নারায়ণগঞ্জেের রূপগঞ্জে একটি খেলার মাঠ দখল করে ডাইং কারখানা গড়ে তুলেছে প্রভাবশালীরা। ওই কারথানার কেমিক্যালযুক্ত পানি ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বিসিক জামদানি পল্লীসহ আশেপাশের এলাকায়। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরেছে এলাকার মানুষ৷ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দুদকের শরণাপন্ন হয়েছেন স্থানীয় আলী আকবর মিয়া নামে এক ব্যক্তি । উপজেলার তারাবো পৌরসভার নোয়াপাড়া বিসিক জামদানী পল্লীর পাশের খেলার মাঠ দখলের অভিযোগ উঠেছে।
আলী আকবর মিয়া জানান, বিসির জামদানি পল্লীর পূর্বপাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৫টি আলাদা দাগে ৩.৬৭ একর সম্পত্তি রয়েছে। ১৯৯৬ সালে তার জন্য পিতা হাজী আলাউদ্দিন পানি উন্নয়ন বোর্ড নরসিংদীর অধীন থেকে ৫ বছরের জন্য লীজ নিয়ে ও রূপগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে লিখিত অনুমতি নিয়ে সমবায় ভিত্তিতে মাছের খামার গড়ে তুলেন। যাতে স্থানীয় শতাধিক পরিবারের অংশগ্রহন ছিল। পরবর্তিতে ২০১১ সাল অবধি পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে তিনবার লীজ নবায়ন করে সমবায় মাছের খামার অব্যাহত রাখেন। ২০১১ সালে মেয়াদ শেষ হবার বহু আগে থেকেই তিনি লীজ নবায়নের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করলেও টালবাহানা শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পরে বাধ্য হয়ে তিনি আলাদতের শরণাপন্ন হন। পরে রূপগঞ্জের সাবেক এমপি ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী নালিশা জমিতে একটি খেলার মাঠ ও জামদানী পল্লীর পানি নিস্কাষন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব করলে হাজী আলাউদ্দিন মামলা উঠিয়ে নেয়। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জলাধার ভরাট করে খেলার মাঠ গড়ে তোলা হয়। গতবছর হাজী আলাউদ্দীন মারা গেলে তৎকালিন এমপির সহায়তায় ইউনিফিল( টু ফ্রেবিক্স লিমিটেড) নামে ওই খেলার মাঠে একটি ড্রাইং নিটিং ও ফিনিসিং কারখানা গড়ে তোলা হয়। সে কারখানার ক্যামিকেল মিশ্রিত পানিও ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে লোকালয়ে। যে কারনে সে এলাকার মানুষ পরেছেন মারত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।
এ ব্যাপারে তারাবো পৌরসভার সাবেক মেয়র শফিকুল চৌধুরী এলাকাবাসীর পক্ষে জলাধার ভরাট ও সরকারি সম্পত্তিতে কারখানা স্থাপনে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাননি। তাই গত ২৮ সেপ্টেম্বর আলী আকবর বাদী হয়ে দুদক বরাবর আবেদন করেন।
দখলের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউনিফিল( টু ফ্রেবিক্স লিমিটেড) এর জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ জামান বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান শতভাগ রপ্তানীমুখী। প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে আলী আকবর চক্রান্ত করছে। আমার জমি পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে লীজ নেয়া, কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে সেটা পানি উন্নয়ন বোর্ড দেখবে। সে ( আলী আকবর) কে অভিযোগ করার?
ক্যামিকেল মিশ্রিত পানি লোকালয়ে প্রবেশের ব্যাপারে তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠান গ্রীন আর্থ, জনস্বাস্থ্য ক্ষতির কোন সম্ভাবনাই নেই।
অপরদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নরসিংদী অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, তিনি দুদক থেকে এ ব্যাপারে একটি নোটিশ পেয়েছেন৷ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ পাশাপাশি কোন প্রতিষ্ঠানকে তাদের জমি লিজ দেয়া হয়নি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে স্থাপনা নির্মানেরও কোন বিধান নেই বলে জানান ওই কর্মকর্তা। এই ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।