চাঁদপুরে বালু উত্তোলন বন্ধে মানবন্ধন কর্মসূচি পালন
- চাঁদপুর প্রতিনিধি:
-
২০২২-০৩-০৫ ১০:০২:৪২
- Print
অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করে নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারনে বার বার নদী ভংগনের শিকার চাঁদপুর সদর উপজেলা ১৪নং রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নবাসী বালু উত্তোলন বন্ধে মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
৪ মার্চ শুক্রবার সকাল ১১টায় ইউনিয়ন পরিষদের সম্মুখে ও ভাংগন কবলিত আছকা বাজার এলাকার নদী তীরে শত শত নারী, পুরুষ ও শিশু এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন।
বেশ কয়েকবার নদী ভাংগনে ক্ষতিগ্রস্থ কয়েকজন নারী বলেন, নদীতে ভাংঙ্গতে ভাংঙ্গতে আমাদের আর নিজেগো ভিটা মাটি নাই। এখন নদী ভাঙ্গে আর এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সেই নদীর তীরেই ঘর বানাই। গত দশ বছরে রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে নদী বেশী ভাংঙ্গছে। যখন থেকে ড্রেজার দিয়া নদীর থেইকা বালু ও মাডি কাটা শুরু হইছে তখন থিকা বেশী ভাঙ্গে। নদীতে নামলে এখনো দেইখেন নদীতে ডে্রজার লাহাইয়া বালু কাটছে। আমারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ কইরা বলি এ বালু কাটা বন্ধ করেন। নইলে রাজরাজেশ্বর আর পাওয়া যাইবো না। আমরা জেলা প্রশাসকের কাছেও বলি যেন ড্রেজার বন্ধ করা হয়। এতবার নদীতে ঘর ভাংতে ভাংতে আর ঘর ওডানের টাকা নাই দেখেন কেমনে পোলা পাআর লইয়া জেই নদীর লগেই আছি।
ভাংঙ্গনের শিকার আবুল হাশেম বলেন, আমি দল মত নির্বিশেষে সরকারের কাছে অনুরোধ করছি আমাদেরকে বাঁচান, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নকে বাঁচান। আমি অন্তত ১০ থেকে ১২ বার নদীর ভাংঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হইছি। নদী এখন বেশী ভাংঙ্গে নদীর থিকা বালু ওঠানে। দেখেন রাজরাজেশ্বরের জায়গা কোথায় ছিল এখন কোথায় আছি আমরা। অনেকগুলা ওয়ার্ড নদীতে চইলা গেছে। ড্রেজিং বন্ধ না করলে আর রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নকে রক্ষা করা
ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইউনুছ পাটওয়ারী বলেন, আমার বাব দাদার কবরটাও এখন নদীর মধ্যে। নদী বর্ষা আইলে ভাংঙ্গে এখন আর বর্ষা লাগে না সব সময় ভাংঙ্গে, এর কারন ড্রেজার। প্রতিদিন শত শত ড্রেজার দিয়া রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন এলাকায় নদীর থিকা বালু কাটা হইতাছে। আর এ কারনে নদী বেশী ভাংঙ্গতাছে। এটা বন্ধ না করলে আমরা কোথায় যামু। নদী ভাংঙ্গনের পর অনেকে পাশের জেলা শরীয়তপুরের তারাবুনিয়ায় গিয়া বাড়ি করছে। কয়েকশত পরিবার এখন শরীয়তপুরে থাকে। ড্রেজিং বন্ধ করে রাজরাজেশ্বরের ২৩ হাজার মানুষকে বাঁচান।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে শফিকুর রহমান বলেন, নদী ভাংঙ্গতে ভাংঙ্গতে আমাদের রাজরাজেশ্বরে কিছুই বাকী নাই। যাও কিছুটা আছে তা হয়তো কয়েক বছরের মধ্যে থাকবে না, এর প্রধান কারন নদীতে যত্রতত্র বালু কাটা। নদীতে প্রতিদিন শত শত ড্রেজার দিয়ে বালু কাটা হচ্ছে এতে আমাদের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন চাঁদপুর জেলার মানচিত্র থেকে ্রকদিন হারিয়ে যাবে।
এসময় বাদশা প্রধানিয়া, মোসলেম সর্দার, আনসান আলী সর্দার, মানিক সর্দার , নবীর সর্দার, রহিম বেপারী, রানু আক্তার, আসমা, কমলা বেগম, আসমা খাতুন বলেন, সাহেরা বেগম মরিয়ম খাতুনসহ শত শত নারী পুরুষ ও শিশু মানবন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বলতে থাকে ড্রেজার বন্ধ কর রাজরাজেশ্বরকে বাঁচাও, ড্রেজিং বন্ধ করলে নদী ভাংঙ্গন বন্ধ হবে।