আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত কপ-২৯ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ইকো-সোশ্যাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) একটি গুরুত্বপূর্ণ সাইড ইভেন্ট আয়োজন করেছে। বুধবার ( ২০ নভেম্বর ২০২৪ ) সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই সাইড ইভেন্টটির শিরোনাম ছিল "বাংলাদেশে ক্ষতি ও ক্ষতিপূরণের জন্য একটি এনজিও-এমএফআই ভিত্তিক পুল্ড ফান্ড প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্যতা।"
এই ইভেন্টে বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য একটি নতুন তহবিল ব্যবস্থার ধারণা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এসময় বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, "এটি সত্যিই ইএসডিও’র একটি চমৎকার উদ্যোগ। আমাদের শুধু দাতাদের উপর নির্ভর করা উচিত নয়, যা আজ পর্যন্ত তেমন আশাব্যঞ্জক নয়।"
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) এর নির্বাহী পরিচালক, মিস. শাহীন আনাম । তিনি বলেন, "ইএসডিও এমন একটি চমৎকার স্থানীয় তহবিল সমন্বয় প্রক্রিয়া নিয়ে এসেছে, যা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দেশের একটি উদাহরণ হতে পারে।"
পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ মন্তব্য করেন, "এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা CSR তহবিলের আরও বাস্তবসম্মত ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারব।"
এছাড়া, লুক্রেটিয়া পুয়েন্তেস, ডিরেক্টর অফ নেটওয়ার্ক অ্যান্ড ফান্ডস, স্টার্ট নেটওয়ার্ক, যুক্তরাজ্য, পুল্ড ফান্ড ব্যবস্থা নিয়ে মন্তব্য করেন, "পুল্ড ফান্ড ব্যবস্থা বাস্তব সময়ে সহায়তা প্রদানের জন্য একটি কার্যকর মডেল, যা ইতিমধ্যে প্রমাণিত। ইএসডিওকে ধন্যবাদ, যা স্থানীয়ভাবে উত্থাপিত এই তহবিলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক দাতাদের আস্থা আরও বাড়াবে।"
ইভেন্টটির সভাপতিত্ব করেন ইএসডিওর প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক ড. মুহম্মদ শহীদ উজ জামান। তিনি বলেন, "মানুষের জরুরি চাহিদা মেটাতে স্থানীয় তহবিলকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করার মাধ্যমে আমরা স্থানীয়ীকরণকে এগিয়ে নেওয়ার উপযুক্ত সময়ে পৌঁছেছি।"
এই সাইড ইভেন্টের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে জলবায়ু-প্ররোচিত দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় একটি পুল্ড ফান্ড প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা। ইএসডিও প্রস্তাব করছে, এমএফআইগুলোর কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (CSR) তহবিল থেকে এই পুল্ড ফান্ড গঠন করা হবে, যা বাংলাদেশ সরকারের মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (MRA)-এর নিয়ম মেনে পরিচালিত হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক দাতারা এই তহবিলে অবদান রাখতে পারবেন।
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে একটি। এ কারণে, এখানে এনজিও এবং এমএফআইয়ের শক্তিশালী উপস্থিতি রয়েছে, যা এই পুল্ড ফান্ডের মাধ্যমে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কাছে সহায়তা পৌঁছাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এই আলোচনায় মূল বিষয় ছিল কিভাবে স্থানীয় তহবিল ব্যবস্থাপনাকে আরো কার্যকর করে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য সহায়তা নিশ্চিত করা সম্ভব।