ঢাকা শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ
  • লালমনিরহাট প্রতিনিধি :
  • ২০২৪-১০-২৪ ০৬:১১:১৪

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ঘনেশ্যাম স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৮ শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান শিক্ষক ও আওয়ামীলীগ নেতা মনির উদ্দিনকে গ্রেফতারের দাবীতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার না করলে ফের আন্দোলনের ঘোষনা দিয়েছেন তারা। 

 

বুধবার (২৩ অক্টোবর ) দুপুরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের তুষভান্ডার বাজারে অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়। এতে রাস্তার দুইপাশে দুইশতাধিক যানবহন আটকা পড়ে। প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ঘন্টাখানেক পর অবরোধ তুলে নেয়া হলে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

 

এর আগে গতকাল তিনি ছুটিতে থাকা অবস্থাতেই তাঁর লোকজনসহ লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে ঢুকে  ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামসুল হককে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে চাপ দেন। এতে বাধা দিলে সহকারী শিক্ষক অধর চন্দ্রকে মারধর করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে তাদের বেধড়ক মারধরে ১৮ শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।

 

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনসহ অবৈধভাবে একাধিক নিয়োগ বাণিজ্য, সরকারি টেন্ডার ছাড়া বিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিলেন প্রধান শিক্ষক মনির হোসেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ করতেন। এসব অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় লোকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দেন। সম্প্রতি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন এলাকার লোকজন। এর প্রেক্ষিতে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান ও বাধ্যতামুলক ছুটিতে পাঠানো। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। কিন্তু তিনি এর জবাব না দিয়ে এক মাসের ছুটি নেন। এই অবস্থায় গত মঙ্গলবার তিনি ছুটিতে থাকা অবস্থাতেই তাঁর লোকজনসহ লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে ঢুকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামসুল হককে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে চাপ দেন। এতে বাধা দিলে সহকারী শিক্ষক অধর চন্দ্রকে মারধর করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে তাদের বেধড়ক মারধরে ১৮ শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। তাদের মধ্যে শরিয়ত হাসানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় দক্ষিণ যনেশ্যাম স্কুল অ্যান্ড কলেজের মো. রাসেল ইসলাম নামে এক ছাত্র বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরে প্রধান শিক্ষক ও আওয়ামীলীগ নেতা মনির উদ্দিন কালীগঞ্জ থানায় সহকারী শিক্ষক অধর চন্দ্রকে প্রধান আসামী করে তিনি উল্টো আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এ খবর শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে গেলে বুধবার সকালে এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহা সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থী ওই প্রধান শিক্ষক মনির উদ্দিনকে গ্রেফতারের দাবী তুলেন। পরে উপজেলা প্রশাসনের ৫ জন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।

 

দক্ষিণ ঘনেশ্যাম স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক অধর চন্দ্র বলেন, ক্লাস চলাকালিন প্রধান শিক্ষক মনির উদ্দিন বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। এক লক্ষ টাকা দেয়ার প্রলেভন দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন। কিন্তু স্বাক্ষর না দেয়াতে গালিগালি করলে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। এতে ১৮ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।  

 

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আগামীকাল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের অভিযোগ নিয়ে বসতে চেয়েছি। এছাড়াও   পুরো বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

শ্রমিকদের ধর্মঘটে অচল আশুগঞ্জ নদী বন্দর
ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে  একজনের মৃত্যু
ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ভারতকে সকল সুবিধা দিত হাসিনা:  আলতাফ হোসেন চৌধুরী