শনিবার, ভোর ৬: ০৫ মিনিট, উত্তরাঞ্চলে হাড় কাঁপানো শীত। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রেন যাত্রীরা দিনাজপুর পার্বতীপুরে রেল জংশনে নামছে। আমার মত শত শত যাত্রী অন্য ট্রেনের অপেক্ষা করছে। এমন সময় রেল জংশন স্টেশনে দ্বিতীয় প্লার্টফম কয়েকজন রেলযাত্রী জটলা করছে ঘিরে আছে। একটু এগিয়ে গিয়েই দেখা দেখা গেল এক ব্যাক্তি নিল রঙের কম্বল মুড়ি দিয়ে এক ব্যাক্তি ঘুমাচ্ছে।
মনে হচ্ছে ভবঘুরে ছিন্নমূল মানুষ এলোমেলো ঝাকড়া চুল নীল রঙের দুটি কম্বল গায়ে ঘুমিয়ে রয়েছে। কম্বল দিয়েই শিশু বাচ্চার মতন এক কুকুরছানাকে নিয়ে ঘুমিয়ে আছে। অপর পাশে আরেকটি কুকুর কম্বলের উপর বসে ঠান্ডা নিবারন করার চেষ্টা করছে।
উৎসুক ট্রেনযাত্রারা এই দৃশ্য দেখে অনেকেই মন্তব্য করছেন বলছেন এরাই প্রকৃত মানুষ একই বিছানায় একই কম্বলের নিচে কুকুরছানাকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়া দৃষ্টান্ত ইতিহাস। কুকুরছানাটির ভবঘুরে মানুষের সাথেই একই কম্বলের নিচে শান্ত শিশুর মতোই ঘুমিয়ে রয়েছে এটা যেন এক কুকুর ছানার সাথে মানুষের এমন সখ্যতা। যা শুধু মা এবং শিশু বাচ্চার মতোই ভালবাসার বাাঁধনে রয়েছে। লোকটিও গভীর ভাবে ঘুমাচ্ছে। মাঝে মাঝে কুকুর ছানাটি চোখ মিলে মিটি মিটি করছে।
ট্রেন যাত্রী গোপরান বিপ্লব বলেন, উত্তরাঞ্চলে এই তীব্র শীত। আর ভোর রাতে শীতের মাত্রা এতটাই বেড়ে যায়। মানুষ আর পশু পাখির বেচে থাক্ইা চ্যালেঞ্জ। পার্বতীপুর রেল ষ্টেশনে আমার দেখা এমন দৃশ্য একই কম্বলের নীচে মানুষের সাথে কুকর ছানার ঘুমানো। আর কখন দেখা হয়নি। এটা আসলে বিরল ভালবাসার দৃষ্টান্ত।
পার্বতীপুর রেলওয়ে পুলিশ আবুল হোসেন বলেন, আমরা পুলিশের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনে দায়িত্ব পালন করেছি। তীব্র শীতের মধ্যে মানুষ বিভিন্ন জামা কাপড় পাড়ে ঠান্ডা নিবারন করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এই দৃশ্য যে একই কম্বলের নিচে কুকুর ছানা শিশুর মত একই কম্বলের নিচে নিয়ে ঘুমানো দৃশ্য আর কখন দেখা হয়নি। এরা আসলেই প্রকৃত মানুষ।
রেল ষ্টেশন মাষ্টার কবীর হোসেন জানান, ষ্টেশন প্লাট ফর্মে অনেক ভবে ঘুরে মানুষ ঘুমিয়ে থাকে। কিন্তু এটাই প্রথম আমার দেখা একজন মানুষ শিশুর মত করে কুকুর ছানাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর দৃশ্য আগে কখন দেখা হয়নি। এটা হচ্ছে প্রকৃত পশু প্রেম। এই কুকুর ছানাটিও মায়ের মত লোকটিকে ভালবাসে। লোকটি যদি যেখানে যায় কুকুর ছানাটিও পিছনে পিছনে ঘুরে বেড়ায়।