ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামলা চালিয়ে অন্তত আরও ৫৩ জন এবং লেবাননে ২১ জনকে হত্যা করেছে।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৫৩ ফিলিস্তিনির মধ্যে অন্তত ৪৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন গাজার উত্তরাঞ্চলে। গত চার সপ্তাহ ধরে উত্তর গাজায় ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে দখলদাররা। এই সময়ে অন্তত এক হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দখলদারদের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪২ হাজার ৯২০ জন নিহত হয়েছেন। যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় এক লাখ মানুষ।এদিকে লেবাননজুড়ে রোববার ইসরায়েলি হামলায় আরও ২১ জন নিহত হয়েছেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ইসরায়েলের হামলায় আড়াই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ যোদ্ধারাও ৭০ জন ইসরায়েলি সেনাকে হত্যার দাবি করেছে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিমনা হামলা চালিয়ে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করে ইসরায়েল। প্রতিশোধ হিসেবে ১ অক্টোবর রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। বলা হয়, হিজবুল্লাহর প্রধান সমর্থক ও অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ ইরান।
এমন উত্তেজনার মধ্যেই গত ১৬ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করে দখলদার ইসরায়েল। এর দুইদিন পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বাসভবনে ড্রোন হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। তবে হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় গত ২২ অক্টোবর হিজবুল্লাহর প্রয়াত প্রধান হাসান নাসরুল্লাহর সম্ভাব্য উত্তরসূরি হাশেম সাফিউদ্দিনকে হত্যা কথা জানায় ইসরায়েল।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মিত্র হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলে নানা সময় ছোট আকারে হামলা করেছে হিজবুল্লাহ। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান। অনেকের ধারণা এর পেছনে ইসরায়েলের হাত রয়েছে। রাইসির মৃত্যুর এক মাস পরই (জুলাই) ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে ‘গুপ্ত হামলা’ চালিয়ে হত্যা করে ইসরায়েল। এরপর থেকেই ইসরায়েলে ধারাবাহিক হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ।