ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ১০ স্কুল শিক্ষার্থী অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্টে হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে ৭ শিক্ষার্থীকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার কাইতলা যজ্ঞেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। অসুস্থ শিক্ষার্থীরা ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। অসুস্থ শিক্ষার্থীরা হলেন সারিকা আক্তার, আশা মনি, চাঁদনী আক্তার, আফরিন আক্তার, ইসরাত জাহান, আশা মনি, সানজিদা আক্তার।
জেলা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের জরুরী বিভাগ জুড়ে এক ভীতিকর পরিস্থিতি। কোনো শিক্ষার্থীর মুখে অক্সিজেন, আবার কোনো শিক্ষার্থী শ্বাসকষ্টে ছটফট করছে। এসময় অসুস্থ শিক্ষার্থীদের সাথে আসা অবিভাবকরা জানান, দুপুরে ক্লাস চলাকালীন সময়ে প্রথমে একজন শিক্ষার্থী শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে তার পরই একে একে ১০জন শিক্ষার্থী শ্বাসকষ্টে সমস্যা নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বিকেলে পরিবারের লোকজন অসুস্থ শিক্ষার্থীদের নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। অবিভাবকদের কেউ কেউ এটিকে জরায়ু ক্যান্সারের টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বলে অভিযোগ করে বলেন, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধের টিকা গ্রহন করে। এখন হঠাৎ করে তারা একসাথে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমাদের ধারণা, প্রতিক্রিয়ায় হয়ে থাকতে পারে।
চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন শিক্ষার্থীরা বলেন, শ্রেণী কক্ষে প্রথমে এক শিক্ষার্থী হঠাৎ শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়। এসময় তাকে আরেক শিক্ষার্থী মুখ দিয়ে শ্বাস দিচ্ছিল। পরে সেও অসুস্থ হয়ে পরে। তারপর একে একে ১০ শিক্ষার্থী শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। পরে অপর সহপাঠীরা ও অভিভাবকরা আমাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা: অনিক দেব বলেন, এটি টিকার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নয়। কারন টিকা দেওয়া হয়েছে প্রায় দু’সপ্তাহ পূর্বে। তিনি এটিকে পেনিক এ্যাটাক বলে উল্লেখ করেছেন। এর কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। ২/১ দিনের মধ্যে তারা সুস্থ হয়ে যাবে।
কাইতলা যজ্ঞেশর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ এনামুল হক বলেন, বিদ্যালয়রের ৯ম শ্রেণীর (ক) শাখায় ক্লাশ চলাকালে হঠাৎ প্রথমে দুই শিক্ষার্থী শাসকষ্টে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসময় তাদেরকে সেবা সুশ্রæষা করার সময় আরো কিছু শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তারমধ্যে দুইজন ছেলে শিক্ষার্থীও রয়েছে। অসুস্থদের প্রথমে চারগাছ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাদেরকে দুইজন শিক্ষক দিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থীরা সুস্থ্য আছে। তবে কি কারণে ঘটনাটি ঘটেছে এ বিষয় নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। কারণ উদঘাটনে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম বিদ্যালয়ে তদন্ত কাজ চালাবে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার হোসেন বলেন, ঘটনাটি জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধ টিকার কারণে হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে জেলা সিভিল সার্জনের সাথে কথা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।