ঢাকা মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪
সাবেক আইজিপি ও সাবেক র‍্যাবেব মহাপরিচালক সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা
  • দিনাজপুর প্রতিনিধি:
  • ২০২৪-১০-২৪ ০৬:০৭:৪৭

দিনাজপুরে পুলিশের সাবেক আইজিপি একেএম শহিদুল ইসলাম ও র‍্যাবের সাবেক ডিজি বেনজির আহম্মেদসহ ১৮ জনকে আসামি করে দিনাজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেছেন এক ভুক্তভোগী যুবক আতিউল্লাহ সরকার (২৮)।

 

মামলা করেছেন আতিউল্লাহ সরকার  নামে পার্বতীপুরের এক যুবক। 

 

মামলার বাদি মোঃ আতিউল্লাহ সরকার দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার শেরপুর (তেলিপাড়া) গ্রামের মৃত ফরিজ উদ্দিনের ছেলে ও পার্বতীপুর উপজেলার জাহানাবাদ মন্ডলপাড়া জামে মসজিদের ইমাম।

 

বুধবার (২৩ অক্টোবর ২০২৪) তারিখ দুপুরে দিনাজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মোঃ হুমায়ুন কবিরের আদালতে এই মামলাটি করেন।

 

মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ সালের ৬/(২)/৭/৮/১০ ও দন্ড বিধি আইনের ১৬৪/৩৬৫/৩৬৬ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় এই মামলাটি করেন।

 

বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ৭ দিনের মধ্যে এজাহার হিসাবে গণ্য করার জন্য পার্বতীপুর থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। 

 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর জেলার  গত জুন, ২৩, ২০১৭ তারিখ রাত সাড়ে ৯টায় পার্বতীপুর উপজেলার জাহানাবাদ মন্ডলপাড়া মসজিদে  এশার তারাবির নামাজ আদায় করা কালিন ১৫/১৬ জন আসামী সাদা পোশাকে মসজিদে এসে বাদিকে মসজিদ থেকে জোর করে কালো কাপড় চোখে বেঁধে তাদের গাড়িতে করে নিয়ে যায় । কালো রঙের গাড়িতে তুলেই হাতে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে দেয় এবং মাথা মুখমন্ডলসহ কালো টুপিতে আবৃত পরে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

 

গাড়িতেই শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। আনুমানিক প্রায় ৬ ঘন্টা গাড়ি চালিয়ে নেওয়ার পর বাদির চোখ বাধা অবস্থায় হাতে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে অপরিচিত ও অজানা আয়না ঘর নামীয় ঘরে বন্দী করে রাখে। এখানে অবস্থানকালে বাদিকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন ও ইলেকট্রিক শকড দেয়। পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতন করা হয়। ৬ মাসের অধিক এখানে থাকার পর গত ৩১ আগস্ট ২০১৮ তারিখে দিবাগত রাতে আড়াইটায়  আয়না ঘর হতে বের করে রাজশাহী রাজপাড়া থানায় নিয়ে পুলিশের নিকট আতিউল্লাহ সরকারকে হস্তান্তর করে। পরে পুলিশ বাদিকে আদালতে নেওয়ার পর জানতে পারেন র‍্যাব-৫ এর এসআই সোহেল রানা বাদী হয়ে সন্ত্রাসদমন আইনে একটি মামলা করে। পরে আদালতের মাধ্যমে বাদিকে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়। 


মামলায় প্রায় চার বছর কারাগারে আটক থাকার পর গত ১৪- মার্চ-২০২২ তারিখ আদালতের মাধ্যমে নির্দোষ প্রমাণিত হন ও কারাগার হতে মক্তি পান। এতে বাদীর শিক্ষা জীবন ধ্বংস হয়, শারীরিক ও মানসিক বিপর্যয় ঘটে। এতে বাদির প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন বাদি।  

 

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- স্থানীয় আনিসুজ্জামান সরকার আনিস (৫০), আনোয়ার হোসেন (৫৩), জামিল হোসেন (৪৮) লুৎফুর রহমান (৬৫) , তহুবার রহমান (৪৫),  রাজশাহী র‍্যাব ৫, ন্যাশনাল এসপি নূরে আলম, রাজশাহী র‍্যাব ৫  এডিশনাল এস,পি আনোয়ার হোসেন, রাজশাহী র‍্যাব ৫ এস,আই সোহেল রানা, রাজশাহী র‍্যাব ৫, পুলিশ পরিদর্শক আশরাফ উল আলম, রাজশাহী র‍্যাব ৫, হাবিলদার মহসিন আলী। রাজশাহী র‍্যাব ৫ ল্যান্স নায়ক মাহবুবুর রহমান। রাজশাহী  র‍্যাব ৫ কনস্টেবল হুমায়ুন কবির,  র‍্যাব ৫, বিল্লাল হোসেন, রাজশাহী র‍্যাব ৫, এসআই আনিসুর রহমান। দিনাজপুর পার্বতীপুর ভবানীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র এএসআই সোহেল রানা,   ও রাজশাহী মহানগর রাজপাড়া এসআই মোঃ মতিউর রহমান।

 

মামলার আইনজীবী মাহবুবুর রহমান ভুট্টু বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও আমার এই মামলার বাদি মামলা করতে পেরেছে। আদালত পার্বতীপুর থানাকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলার তদন্ত করার জন্য আমরা বিভাগীয় জুডিশিয়ারি তদন্ত চেয়েছি। আশা করছি আমার মামলার বাদী তার সাথে যে অন্যায় করা হয়েছে। বিনা দোষে তাকে আটক করা হয়েছে এবং তাকে বিভিন্ন সময় মেরে ফেলার হুমকি প্রদর্শন করা হয়েছে। এবং দীর্ঘদিন পরিবারের সাথে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল। আশা করছি এই মামলার বিচারক সঠিক তদন্ত-পূর্বক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং দেশ থেকে যেন আর কখনো কাউকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিনা দোষে গুম না করা হয়।

পুলিশের অসাদাচরনের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
 শিশু রুকাইয়া রহমান আনহাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন
নীলফামারীর চিলাহাটিতে পেকিন হাঁস  পালন বিষয়ক খামার দিবস অনুষ্ঠিত