ঢাকা শনিবার, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪
নজরুলের উপন্যাসে জীবনাভিজ্ঞতা ও বিপ্লববাদ
  • ড. রকিবুল হাসান
  • ২০২০-১০-০৩ ০৩:০৫:০৬

ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষের নানামাত্রিক আন্দোলন ও ইংরেজদের দুঃশাসনের সময়ে অনেক লেখকের রক্তফণা হয়ে ফুটে উঠেছিল। নজরুল তাঁদের মধ্যে বিশেষভাবে অন্যতম ও প্রধান। কবি হিসেবে নজরুল অবিশ্বাস্য খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন।

ঔপন্যাসিক হিসেবে তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করতে না পারলেও তাঁর উপন্যাসগুলোর মধ্যে ব্যক্তি-নজরুল, পারিবারিক জীবন, অভাব-অনটন, দুঃখ-দারিদ্র, প্রেম-প্রণয়, রাজনৈতিক চেতনা ও দেশপ্রেমের যে চিত্র আছে, তার মূল্য অনেক। ব্যক্তি নজরুলকে জানার জন্যে তাঁর উপন্যাস গুরুত্বপূর্ণ।

নজরুলের উপন্যাসের মান যে পর্যায়ের হোক না কেন তাঁর অবিসংবাদিত কবিখ্যাতির কারণে উপন্যাসগুলো বহুল পঠিত। তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘বাঁধনহারা’, দ্বিতীয় উপন্যাস ‘মৃত্যুক্ষুধা’ ও শেষ উপন্যাস ‘কুহেলিকা’। বাঁধনহারা মূলত পত্রপোন্যাস। এই উপন্যাসে নজরুলের সৈনিক জীবনের অভিজ্ঞতা যেমন স্থান পেয়েছে, তেমনি পারিবারিক পারিবারিক, সামাজিক, প্রেম-প্রণয়, অনুযোগ-অভিযোগ এবং আদর্শের কথাও রয়েছে। এই উপন্যাসের নায়ক নূরুল হুদা চরিত্রটি মূলত নজরুলের বায়োগ্রাফি। সংসারের বন্ধন ছিন্ন করে নজরুল যে একদিন পরাধীন দেশের মুক্তির জন্য, দেশের সাধারণ মানুষের জন্য জীবন দিয়ে তাদের জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করার সংগ্রামে অবতীর্ণ হবে, তার আভাস নুরূল হুদা চরিত্রে পাওয়া যায়, যা নজরুল চরিত্রের প্রতিচ্ছবি।

‘মৃত্যুক্ষুধা’ উপন্যাসে দারিদ্রের ভয়ঙ্কর রূপ প্রতিফলিত হয়েছে। ক্ষুধা-দারিদ্র মানুষকে কিভাবে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে, ধর্মবিশ্বাস ও জন্মার্জিত সংস্কার কিভাবে গুরুত্বহীন ও শিথিল হয়ে যায়, তা এ উপন্যাসের মূল বিষয়। এই উপন্যাস লেখার সময় নজরুলের জীবনযাপন ছিল অভাব-অনটনে জর্জরিত। জীবন চালানোই তখন কঠিন হয়ে উঠেছিল, এই বাস্তবতাই ‘মৃত্যুক্ষুধা’তে স্থান পেয়েছে। তাঁর জীবনের সে সময়ের কঠিন অভিজ্ঞতা যে কত বহু বিস্তৃত ও রূঢ় কঠিন ছিল, তা এ উপন্যাসে উপস্থিত। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, তাঁর বহু বিখ্যাত ‘দারিদ্র’ কবিতাটিও এ সময়ে রচিত।

