ঢাকা শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
নেছারাবাদে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন নিয়ে বিতর্ক
  • নেছারাবাদ উপজেলা প্রতিনিধি
  • ২০২৪-১২-১৮ ০৫:৪০:৩১

১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত নেতা এবং বিন্না ইয়াং মেনস ক্লাবের সভাপতি আতিকুর রহমান। তার পাশে ছিলেন ১নং বলদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ মুহিবুল্লাহ। পরে এই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।


বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। বলদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নেছারাবাদ  উপজেলা বিএনপি নেতা সহযোগী অধ্যাপক জনাব শহিদুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, "এটি সত্যিই বেদনাদায়ক এবং দৃষ্টিকটূ। বিএনপির কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ব্যক্তির জাতীয় পতাকা উত্তোলন আমাদের দলের জন্য অবমাননাকর।" একইভাবে  ১ নং বলদিয়া ইউনিয়নের ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক  আল আমিন বলেন, "বলদিয়া ইউনিয়নে বিএনপির সাংগঠনিক দুর্বলতা প্রকট আকার ধারণ করেছে।"

বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মুহিবুল্লাহ জানান, "আতিকুর রহমান আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকলেও তিনি এখনও বিএনপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেননি।তবে তিনি জনাব ওয়াহিদুজ্জামান ওয়াহিদের বাসায় গিয়ে কতা বলে আসছেন এখন আমাদের দলের সাথে কাজকর্ম করে। অতীতে তিনি জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গেও কাজ করেছেন।"


এদিকে আতিকুর রহমান এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, "আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নই। আমি একজন শিক্ষক হিসেবে সব দলের সঙ্গেই লিয়াজো রেখে চলি। ১৬ই ডিসেম্বর সবার জন্য। আমি অতীতে খালেদা জিয়ার ছবি উত্তোলন করেছি এ কথার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি, আবার শেখ হাসিনার ছবি উত্তোলন করেছি এটা সত্য বলেছেন। আমার কাজ শুধু পেশাগত দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে।"


তবে আতিকুর রহমানের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে দেখা যায়, তিনি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণ করেছেন এবং নৌকার পক্ষে জনসভায় ভোট চেয়েছেন। তার এসব কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝেও অসন্তোষ রয়েছে বলে জানা গেছে।


এ বিষয়ে বলদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামিলীগের সভাপতি নজরুল বড়মিয়া জানান, আতিকুর রহমান আওয়ামীলীগের একজন  সদস্য ছিলেন। সে জাতীয় পার্টিতে ছিলো পরে আওয়ামীলীগের হয়ে কাজ করেছিলো তবে তার কোন পদে ছিলো না।


পতাকা উত্তোলনের  এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির তৃণমূল নেতারা যেখানে সরকারের বিরুদ্ধে আপোষহীন আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন, সেখানে নিজেদের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নেতার পতাকা উত্তোলন তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতাকে সামনে নিয়ে এসেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন স্পষ্ট হলেও এই ধরনের ঘটনার মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং দ্বৈত ভূমিকা আরও প্রকট হচ্ছে। নির্বাচনী সময়ে এর প্রভাব কতটা পড়বে, তা এখন দেখার বিষয়।

শ্রমিকদের ধর্মঘটে অচল আশুগঞ্জ নদী বন্দর
ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে  একজনের মৃত্যু
ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ভারতকে সকল সুবিধা দিত হাসিনা:  আলতাফ হোসেন চৌধুরী