ঘড়রি কাঁটায় তখন রাত ১১টা। মার্কেটের বারান্দায় পলথিনি বছিয়িে বসে ভাত খাচ্ছনে শতাধকি মানুষ। সাত-আটজন যুবক খাবার পরিবেশন করছেন। আর মধ্যবয়সী একজন তদারকি করছেন। সামনেই সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড় করানো রিকশা-অটোরিকশা। গত বুধবার রাতে রাজশাহী মহানগরীর কল্পনা সিনেমা হলের মোড়ে দেখা মেলেএমন দৃশ্য। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এটি প্রতি রাতের নিয়মিত দৃশ্য। যিনি দাঁড়িয়ে থেকে তদারকি করছিলেন তাঁর নাম আজিজুল আলম বেন্টু। তিনি রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগরে সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনিই প্রতিরাতে অসহায় মানুষদের পেটভরে খাওয়ান। আজিজুল আলম বেন্টু সম্প্রতি কল্পনা হলের মোড়ে ‘লবঙ্গ ফাস্টফুড অ্যান্ড চাইনজি’ নামে একটি রেস্তোঁরা চালু করছেনে। 

রেস্তোঁরাটিতে ভাত পাওয়া যায় না। কিন্তু দরিদ্র মানুষদের জন্য সেখানে প্রতিরাতে রান্না হয় ভাত, ডাল, মাছ, মাংস ও সবজ। রেস্তোঁরায় রান্না করা খাবারই পরিবেশন করা হয় অসহায় মানুষদের মাঝে। খাবার পরিবেশনের জন্য কেনা হয়েছে আলাদা থালা-বাসনও। বুধবার রাতে শতাধকি মানুষকে খেতে দেখা যায়। তাঁদের বেশিরভাগই রিকশাচালক। সারি করে রিকশা রেখে তাঁরা খেতে বসেছেন। ছিন্নমূল কয়কেজন নারী, কিশোরী আর শিশুকেও সেখানে দেখা যায়। মাছ আর ডাল দিয়ে তাঁরা তৃপ্তি নিয়ে খাচ্ছিলেন। এক শিশু বলল, সে মাছ খায় না। এ কথা শুনেই আজিজুল আলম বেন্টু একজনকে ডিম আনতে বললেন। খাওয়া শেষে শিশু সৈকত, ইমন আর রাহিন জানায়, তারা সারাদিন বেলুন বিক্রিকরে। আর রাতে রেলস্টেশনে থাকে। বেলুন বিক্রির লাভের টাকায় তারা হোটেলে খাবার কিনে খায়। দুদিন আগে স্টেশনে থাকা এক রিকশাচালক তাদের জানান, কল্পনা হলের মোড়ে তিনি বিনাপয়সায় পেটপুরে খেয়েছেন। রোজই খাওয়ানো হবে সেখানে। খবর পেয়ে সৈকত, ইমন, রাহিনরাও পরদিন থেকে খেতে আসে। 

আজিজুল আলম বেন্টু জানান, বগুড়ার আকবরিয়া হোটেল প্রতিরাতে ছিন্নমূল মানুষকে খাওয়ায়। সেটি দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তিনি জানান, তাঁর রেস্তোঁরায় বাংলা খাবার বিক্রি হয় না। তবে রেস্তোঁরার লাভের অংশ থেকে শুধু অসহায় মানুষদের জন্যই আলাদা বাজার করে বাংলা খাবার রান্না হয়। গত শুক্রবার থেকে তিনি এ র্কাযক্রম শুরু করেছেন। সেদিন ৪০ জন খেয়েছিল। এরপর থেকে খেতে আসা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। তিনি সাধ্যমতো এভাবে খাইয়ে যাবনে।