ঢাকা শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
হত্যা মামলায় গ্রেফতার জুলফিকার
  • দিনাজপুর প্রতিনিধি:
  • ২০২৪-০৯-২৩ ০৪:৪২:০৫

দিনাজপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কলেজ ছাত্র রবিউল ইসলাম রাহুল (১৭) কে হত্যা ও ছাত্র জনতা মিছিলের উপর হামলা মামলায় এজাহার নামীয় জুলফিকার আলী( ৪৫) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আজ সোমবার সশস্ত্র সন্ত্রাসী জুলফিকার আলী কে গ্রেফতারের সংবাদ নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ ফরিদ হোসেন। 

আটক জুলফিকার আলী দিনাজপুর পৌর  সভার গোলাপবাগ (লেবুর মোড়) এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে।


দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায়  মামলার নাম্বার ১১, তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ  ইন্সপেক্টর শাহীন জামান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত শনিবার বিকালের দিকে আত্মগোপনে থাকা জুলফিকার আলীকে  দিনাজপুর শহরের সুইহারি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে হত্যা সহ চাঁদাবাজি মামলা রয়েছে।

আসামি জুলফিকার আলী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় প্রকাশ্যে ছাত্র জনতার মিছিলের উপর হামলার ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত করে ঘটনা সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হিসেবে দীর্ঘদিন প্রভাব বিস্তার খাটিয়ে রাতারাতি আঙ্গুর ফুলে কলা গাছ হয়েছে।

জুলফিকার আলী একসময় দিনাজপুর বিদ্যুৎ অফিসের ইলেকট্রিক মিটার রাইটার হিসেবে কাজ করতো। একসময় স্থানীয় সংসদ ইকবালুর রহিমের ছত্রছায়ায় দিনাজপুর জেলায় যতগুলো ইলেকট্রিক্যাল মিটার ও ট্রান্সফর্মার গ্রাহকদের নিকট দেওয়া হতো। সে প্রতি মিটার বা ট্রান্সফর্মার বাবদ ৫ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত গ্রহণ করত। এই অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করায় সে এখন  ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার মালিক হয়েছে। অবৈধভাবে টাকা উপার্জন করার একটি অংশ সাবেক জাতীয় সংসদের  হুইপ ইকবালুর রহিমের নিকট পাঠিয়ে দিতে বলেছে দাবি করছে।

দিনাজপুর জেলার বিদ্যুতের মিটার গ্রাহকদের নিকট থেকে তাকে মিটার প্রতি ৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত প্রদান করতে হতো। যার মধ্য থেকে এক হাজার পাঁচশ টাকা সাবেক জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের নিকট পাঠিয়ে দিত আর বাকি সাড়ে তিন হাজার টাকা তিনি নিজের কাছে রেখে দিয়ে দিত। এখন সে কোটি কোটি টাকার মালিক। অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করায় জুলফিকার আলী রাতারাতি দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন জায়গায় জায়গা, বাড়ি, দামি গাড়ি সহ বিভিন্ন সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে।

এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আরোও বলেন, জুলফিকার আলীকে হত্যা মামলায় আটক করার পর বিভিন্নভাবে তদবির শুরু হয় এবং পুলিশকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে ছাড়া পাওয়ার জন্য তদবিরও করেছিলেন জুলফিকার আলী।

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলের ১৬ বছরে কোটি কোটি অবৈধ অর্থ উপার্জন করায় এখন নিজেকে নতুন মোড়কে পুরাতন চেহারা বিএনপি নেতা হিসেবে ও নাম ভাঙ্গানোর চেষ্টা করছে ।

আওয়ামী লীগ সরকারের এই দোসর এখন বিএনপির নেতা হিসেবেও পরিচয় দিতে কার্পণ্য বোধ করছে না।  কিছু অর্থলোভী বিএনপি নেতারাও ঘুষখোর জুলফিকার আলীকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য পুলিশের নিকট বিভিন্নভাবে তদবির শুরু করেছে বলেও পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

জুলফিকার আলীকে গ্রেফতার করার পর বিএনপি নেতাদের তদবির আসতে থাকে। আটক জুলফিকার আলীর বিষয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা যাচাই বাছাই করে অবশেষে গত রবিবার বিকালের দিকে আদালতের মাধ্যমে জেল কারাগারে জেলার কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ।

একসময়ের মিটার রাইডার হাজিরা ভিত্তিক কাজ করলেও এখন কোটি কোটি টাকার মালিক  জুলফিকার আলী। অবৈধ  ভাবে অর্থ উপার্জনকারী জুলফিকার এখন দিনাজপুর কারাগারে  হত্যা মামলা ও একটি চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।

শ্রমিকদের ধর্মঘটে অচল আশুগঞ্জ নদী বন্দর
ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গণপিটুনিতে  একজনের মৃত্যু
ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ভারতকে সকল সুবিধা দিত হাসিনা:  আলতাফ হোসেন চৌধুরী