রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার ৩৫ নং বঙ্গলতলী ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কাচালং নদী। নদীর ওপারে রয়েছে ঐতিহ্যবাহি করেঙ্গাতলী বাজার এবং একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। নদী পারাপারের জন্য নেই কোনো সেতু। প্রতিনিয়ত নিত্য পণ্যে বা নিজেদের উৎপাদিত শাক-সবজি নিয়ে কাঁদা মাটি মাড়িয়ে নৌকায় করে বাজারে আসা-যাওয়া করতে স্থানীয়দের। এছাড়াও বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা কাঁদা মাখা জামা নিয়ে যায় বিদ্যালয়ে, পড়তে হয় চরম বিপাকে। নষ্ট হয়ে যায় তাদের পরিধানের জামা-কাপড়। কাঁদাই যেন এখন তাদের দুঃখ। এতেই চরম দূর্ভোগে প্রায় কয়েক লক্ষাধিক মানুষ। তাই এলাকাবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি কাচালং নদীর উপর একটি সেতু নিমার্ণের। কারণ সেতুটি নিমার্ণ হলে সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্টগুলো লাঘব হবে।
বঙ্গলতলী এলাকার বাসিন্দা ধনেয়া চাকমা জানান, পাহাড়ে প্রতিদিনই ছোট,বড় ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতেই কাচালং নদীর দুই পাড়ে কাঁদা মাটিতে ভরপুর থাকে। ফলে এখানকার স্থানীয়রা প্রতিনিয়ত কাঁদা মাড়িয়ে নৌকায় করে যাতায়াত করেন। এতে কোমলমতি শিশু,নারী ও বৃদ্ধরা বেশি বিপাকে পড়েন।
তিনি আরো জানান, শীত মৌসুমে কোনো রকম যাতায়াত করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে বা অতি ভারি বর্ষণের ফলে কাচালং নদী পারাপার হতে খুবই কষ্ট হয় স্থানীয়দের। নদীর ওপারে একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকায় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ শত শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা পারাপার হয়ে কাদা মাখা জামা-কাপড় নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। এতেই চরম অস্বস্তিতে শিক্ষার্থীরা। তাই কাচালং নদীর উপর একটি সেতু নিমার্ণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
একই এলাকার বাসিন্দা কৃষক মনিষ দেওয়ান ও সূর্য রেখা চাকমা জানান, কাচালং নদীর ওপারে প্রতি সপ্তাহে বসে করেঙ্গাতলী বাজার। এ বাজারে নিজেদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যে বিক্রির জন্য নৌকায় গাদাগাদি করে নদী পারাপার হওয়ার সময় কখন জানি নৌকা ডুবে যায়। সব সময় প্রাণের ভয় নদী পারাপারা হতে হয়। তারা আরো জানান, এমনও দিন গেছে নৌকা ডুবে মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও প্রতিনিয়ত নৌ-দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। একটি সেতু নিমার্ণ করে তাদের কষ্ট দূর করার জন্য সরকারে প্রতি আহ্বান জানান তারা।
৩৫নং বঙ্গলতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞান জ্যোতি চাকমা জানান, কাচালং নদীর উপর সেতু নিমার্ণের জন্য প্রায় ২ বছর পূর্বে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে (এলজিইডি) আবেদন করা হয়েছে। ইতিপূবে মাটি পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজও শেষ হয়েছে। এখন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেই সেতু নিমার্ণের কাজ শুরু হবে। তিনি আরো জানান, সেতুটি নিমার্ণ হলে এলাকায় বসবাসরত মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।