ঢাকা শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
উচ্ছেদ অভিযান নদীতে, ধর্মঘটের ডাক সড়কে!
  • নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • ২০২০-১০-০৬ ২২:৪৫:৫৬

নদীর জায়গা পুনরুদ্ধারে আগস্টের ২৬ তারিখ গাবতলী বেড়িবাঁধ এলাকায় তুরাগ তীরে উচ্ছেদ অভিযান চালায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ। সেসময় নদীর জায়গায় রাখা ট্রাক ও ড্রাম ট্রাক নিলামে বিক্রি করে দেয় অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

ওই ঘটনার জেরে বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব জামিল ও ঢাকা নদী বন্দরের প্রধান, যুগ্মপরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিনকে চাকুরী থেকে অপসারণ ও শাস্তিসহ ৯ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ।

চলতি মাসের ১২ তারিখ সকাল ৬ টা ৪৮ঘন্টার ধর্মঘটের অন্য দফার মধ্যে রয়েছে গাবতলী বেড়িবাঁধ এলাকায় হঠাৎ অভিযান চালিয়ে ১৭টি ট্রাক ও ড্রাম ট্রাক ভাংচুর ও ৪টি মালামালসহ ট্রাক নিলাম করায় ক্ষতিগ্রস্থ মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশে মহাসড়কের পাশে এবং জেলায় জেলায় আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল ও বিশ্রামাগার নির্মাণ করা, দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত কারণে তদন্ত ব্যতিরেকে ৩০২ ধারায় মামলা দায়ের বন্ধ করতে হবে। বিআইডব্লিউটিএর বিভিন্ন ফেরিঘাট ও টার্মিনাল ঘাটে ইজারা দেওয়া বন্ধ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালনা করতে হবে ইত্যাদি।

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র বলছে, নদীর জায়গা পুনরুদ্ধারে গাবতলীর ওই এলাকায় তিনবার অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু বারবার দখল হয়ে যাওয়াও ২৬ আগস্ট পুনরায় অভিযান পরিচালিত হয়। এসময় সেখানে থাকা কয়েকটি অকেজ ট্রাক ভেঙে দেওয়া হয় এবং কয়েকটি সচল ট্রাক নিলামে বিক্রি করে দেয়া হয়। এই ঘটনাকে ইস্যু করে নিজের দখলে থাকা নদীর জায়গা হারানো একটি প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে পরিবহন শ্রমিকরা এই কর্মসূচীর ডাক দিয়েছে। যা বিআইডব্লিউটিএর উচ্ছেদ অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চক্রান্ত বলছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

তবে এবিষয়ে চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরের কাছে মন্তব্য করতে অনীহা প্রকাশ করেছেন বিআইডব্লিউটিএ এর ঢাকা নদীর বন্দরের প্রধান যুগ্ম পরিচালক একে এম আরিফ উদ্দিন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব জামিল বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিধি মোতাবেক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় হয়নি। একটি পক্ষের প্ররোচণায় এই ধর্মঘট ডাক হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক চ্যানেল টোয়েন্টি ফোরকে বলেন, নদীর জায়গায় যানবাহন রাখা বেআইনি। সেখানে আগে মাইকিং করা হয়েছিল। তারা না শোনায় ম্যাজিস্ট্রেট আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছেন। তবে মালিক শ্রমিকদের সাথে বৈঠক হয়েছে। আইনগতভাবে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের আহবায়ক রুস্তম আলী বলেন, দেশ জুড়ে ট্রাক রাখার জন্য বৈধ কোনো স্থান নেই। ফলে বাধ্য হয়ে নদী তীরে রাখতে হয়। পূর্ব ঘোষণা ছাড়া এমন অভিযানের পেছনে যেসব সরকারি কর্মকর্তারা জড়িত, তাদের শাস্তি দাবি করেন তারা।

একই সংগঠনের সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম বলেন, দাবি আদায়ে অনড় থাকবেন তারা। বিশেষ করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ঢাকা নদী বন্দর প্রধানের শাস্তি দাবি করেন তিনি।

এবিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদের। তিনি বলেন, বিধি মেনেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে থাকেন। এখানে কোনো ভুল হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে পারেন। তবে এই বাইরে ঘটনাকে কেউ ইস্যু বানালে তা হবে দুঃখজনক।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এমন কর্মসূচি বাস্তবায়ন হলে যে সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ভয়ভীতি লোভের উর্ধ্বে উঠে রাষ্ট্রের প্রয়োজনে আন্তরিকভাবে কাজ করেন, তারা মনোবল হারাবেন।

 

বঙ্গবন্ধু জন্মেছিল বলেই জন্মেছে এ দেশ -হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি
অপ্রতিরোধ্য বাজার সিন্ডিকেট: মজুতের শাস্তি আটকে আছে বিধিতে
ডাইফ সেবা সপ্তাহ শুরু আজ
সর্বশেষ সংবাদ