ঢাকা শনিবার, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
ঢাকা রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্সে বঙ্গবন্ধু গ্যালারি
  • মজিবুর রহমান খান
  • ২০২১-০৯-১৪ ০০:১৯:১১

ঢাকা রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্সে স্থাপন করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু গ্যালারী’। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বেশ কিছু ছবি ছাড়াও তার অমর কয়েকটি বাণী দিয়ে সাজানো হয়েছে গ্যালারিটি।  আকর্ষনীয় এ গ্যালারি নজর কাড়ছে সবার। 

মূলত রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের সেবাগ্রহীতারা যেন জাতির জনক সম্পর্কে আরও বেশি জানতে পারেন এবং তাঁর আদর্শ লালনে উদ্বুদ্ধ হন- সেই চিন্তা থেকে বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ কিছু ছবি ও অমর বাণী দিয়ে সাজানো হয়েছে গ্যালারিটি। এই গ্যালারির উদ্যোক্তা ঢাকা জেলার রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার। অনন্য এই কাজ বাস্তবায়নে তাকে সহযোগিতা করেন গুলশানের সাব রেজিষ্টার মোহাম্মদ রমজান খাঁন। 
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের ১নং ভবনের সামনের অংশে স্থাপন করা বঙ্গবন্ধু গ্যালারিটি গত ১৫ আগস্ট আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক উদ্বোধন করেন। এরপর সেটি কমপ্লেক্সে আগতদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা মানুষজন চোখ জুড়ানো বঙ্গবন্ধু গ্যালারি দেখে পুলকিত ও আন্দোলিত হচ্ছেন। আবার কেউ কেউ শুধুমাত্র গ্যালারি দেখার জন্যও আসছেন কমেপ্লক্সে।

জায়গার দলিল করতে রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সে গুলশান সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে আসা গুলশানের বাসিন্দা হাফিজুর রহমান জানান, কমপ্লেক্সে এতো মানুষের জটলার ভীড়ে জাতির জনকের গ্যালারিটি দেখে অনেক ভালো লেগেছে তার। বঙ্গবন্ধুর বেশ কিছু দুর্লভ ছবি রয়েছে গ্যালারিতে। নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর আদর্শ সম্পর্কে জানাতে এই গ্যালারি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।

বঙ্গবন্ধু গ্যালারি দেখতে আসা ঢাকার মুগদা এলাকার বাসিন্দা জালাল উদ্দিন বাচ্চু বলেন- বঙ্গবন্ধুকে চমৎকারভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে গ্যালারিতে। প্রতিটি ছবিই যেন জীবন্ত! রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্সের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ একটি স্থাপনায় স্বাধীন বাংলাদেশের জনকের এই গ্যালারির মাধ্যমে সেবাগ্রহীতারা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর জীবনাদর্শ সম্পর্কে আরও বেশি করে জানতে পারবেন।

এব্যাপারে ঢাকা জেলার রেজিস্ট্রার সাবিকুন নাহার বলেন- বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। প্রতিনিয়ত আমাদের অফিসে প্রচুর মানুষ আসে তাদের কাজের প্রয়োজনে। তারা যেন বঙ্গবন্ধুকে জানতে পারেন,বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম। এই গ্যালারি বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনা,ভাবনাগুলো তাদের মনে করিয়ে দেবে। জনগনকে সেবা করবো এটাই মটো আমার। সেকারনে এখানে বঙ্গবন্ধুর একটি বানী আমরা দিয়েছি-‘সরকারী কর্মচারীদের জনগনের সাথে মিশে যেতে হবে,তারা জনগনের খাদেম,সেবক,ভাই। তারা জনগনের বাপ,জনগনের ছেলে,জনগনের সন্তান। তাদের এই মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে।’ এটি যাতে আমাদের ভাবনায় থাকে সেকারনে আমরা এই বানীটি এখানে দিয়েছি। তিনি আরো বলেন,

এই কাজ সম্পন্ন করতে স্যার (আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক ) আমাদেরকে পরামর্শ দিয়েছেন। সেজন্যে আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞ। আমার অধীনস্থ কর্মকর্তারাও আমাকে সহায়তা করেছেন। তাদের অন্যতম গুলশানের সাব রেজিষ্টার মোহাম্মদ রমজান খান।  

