেকে দুইমাসের খাবার, পানি ও তেল মজুদ ছিল, কোন খাদ্য সংকট ছিল না।
আসিফুল বলেন,হামলার পর আমাদের প্রথম কাজ ছিল ফায়ার ফাইটিং, আগুন নিভাতে হবে। না হলে সবাইকে আগুনে পুড়ে মরতে হবে। রকেট হামলা হয়েছিল জাহাজের ৬তলার ছাদে। আমাদের ফোকাস ছিল আগুনের দিকে। সেখানে ছিল প্রচন্ড শীত। যদি জাহাজ থেকে নেমে যেতে হয় তখন কোথায় থাকবো, তখনো সেইফ এক্সিটের আমাদের কোন প্লান হয়নি। যদি জাহাজ থেকে নামি তাহলে শীতেই অবস্থা খারাপ হয়ে যেত। যদি আমাদেরকে কেউ উদ্ধার করতে না ও আসে যেন জাহাজে কয়েকদিন অন্তত থাকতে পারবো, তাই আমাদের ফোকাস ছিল আগুনের দিকে। অগ্নিনির্বাপণের পর আমরা হাদিসুরের লাশ উদ্ধার করে ফ্রিজিং কক্ষে রাখি। এর একদিন পরই আমাদের উদ্ধার করে।