‘কুহেলিকা’ তাঁর তৃতীয় উপন্যাস। এ উপন্যাসটি পাঠকের সবচেয়ে বেশি আগ্রহের বিষয়। এ উপন্যাসটি বিপ্লবী উপন্যাস হিসেবে পরিচিত। কুহেলিকার প্রমত্ত’র চরিত্রের সঙ্গে পথের দাবির সব্যসাচীর চরিত্রের মিল স্পষ্ট। যদিও অনেকে মনে করেন নজরুল প্রমত্ত চরিত্র সৃষ্টি করেছেন তাঁর স্কুল শিক্ষক নিবারণ ঘটকের চরিত্র অবলম্বনে। এর পক্ষে অনেক যুক্তিও রয়েছে। কিন্তু সেই অগ্নিকালের বাস্তবতা সম্মুখে রেখে নজরুলের বিপ্লবীসত্ত্বা ও তাঁর বিপ্লবী অন্যান্য রচনা বিচার করে ‘কুহেলিকা’ চরিত্র বিচারে অগ্রসর হলে রহস্যের দুয়ার ঠেলে প্রকৃত সত্যকে আর অনেকখানি অনুমান করা সম্ভব হয়।

পরাধীন ভারতের মুক্তির জন্যে যে সব বিপ্লবীরা জীবনবাজি রেখে সংগ্রাম করেছেন, তাঁদের প্রতি নজরুলের অপরিসীম শ্রদ্ধা ও অকুণ্ঠ সমর্থন ছিল। তিনি নিজেও ভারতমুক্তির জন্যে অগ্নিলেখনী ধারণ করেছিলেন। সে জন্য তাঁকে জেল-জুলুম নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।

কুহেলিকায় প্রমত্ত’র নেতা বজ্রপাণি যে চরিত্রটি পরোক্ষভাবে উপন্যাসে উপস্থিত, তার মধ্যে বাঘা যতীনের চরিত্রটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যদিও আরো কিছু চরিত্রের মধ্যে বাঘা যতীনের বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের পরিচয় ফুটে উঠেছে। নজরুলের বিপ্লবী জীবনে বাঘা যতীনের প্রভাব যে স্পষ্ট তা তাঁর কবিতাতেও লক্ষণীয়। নজরুলের প্রলয়-শিখা কাব্যগ্রন্থে ‘নব-ভারতের হল্দিঘাট’ কবিতাটি বাঘা যতীনের বীরত্বাগাথাকে কেন্দ্র করে তিনি রচনা করেছিলেন। ব্রিটিশ-বাহিনীর সঙ্গে বীরত্বপূর্ণ এবং প্রথম সম্মুখযুদ্ধ করে বাঘা যতীনের আত্মাহুতি দানের মাধ্যমে ভারত-স্বাধীনতা যে মহাকাব্য রচিত হয়েছিল, তার ভেতর ফুটে উঠেছিল নতুন এক ভারতের স্বপ্ন-বীজ, যার অঙ্কুরোদগম ঘটে বালেশ্বরের বুড়িবালাম নদীর তীরে।

কাজী নজরুল ইসলামের মনে বিপ্লবী বাঘা যতীনের বীরত্বপূর্ণ আত্মাহুতি ব্যাপক প্রভাব ফেলে। নজরুল ইসলাম তাঁর ধুমকেতু পত্রিকায় অষ্টম সংখ্যায় বাঘা যতীনের ছবি বড় করে ছেপেছিলেন। একটি প্রবন্ধে বাঘা যতীন সম্পর্কে তিনি লেখেন ‘বাঙলার বিপ্লব-যুগের প্রথম সেনা নায়ক পুরুষ সিংহ, যতীন্দ্রনাথ’। ১২তম সংখ্যায় তিনি অন্যান্য বিপ্লবীদের ছবির সাথে বাঘা যতীনের ছবি আবারও ছাপেন। বাঘা যতীনের প্রতি নজরুলের যে কী অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা ছিল, এসব তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