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা জেলা রেজিষ্টার হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সাবিকুন নাহার রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্সের চিরচেনা দৃশ্যের পরিবর্তন ঘটাতে কাজ শুরু করেন। কমপ্লেক্স আঙ্গিনা হয়ে উঠেছিলো গাড়ি পার্কিংয়ের স্থল। বহিরাগতরা এখানে গাড়ি পার্কিং করতো অবাধে। এতে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে সেবা গ্রহিতাদের চলাচলই কঠিন হয়ে পড়ে।  সেই অবস্থা এখন নেই। আঙ্গিনা উন্মুক্ত। দেয়ালের পাশে করা হয়েছে বাগান। বাইরের এই পরিবর্তনের পাশাপাশি তিনি অফিসের চেহারা পাল্টাতেও ভূমিকা রাখেন। এখানে যোগদানের পর  ১০০ দিনের কর্মসূচী হাতে নেন। যার অন্যতম ছিলো যথা সময়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে উপস্থিতি নিশ্চিত করা। সেটি করেছেন তিনি। রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্সকে দালাল তথা অপরাধমুক্ত করার কাজেও সফল হয়েছেন। ব্যাংকিং সুবিধে চালু করা হয় কমপ্লেক্সে। অসুস্থদের সেবা নিতে যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্যে হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দেন। নিয়োগ,বদলী-পদোন্নতির ক্ষেত্রে অনিয়ম দূর করার দাবীদারও তিনি। জেলা রেজিষ্টার সাবিকুন নাহার বলেন- দায়িত্ব নেয়ার পরই সহকর্মীদের নিয়ে বসে এখানে কোথায় কি সমস্যা তা চিহ্নিত করার চেষ্টা করি। ১০০ দিনের কর্মসূচী ঘোষনার পর আমি নিজে সকাল ৯ টায় অফিসে হাজির হই। যাতে আমার অফিসের সবাই সেটা ফলো করে। মোট কথা হচ্ছে জনগন যাতে সেবা বঞ্চিত নয় আমি সেটি নিশ্চিত করতে বলা চলে জেহাদ ঘোষনা করি। সপ্তাহের বুধবার গনশুনানীর জন্যে নির্ধারিত থাকলেও আমি প্রতিদিনই গনশুনানী করছি। আমার দরজা সবার জন্যে খোলা। বদলী-নিয়োগ শতভাগ স্বচ্ছতার সাথে সম্পন্ন করেছি। সাব রেজিষ্টার হিসেবে ১৯৯৪ সালে সাবিকুন নাহারের কর্মজীবন শুরু হয়। ২০১৬ সালে জেলা রেজিষ্টার হিসেবে পদোন্নতি পান। এরপরই নারায়নগঞ্জ জেলা রেজিষ্টারের দায়িত্ব পান। ঢাকা রেজিষ্টার হিসেবে কমপ্লেক্সে থাকা ঢাকা শহরের ১১টি সাব রেজিস্ট্রি অফিস এবং এর বাইরে জেলার আরো ১০টি সাব রেজিষ্ট্রি অফিস রয়েছে তার অধীনে। সবকটি অফিসে শৃক্সখলা ফিরিয়ে আনেন তিনি। কমপ্লেক্সে থাকা গুলশান সাব রেজিষ্ট্রি অফিস হয়ে উঠেছে তারই আয়না। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে এখানে সাব রেজিষ্টার হিসেবে যোগদান করেন আরেক দক্ষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ রমজান খান। এরপরই সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের কাজকর্মে পরিবর্তন আসে। সেবাগ্রহিতারা যাতে কোনরকম হয়রানীর শিকার না হন সেই পদক্ষেপ নেন তিনি। রেজিষ্ট্রি অফিসের প্রবেশ মুখে একটি নোটিশ টানিয়ে দেন সেবাগ্রহিতাদের উদ্দেশ্যে। যাতে লিখা রয়েছে-‘যে কোন প্রয়োজনে সাব রেজিষ্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন’। মোহাম্মদ রমজান খান বলেন,হয়রানী মুক্ত সেবা নিশ্চিত করেছেন তিনি। আগে এখানে সেবাগ্রহিতাদের বসার জায়গা ছিলোনা। সেই ব্যবস্থাও আমি করেছি।  

এদিকে ঢাকার উত্তরা, খিলগাও, গুলশান ও সাভারে ই-রেজিষ্ট্রেশনের ২ মাসের একটি সমীক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে এরইমধ্যে। সাবিকুন নাহার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার রানীখার গ্রামের পুত্রবধু। তার স্বামী সৈয়দ আলমগীর হোসেন মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক।

Utilitarianism (পালংবাদ) মূলত কী?
দ্রুত নির্বাচনের জন্য এত মানুষ শহীদ হয়নি: উপদেষ্টা আসিফ
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে হলো ‘কোস্টাল ক্লিনআপ’