ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস পাড়ের কৃতি সন্তান জেলার প্রবীন জনপ্রিয় আলোকচিত্রী ও পরিচ্ছন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রাণতোষ চৌধুরী আর নেই। শুক্রবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে তিনি তাঁর পাইকপাড়াস্থ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বার্ধক্যজণিত নানা শারীরিক জটিলতার সাথে লড়াই করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে ৪ মেয়ে ও নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
তিনি জেলার বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তী ইউনিয়নের শ্যামড়া গ্রামের রাধা চরণ চৌধুরীর ছেলে। এদিকে তাঁরা মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরজুড়ে শোকের আবহ নেমে আসে। রাত থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ তার সুহৃদরা তাকে এক নজড় দেখতে তার বাড়িতে ভীড় জমান। পরে শনিবার সকালে প্রাণতোষ চৌধুরীর শবদেহ স্থানীয় শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালিবাড়ীতে নিয়ে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীসহ আত্মীয় স্বজন সুহৃদ ও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা ও চোখের জলে তাকে শেষ বিদায় জানান। পরে দুপুরে শহরের মেড্ডাস্থ শ্মশানে তাঁর আন্তুষ্টিক্রীয়া সম্পন্ন করা হয়।
উল্লেখ্য, তিনি আনন্দময়ী কালিবাড়ি, সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গণ, সাহিত্য একাডেমী সহ বিভিন্ন সাংস্কৃাতিক ও সামাজিক সংগঠনের জন্য সাথে সম্পৃক্ত থেকে শুদ্ধ সাংস্কৃতিক চর্চা ও সামাজিক উন্নয়নের কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন আশির দশকের দাপুটে চিত্রগ্রাহক, যার ক্যামেরার লেন্সে বন্দি হয়েছিল এই জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দুর্লভ চিত্রকর্ম। তিতাস জনপদের শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গন যার পদচারণায় ছিল মুখরিত। তাঁর মৃত্যুতে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনো পূরণ হবার নয়। এদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সদা প্রাঞ্জল প্রাণতোষ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়ে প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।