এ কারণে নজরুল তাঁর উপন্যাসেও বাঘা যতীনকে গ্রহণ করে থাকতে পারেন এটি খুবই স্বাভাবিক। আরো একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে যাবার আগে নজরুল বিপ্লববাদী যুগান্তর দলের যোগাযোগে এসেছিলেন তাঁর শিক্ষক নিবারণ ঘটকের সান্নিধ্য লাভ করে। যুগান্তর দলের প্রধান নেতা ছিলেন বিপ্লবী বাঘা যতীন। তিনি ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা ছোট ছোট বিপ্লবী দলগুলোকে একত্রিত করে যুগান্তর দল গঠন করে তার নেতৃত্ব গ্রহণ করেছিলেন। যুগান্তর নামে একটি পত্রিকা ছিল। সেই পত্রিকাটি ছিল বিপ্লবীদের কর্মকাণ্ডের মূলকেন্দ্র। ‘যুগান্তর নামে দৈনিক সংবাদপত্রে স্বাধীনতার মর্মবাণী প্রসারের ব্যবস্থা করেন স্বামী বিবেকান্দের অনুজ ভূপেন্দ্রনাথ দত্তের সম্পাদনায়। পত্রিকাটির নামকরণেই যুগান্তর দল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এর আগে অনুশীলন সমিতির মাধ্যমে বিপ্লবীরা তাঁদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন।

প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, অনুশীলন সমিতি অবৈধ ঘোষণা করার সময় যতীন ও নরেন যুগান্তরে কাজ করতেন। আলিপুর মামলার সময় যতীন-নরেন যুগান্তর গ্রুপের পরিচালকরূপে পরিচিত হন। এই পরিচয় হতেই পরবর্তীকালে যুগান্তর সমিতি অনুশীলন সমিতির উত্তরাধীকার হয়। এর একটি বড় কারণ ছিল সে সময় বিপ্লবী নেতারা বিশেষ করে বাঘা যতীন ও এম.এন. রায় অনুভব করেন বিপ্লবী শক্তিকে একক নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ করতে হবে।

বিপ্লবীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে সেই শক্তিকে গোটা ভারতে সম্প্রসারিত করতে হবে। আত্মত্যাগী বিশ্বস্ত বিপ্লবী তৈরি করতে হবে এবং বিপ্লবের মূল উদ্দেশ্যের কথা ভারতবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। এই কঠিন দায়িত্বটি গ্রহণ করেন বাঘা যতীন। আর বাঘা যতীনের ডান হাত হিসেবে তাঁর পাশে দাঁড়ান এম.এন. রায়। এরা জার্মানি থেকে অস্ত্র এনে ভারত স্বাধীন করার পরিকল্পনা করেন। সে মোতাবেক কাজও করেন। জার্মান গিয়ে ফলপ্রসু আলোচনা করেছিলেন।

জার্মান থেকে আসা ম্যাভেরিক জাহাজ-ভর্তি অস্ত্রের ব্যাপারটি ফাস হয়ে যাওয়ায় বাঘা যতীনরা অস্ত্র খালাস করতে পারেননি। খালাসের আগেই অপরিকল্পিত এক সম্মুখযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয় বাঘা যতীনদের। সে যুদ্ধে গুলিবিদ্ধ বাঘা যতীন এক দিন (৯ সেপ্টেম্বর গুলিবিদ্ধ হন, মৃত্যুবরণ করেন ১০ সেপ্টেম্বর ১৯১৭ ) পরেই মৃত্যুবরণ করেন। নজরুল কুহেলিকাতে লিখেছেন, ‘বিপ্লবীদের সেই ভীষণ জার্মান-ষড়যন্ত্র প্রকাশ হইয়া পড়িয়াছে। সারা দেশ ব্যাপিয়া পুলিশ জাল কুহেলিকাতে জয়তী চরিত্রটি যখন চোখের সামনে উজ্জ্বল আলোর মতো জ্বলে ওঠে, তখন বাঘা যতীনের দিদি বিনোদ বালার ছবিটিও চোখের সামনে চলে আসে। এ যেন বিনোদ বালার স্বরূপে বিকশিত জয়তী চরিত্রটি। বাঘা যতীনের বাঘা যতীন হয়ে-ওঠার ক্ষেত্রে বিনোদবালার ভূমিকা ছিল অবিশ্বাস্যরকম। তরুণ বিপ্লবীদের কাছে বিনোদ বালা ছিলেন পরম শ্রদ্ধা, আশ্রয় ও সাহসের জায়গা। জয়তী চরিত্রটি তৈরির ক্ষেত্রে নজরুলের মনে অবচেতন বা সচেতনভাবে বিনোদ বালা প্রভাব রাখতে পারে।

