দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে দলের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন কয়েকজন নেতাকর্মী।
শনিবার সকাল এগারোটায় উপজেলা চত্ত্বর সংলগ্ন রাবেয়া কমিউনিটি সেন্টারে বর্ধিত সভাস্থলে এ ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষের নেতা কর্মীদের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
দলীয় নেতাকর্মীদের কয়েকজন জানায়, বর্ধিত সভা ঘিরে সকাল থেকে উপজেলা চত্ত্বর ও শহরের নিমতলা মোড় এলাকায় জড়ো থাকেন নেতাকর্মীরা। উপজেলা বিএনপির দুটি গ্রুপের একটির নেতৃত্বে আছেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতি। অপর গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাজুল ইসলাম।
সকাল সাড়ে দশটায় মতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা নিমতলা মোড় থেকে একটি মিছিল নিয়ে বর্ধিত সভাস্থলে আসছিলেন। এসময় আগে থেকেই সভাস্থলে অবস্থান করছিলেন শাহাজুল ইসলামের সমর্থকরা। এসময় দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা পরস্পরবিরোধী শ্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যাসয়ে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটির শুরু হয়। পরে এটি রুপ নেয় ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতিতে।
এদিকে বর্ধিত সভা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে উপস্থিত হয়েছেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক। উপস্থিত আছেন কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এজেডএম রেজওয়ানুল হক, জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচি, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোকাররম হোসেন প্রমুখ।
জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘ সময় পরে কেন্দ্রিয় নেতাদের উপস্থিতিতে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেক কষ্ট ও ক্ষোভ জমা আছে। আজকে সভাকে কেন্দ্র করে একটু আধটু হই হুল্লোড় হয়েছে। তবে কোন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। বিএনপি একটি সুশৃঙ্খল দল। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সভা পরিচালনা করছি।
উল্লেখ থাকে যে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি খুরশিদ আলম মতির ছোট মাহমুদ আলম লিটন পৌর নির্বাচনে প্রতিদন্দিতা করায়, ওই সময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদ থেকে খুরশিদ আলম মতিকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
খুরশিদ আলম ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানও ছিলেন। তখন বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে খুরশিদ আলম মতিকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। পরে ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে বহাল করা হয়। কিন্তু তার তিনদিন পর ১০ অক্টোবর তার সভাপতি পদ স্থগিত করে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ বহাল করা হয়। সবশেষে বিগত জেলা বিএনপির কাউন্সিলে তাকে জেলা বিএনপির উপদেষ্টা করা হয়। এরপর থেকে উপজেলা বিএনপি দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পৃথকভাবে কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছিলেন। এই বিভাজনে দল দুই ভাগে বিভক্ত হওয়ার, দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে এ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। শেষ খবর পাওয়া প্রযন্ত বর্ধিত সভা চলছে। তবে সভার বাহিরে নেতা-কর্মিদর মধ্যে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সভা শেষে আবারো সংঘর্ষ ঘটনার আশঙ্কা করছেন প্রত্যক্ষ দর্শিরা।