ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
করোনারোধে ঢাকার ৪৯ এলাকা লকডাউন হচ্ছে
  • আমান উল্লাহ চৌধুরী, আজকাল, ঢাকা:
  • ২০২০-০৬-১৩ ০৩:৪৭:২৮

বৈশ্বিক নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বিশ্বের অনেক দেশে তা খানিকটা কমে এসেছে। সেখানে দেশে দিন দিন মৃত্যু ও সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। এ অবস্থায় সরকার করোনা প্রতিরোধে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে জোরালোভাবে লকডাউন আরোপ করতে যাচ্ছেন।

বিশেষ করে জনবহুল ঢাকায় মৃত্যু ও সংক্রমণ হার বেশি।দেশে ৮০ হাজারের ওপর মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তার ৭০ শতাংশ ঢাকার।

তেমনি মৃত্যু হয়েছে ১০৯৫, সিংহভাগই ঢাকার।আগেই ঢাকার রাজাবাজারে লকডাউন আরোপ করা হয়েছে।বিশেষত: পক্ষকালের মধ্যে ঢাকা শহরের কোনো এলাকায় যদি ৬০ জন করোনারোগি শনাক্ত হন, তবে তা রেড জোন হিসেবে লকডাউন করা হবে।সে হিসেবে ঢাকা শহরের ৪৯টি এলাকাকে লকডাউনের অধীনে আনা হচ্ছে।

ঢাকার বাইরে যে কোনো জেলার এক এলাকায় ১০ জন রোগী থাকলে রেড জোনে পরিণত হবে এলাকাটি। এসব বিষয় সুনির্দিষ্ট করে সংক্রমণ বিবেচনায় সারা দেশ তিনটি জোনের (লাল, হলুদ, সবুজ) আওতায় নিয়ে করোনা মহামারী নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চূড়ান্ত করেছে সরকার।‘

বাংলাদেশ রিস্ক জোন বেজড কোভিড-১৯ কন্টিমিনেট ইমপ্লেমেন্টশন স্ট্রাটেজি/গাইড’ শীর্ষক এ নির্দেশনা ৯ জুন চূড়ান্ত হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মহামারীটি চতুর্থ পর্যায়ে রয়েছে। যেখানে বিস্তীর্ণভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটছে।

এ গাইড বা নির্দেশনা অনুসারে অবিলম্বে সারা দেশে কার্যকর হবে বলে নিশ্চিত করেছেন অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ব্যাপকতা রোধে জোনভিত্তিক লকডাউন বাস্তবায়নে শুক্রবা্রই অনলাইন বৈঠক করেছেন সরকারের পাঁচজন মন্ত্রী এবং তিনজন মেয়র।

এদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক অংশ নেন।

এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন অংশ নেন। শুক্রবার অবধি সরকারি হিসেবে বাংলাদেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১০৯৫ জনে।

সরকারের রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্যমতে, রাজধানী ঢাকার ৪৯টি এলাকায় ৬০ জনের বেশি নিশ্চিত করোনা রোগী রয়েছেন। সেই হিসাবে এসব এলাকা শিগগির লকডাউন হবে।

এসব এলাকা হচ্ছে- আদাবর, আগারগাঁও, আজিমপুর, বাবুবাজার, বাড্ডা, বনশ্রী, বনানী, বংশাল, বাসাবো, বসুন্ধরা, চকবাজার, ডেমরা, ধানমণ্ডি, ইস্কাটন, ফার্মগেট, গেণ্ডারিয়া, গ্রিনরোড, গুলশান, হাজারীবাগ, যাত্রাবাড়ী, জুরাইন, কল্যাণপুর, কলাবাগান, কাকরাইল, কামরাঙ্গীরচর, খিলগাঁও, লালবাগ, লালমাটিয়া, মালিবাগ, মিরপুর, মিরপুর-১, মিরপুর-১২, মগবাজার, মহাখালী, মোহাম্মদপুর, মতিঝিল, মুগদা, পল্টন, রাজারবাগ, রামপুরা, রমনা, শাজাহানপুর, শাহবাগ, শ্যামলী, শান্তিনগর, শেরেবাংলা নগর, তেজগাঁও, উত্তরা, ওয়ারী।

গাইডলাইনে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কোনো এলাকায় গত ১৪ দিনের মধ্যে প্রতি লাখে ৬০ জন বা তার বেশি লোক সংক্রমণের শিকার হন তবে ওই এলাকা রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত হবে। ঢাকা সিটির ক্ষেত্রে বিগত ১৪ দিনে কোনো এলাকায় ৩ থেকে ৫৯ জন নিশ্চিত করোনা রোগী থাকলে সেটি হবে ইয়েলো জোন।

একইভাবে কোনো এলাকায় ১৪ দিনের মধ্যে নিশ্চিত রোগী যদি ৩ জনের কম অথবা কোনো রোগী না থাকলে সেটি হবে গ্রিন জোন। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঢাকার কোনো এলাকা রেড জোন ঘোষণা হলে সেখান থেকে কেউ বাইরে যেতে পারবেন না। সব কাজ (ফ্যাক্টরি, অফিস) ঘরে বসেই করতে হবে।

জরুরি প্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনার ব্যবস্থা থাকবে। সাইকেলসহ কোনো ধরনের যানবাহন ব্যবহার করা সম্পূর্ণ নিষেধ। এমনকি নৌ, রেল বা সড়ক যোগাযোগও বন্ধ থাকবে।

শহরাঞ্চলে মুদি ও ওষুধের হোম ডেলিভারি দেয়ার ব্যবস্থা থাকবে। সরকারি প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনায় শনাক্তের হার অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। তবে এই সময়ে পরীক্ষার পরিধিও বেড়ছে। বর্তমানে ৫৮টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লেও ঢাকা শহরে এ হার সবচেয়ে বেশি।

দেশের তিনটি জেলা গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং নরসিংদীতে এলাকাভিত্তিক জোনিং করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যার প্রেক্ষিতে ঢাকা উত্তর সিটির পূর্ব রাজাবাজার লকডাউন ঘোষণা করা হলেও অন্যান্য স্থানে এখনও কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি।

বন্যা পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যা করা উচিত
টাঙ্গাইলে বুরো হাসপাতালের শুভ সূচনা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিনামূল্যে ৩০০ জন দুস্থ রোগীর চক্ষু ছানি অপারেশন কার্যক্রমের উদ্বোধন