বজ্রপাণি ও প্রমত্ত দুটি চরিত্র বাঘা যতীন ও এম.এন. রায়-এর চরিত্র অবলম্বনে সৃষ্টি, তা এখন অনুমেয়। নজরুল বাঘা যতীনের বিপ্লবী কর্মকাণ্ড দ্বারা যে প্রভাবিত হয়েছিলেন তা তাঁর সাহিত্যে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। ভারতমাতাকে মুক্ত করার জন্য বাঘা যতীন ও এম.এন. রায় যে সশস্ত্র বিপ্লবী প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন, কুহেলিকার বজ্রপাণি এবং প্রমত্ত’র ভেতর তা লক্ষণীয়।

বজ্রপাণি আর প্রমত্তর সম্পর্ক ও বিপ্লবী কর্মপন্থা ছিল বাঘা যতীন আর নরেনের অনুরূপ। প্রমত্ত  বিপ্লবী কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও আন্দোলনকে সংগঠিত করার লক্ষে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরণের  লেবাস গ্রহণ করতেন। অসংখ্য ভাষাতেও কথা বলতে পারতেন। অন্য দেশে গিয়েও সেদেশের মানুষের মতো হুবহু নিজেকে তৈরি করে নিতে পারতেন এবং সেদেশের ভাষা তাদের মতো করে বলতে পারতেন। সে কারণে তিনি যে ভিনদেশি এটা বোঝা মুশকিল ছিল। তাঁকে গ্রেফতারের জন্যে বিভিন্ন দেশে নানাভাবে চেষ্টা করা সত্ত্বেও তাঁর বহুরূপী রূপ ধারণের কারণে বারবার আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর চোখ এড়িয়ে নিজের বিপ্লবী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পেরেছিলেন।

যেটি শরৎচন্দ্রের সব্যসাচী এবং নজরুলের প্রমত্তর ভেতর লক্ষণীয়। অনেকে এক্ষেত্রে নিবারণ ঘটকের পক্ষে। কিন্ত বাস্তবতার প্রেক্ষিতে প্রমত্তর চরিত্র অঙ্কনে চরিত্রকাঠামো-বিন্যাস-ভাষাদর্শী-বহুরূপ-বহু নামধারী ও রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন দেশ পরিভ্রমণ এসব বিচারে এম. এন. রায়ের চরিত্রই প্রমত্ত চরিত্র নির্মাণে প্রভাব রেখেছে।

কুহেলিকা উপন্যাসে নিবারণ ঘটকের ছায়ায় প্রমত্ত চরিত্রটি অঙ্কিত বলে অনেক গবেষকের অভিমত রয়েছে। নজরুলের শিক্ষক হিসেবে তাঁর মনে নিবারণ ঘটক প্রভাব ফেলবেন এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রমত্ত চরিত্রটি যেভাবে অঙ্কিত হয়েছে, বাস্তব প্রেক্ষিতে সেটি কতোটা গ্রহণযোগ্য সে প্রশ্ন একেবারে উড়িয়ে দেয়া কঠিন। জার্মান ষড়যন্ত্রের যে কথা বলা হয়েছে, সেখানেতো নিবারণ ঘটক নেই। চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ করলে সেটি তো এম.এন. রায়ের চরিত্র অবলম্বনে নির্মিত বলেই ধারণা হয়।

