মহা সড়কে লাশ রেখে বিক্ষোভ
- দিনাজপুর প্রতিনিধি
-
২০২৪-০৯-১৬ ০৭:১৬:৫৮
- Print
দিনাজপুর বীরগঞ্জে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে জীবন ইসলাম (২৫) এর লাশ মহাসড়কের উপর রেখে হত্যাকারীদেরকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
আজ সোমবার সকাল নয়টা থেকে রংপুর ঠাকুরগাঁও মহাসড়কের বীরগঞ্জ থানার সম্মুখ মহাসড়কের উপর লাশ রেখে শত শত গ্রামবাসী হত্যাকারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতারের দাবিতে লাশ দেখে বিক্ষোভ মিছিল করে। এতে করে কয়েক হাজার যানবাহন আটকা পড়ে ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা
জানা যায়, বীরগঞ্জ পৌর শহরের ফিশারী এলাকার জ্যোৎস্না ফিলিং স্টেশনের রাখা ২ নং ওয়াডের মৃত আব্দুল বাতেনের পুত্র লাইজু অরফে বাবুর ট্রাক্টরের দুটি ব্যাটারি ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে কে বা কাহারা চুরি করে নিয়ে যায়।
১৫ সেপ্টেম্বর রবিবার সকাল ৮ টার দিকে ২নং ওয়ার্ডের ফিসারী এলাকার রোস্তম আলী গাঠু মিস্ত্রির ছেলে জীবন ইসলাম (২৫) নামে এক যুবককে নিজ বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় ডেকে নিয়ে গিয়ে জ্যোৎস্না ফিলিং ষ্টেশনের স্বত্ত্বাধিকারী রতন কুমার সাহা রেন্টুর মিলের গোডাউনের পাম্পের জেনারেটরের রুমে বেধে রেখে পিটিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে।
জীবন ইসলামের মৃত্যু ঘটনাস্থলেই হলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোসনা করলে।
বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমানের নেতেৃত্বে পুলিশ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে মৃতের পরিবারের মৌখিক অভিযোগ শুনে থানায় এজাহারের নির্দেশ দিয়ে লাশ মর্গে প্রেরন করে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জীবন ইসলামকে চোর সন্দেহে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ফিলিং ষ্টেশনের জেনারেটর রুমে হাত বেঁধে তিন ঘণ্টা ধরে কয়েক দফায় মারধর ও চরম শারীরিক নির্যাতন তার শরীরে গরম পানি ঢেলেছে এবং সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে পাম্প মালিক রতন কুমার সাহা রেন্টু ও ট্রাক্টর মালিক লাইজু অরফে বাবু সহ সংবদ্ধ একটি কিলার গ্রুপ পিটিয়ে হত্যার করে।
তারা আরো বলেন জ্যোৎস্না ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী রতন সাহা রেন্টুর হাত-পা ধরে প্রাণে বাঁচার আকুতি মিনতি করেও রেহাই পায়নি জীবন ইসলাম। কিন্তু পুলিশ মামলা না নেওয়ায় আসামিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারই প্রেক্ষিতে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে ও আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কে রাস্তায় লাশ রেখে।
নিহত জীবনের পিতা রোস্তম আলী গাঠু মিস্ত্রী জানান, আমার ছেলে জীবনের কাছে কোন চুরির মাল পাওয়া যায়নি তবুও কেনো তাকে পাম্পে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে হত্যা করা হয়।
রতন সাহা রেন্টুর যে পাম্পে নিয়ে গিয়ে আমার ছেলেকে বিনা অপরাধে মারা হয় সেই জ্যোৎস্না ফিলিং স্টেশন পাম্প কি ভাবে চালু রয়েছে। আমি ন্যায় বিচার চাই, হত্যাকারিদের গ্রেফতার চাই, হত্যাকারি রেন্টু শাহার ফাসি চাই।
সংবাদ পেয়ে বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মজিবুর রহমান ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়ে জনগনের সামনে জানায়, ১৫ সেপ্টেম্বর রাতেই মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলা নং- ১২। মামলার তদন্তের সার্থে আমরা ঘটনাটি নিয়ে জরুরী পদক্ষেপ নিয়েছি। রাতেই পুলিশ ও সেনাবাহিনী বিভিন্ন যায়গায় রেট দিয়েছি। পিটিয়ে হত্যা এটি অত্যন্ত পাষবিক ও নির্মম হত্যাকান্ড। ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে তিনি নিহতের পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করলে সাড়ে ১১ টায় রাস্তার অবরোধ তুলে নেয় এলাকাবাসী।
সকাল ৯ টা থেকে সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত আড়াই ঘন্টা ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কে অবরোধ চলাকালে রাস্তার দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকে যায় এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
মামলার তদন্তকারী অফিসার বীরগঞ্জ থানার এসআই আশরাফুল ইসলাম জানায়,জ্যোৎস্না ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী রতন সাহা রেন্টুকে প্রধান আসামী করে ৯ জনের নামে হত্যা মামলা হয়েছে।