ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাপের উপদ্রব বেড়েছে। একমাস যাবত ওই বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ক্লাস চলাকালে বিভিন্ন প্রজাতির সাপের বাচ্চা ঢুকে পড়ছে। এ পর্যন্ত গোখরা ও কালি দাঁড়াশ সাপের ১৬টি বাচ্চা মারা হয়েছে। এ নিয়ে আতংকে আছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বড়াইল হোসাইনীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একতলা বিশিষ্ট একটি ভবন ও আধা পাকা ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ স্কুলে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সাড়ে ৩০০ শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে। করোনায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বিদ্যালয়টি খোলা হয়েছে। এরপর থেকে শ্রেণি কক্ষে, হল রুমে, বারান্দায় ও স্কুল ভবনের আশপাশে গোখরা ও দাঁড়াশ সাপের বাচ্চা প্রায় দেখা যাচ্ছে। গত একমাস যাবত এর উপদ্রব বেড়েছে।
স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী আফরিনা রাকির বড় বোন জান্নাতুল বাকি বলেন, আমাদের বাড়ি স্কুলের পাশেই। আমার দুই বোন এ স্কুলে পড়াশুনা করে। কয়েকদিন আগে আমার ছোট বোন রাকি শ্রেণিকক্ষে বেঞ্চে বসার সময় দেখে পায়ের কাছে সাপের বাচ্চা। এ সময় শ্রেণিশিক্ষক তাকে সরিয়ে আনেন। এতে সে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। শুধু তার সঙ্গে নয়, প্রায় সময় শোনা যায় শ্রেণিকক্ষে আরও অনেক বাচ্চা এমন পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুন বলেন, গত একমাস যাবত শ্রেণিকক্ষে সাপের বাচ্চা দেখা যাচ্ছে। কিছুদিন আগে খেয়াল না করলে সাপের ওপর পা দিয়ে দিতাম। আজকেও শ্রেণিকক্ষ থেকে অফিস রুমে আসার সময় দরজায় এক শিক্ষক সাপ দেখতে পান। তিনি দৌড়ে চলে যান। সাপের উপদ্রবে আমরা আতংকিত।
তিনি আরও বলেন, বারান্দায় ও আশপাশে সাপের উপদ্রব বেশি দেখা যাচ্ছে। শুনেছি বর্ষার পানিতে স্কুলভবনের নিচে ফাঁকা হয়ে যায়। এ জায়গা মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। এরপরও কিছু জায়গা ফাঁকা থাকায় ধারণা করা হচ্ছে সেখানে সাপ বাসা বেঁধেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম বলেন, সাপের উপদ্রব দেখে আমরা আশপাশে গ্যাস যুক্ত ওষুধ দেই, তাতেও কাজ হয়নি। পরে কার্বলিক অ্যাসিড দিয়েছি। এরপরও সাপের উপদ্রব কমেনি। গত একমাসে ১৬টি সাপের বাচ্চা মারা হয়েছে। আমরা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানিয়েছি।
বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। সাপুড়ে আনতে বলেছি। এর টাকা আমি ব্যক্তিগত ভাবে দিবো।