এ কথা বাঘা যতীনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বাঘা যতীন তিন পুত্র এবং এক কন্যা সন্তানের জনক ছিলেন। তিনি স্ত্রী-সন্তান-সংসারকে দেশের স্বার্থে সবসময়ই ক্ষুদ্রস্বার্থ হিসেবে বিবেচনা করেছেন। তিনি বিপ্লবের নামে মরণযুদ্ধকেই বেছে নিয়েছিলেন, তাঁকে অনেকেই সাবধান করে দিয়ে বলেছিলেন, বৃহৎ স্বার্থে ক্ষুদ্রতর স্বার্থ ত্যাগ করতে হয়। অনুমান করা বোধ হয় অযৌক্তিক হবে না, বাঘা যতীনই নজরুলের বজ্রপাণি, আর বজ্রপাণির শিষ্য প্রমত্তই হচ্ছে এম.এন. রায়।

আরও একটি প্রসঙ্গ উল্লেখ করা যেতে পারে, পিণাকীর ফাঁসির ঠিক আগ-মুহূর্তে ম্যাজিস্ট্রেট তৎক্ষণাৎ মাটির টুপি খুলে তাকে যে অভিবাদন জানিয়ে বলেছিল, ‘আমি তোমায় প্রণাম করি বালক! মৃত্যু-মঞ্চই তোমার মতো বীরের মৃত্যুঞ্জয়ী সম্মান। তোমার মত বীরের বন্দনা করবার সম্মান জীবনের নাই।’ বাস্তবে তা পরিলক্ষিত হয় বাঘা যতীনের ক্ষেত্রে। বাঘা যতীনের মৃত্যুর আগ-মুহূর্তে চার্লস টেগার্ট তাঁকে বিচলিত কণ্ঠে বলেছিল, Tell me Mukherjee, What can I do for you? বাঘা যতীনের মৃত্যুর পর চার্লস টেগার্ট মাথার ক্যাপ খুলে তাঁকে স্যালুট করে বলেছিলেন, ‘I have high regard for him. I have met the bravest Indian, but-I had to perform my duty. বাঘা যতীনের বিপ্লব-পন্থা ও মৃত্যু এ উপন্যাসে নানাভাবে পরিগৃহিত হয়েছে তা অনুমান করা যেতে পারে। অগ্নিযুগের মহানায়কদের প্রতি নজরুলের প্রশ্নাতীত সহানুভূতি ও সমর্থন ছিল। তাঁর উপন্যাস-গল্প-কবিতা-প্রবন্ধে লক্ষণীয়।

কুহেলিকা উপন্যাসে নজরুলের ভাবুকমন যে বিপ্লবপন্থায় প্ররোচিত হয়েছে তার পরিণাম উপর্যুক্ত অংশে অনুরুদ্ধ হয়েছে। বাঘা যতীন ও এম.এন. রায়ের ‘আইকন-তত্ত্ব’ ক্রমশ বিচ্ছুরিত হয়েছে নজরুলের বিচিত্র চরিত্রের আভ্যন্তরিক ও আন্তর্জালিক আবহে। সেক্ষেত্রে কুহেলিকা উপন্যাসের বিধৃত বিপ্লবপন্থা অর্জন করে নতুন মাত্রা। একই সঙ্গে বিপ্লবপন্থার পরিণামেও কুহেলিকা হয়ে ওঠে নবতর শিল্পাঙ্গিক।

লেখক: সাহিত্যিক ও গবেষক এবং বিভাগীয় প্রধান, বাংলা বিভাগ, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের প্রয়াণ দিবস পালন করলো 'স্বজন'
লেখক ঐক্য'র আয়োজনে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন
৩ দিনব্যাপি চর নিকেতন বৈশাখি সাহিত্য উৎসব অনুষ্ঠিত