আক্কাস আলী। দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের নিবাহী কমিটির দাপটের সদস্য এবং বিরামপুর পৌর সভার সাবেক বিতর্কিত পৌর মেয়র। তার বিরুদ্ধে পদে পদে জালিয়াতি, অনিয়ম আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে এলাকাবাসী বিক্ষোভ, আদালতে মামলা, দুদকে অভিযোগ দিয়েছে।
অভিযোগ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ফ্যাসিবাদী আওয়ামীলীগের দোসর বিরামপুর থানায় হামালা ও অগ্নি সংযেগ মামলার আসামী আক্কাস আলী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি হাকিমপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কলেজের ১৬ জন সিনিয়ন শিক্ষককে ডিঙিয়ে ক্ষমতাসীন দলের লোক হওয়ায় সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ বাগিয়ে নেন।
সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ থাকা অবস্থায় সম্পূর্ণ অবৈধভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি চাকুরির তথ্য গোপন করে ২০২৩ সালে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য হন। হাকিমপুর কলেজটি ২০১৮ সালে সরকারি হয়। শুধু তাই নয় গত ২০২১ সালে বিরামপুর পৌরসভা নির্বাচনে তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পান। সেই সময় দলীয় মনোনয়ন নেবার সময় দলের কাছে তিনি সরকারি চাকুরির তথ্য গোপন করেন।
মনোনয়ন পাবার পরও সরকারি চাকুরির তথ্য গোপন করে নির্বাচন কমিশনে হলফনামায় পেশা হিসেবে ব্যবসা উল্লেখ করেন। তিনি নির্বাচিত হলে একই সাথে সরকারি চাকুরি এবং পৌর মেয়রের দায়িত্ব কিভাবে পালন করছেন তা নিয়ে অভিযোগ হলে তৎকালিন হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বর্তমান দিনাজপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. নূর এ আলম ২০২১ সালে ৭ জুন বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনার, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড দিনাজপুর, মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে অবহিত করেন।
এদিকে গত ২৩ সেপ্টেম্বর আক্কাস আলীর আপন ভাতিজা মাসুদ পারভেজ এর লিখিত অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায় যে, আক্কাস আলী অবৈধভাবে মেয়র নির্বাচিত হবার পর নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম ডাকুয়ার সহযোগিতায়, পৌরসভায় ব্যপক অনিয়ম দুর্নীতি ভূয়া প্রকল্পের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
বিরামপুর পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজগুলো নিজের ছোট ভাই আব্দুর রাজ্জাক এবং বন্ধু এরশাদুর রহমান ছাড়া কোন ঠিকাদারকে করতে দিতো না। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের দুই কোটি টাকার সোলার প্রজেক্টের একটি কাজের টেন্ডার নিম্ন দরদাতাকে না দিয়ে মূল্যায়ন কমিটির রিপোর্ট ছাড়াই মোটা টাকার বিনিময়ে পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে করিয়েছে। পৌরসভার আয়ের বড় উৎস হাট বাজার। বিরামপুর পৌরসভার হাট বাজারগুলো ২ কোটি টাকার উপরে ইজারা হতো। কিন্তু আক্কাস আলী মোটা টাকার বিনিময়ে গোপন টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকারকে বিপুল পরিমান রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত করে নাম মাত্র কয়েক লাখ টাকায় তার পছন্দের লোককে ইজারা দিয়ে দিতো।
মাষ্টররোলের কর্মচারীদের ভূয়া বিল দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। বাসা বাড়ির হোল্ডিং নাম্বার বাবাদ অর্থ, অটো চার্জারদের কাছ থেকে লাইসেন্সের নামে আদায়কৃত অর্থ, জন্মনিবন্ধন বাবদ অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা না করে পুরোটাই আত্মসাৎ করেছে আক্কাস আলী। এসব অনিয়ম দুর্নীতির অর্থে ঢাকার চন্দ্রিমায় জমি কিনে ফ্ল্যাট করেছেন আক্কাস আলী।
এসব ঘটনায় আক্কাস আলীর বিচার চেয়ে গত রোববার বিরামপুর পৌরসভার সামনে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল শেষে মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে বক্তরা দ্রুত আক্কাস আলীর সকল অনিয়ম দুর্নীতির গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবী জানায়।
সাবেক পৌর মেয়র আক্কাস আলীর ব্যবহৃত ( ০১৭১২০৩৭৫০০) (০১৭১৩৭৬৯৯৭১) ব্যাক্তিগত দুটি মোবাইল নম্বরে ফোন করে তার বক্তব্য নেওয়ার চেষ্ঠা করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইর নম্বর দুটি বন্ধ পাওয়া গেছে ।