বান্দরবানে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে আওয়ামীলীগের সঙ্গে আঁতাত করে নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন অনেকে। তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন বিগত সরকারের স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এর আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মাবুদ এবং জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান মিঠুন। দলের মধ্যে বিভাজন তৈরির আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে আঁতাত করে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। নামে-বেনামে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি), পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এবং পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে ৫০ কোটি টাকার বেশি উন্নয়ন কাজ করেছেন এরা দুজন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নে সরই-কোয়ান্টম সড়ক নির্মাণ ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা, আলীকদম দোছরি সড়ক নির্মাণ নির্মাণ ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা, তিন কোটি টাকায় এলজিইডি ভবন নির্মাণ। এছাড়াও জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী প্রকাশ বড়ুয়া ও আওয়ামীলীগের নেতা রাজেস্বর দাস বিপ্লবসহ কয়েক জনের সঙ্গে পার্টনারশিপে এলজিইডি অর্থায়নে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে রুমা বাজারে ব্রীজ, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অর্থায়নে সাত কোটি টাকা ব্যয়ে রোয়াংছড়ি খানসামা পাড়া ব্রীজ নির্মাণ'সহ জেলার সাতটি উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করেছেন।
আঁতাতের টাকায় বিএনপি নেতা আব্দুল মাবুদ জেলা শহরের হাফেজঘোনা এবং বান্দরবান বাজারে দুটি বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন। চট্টগ্রামে খুলেছে জুতার শোরুম। বিএনপি ত্যাগী নেতাকর্মীদের দাবী, বিএনপির মধ্যে কৌশলে বিভাজন তৈরি করে রেখেছেন আওয়ামীলীগের মন্ত্রীর কয়েকজন সুবিধাভোগী মুষ্টিমেয় দালাল। তারা স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ সরকারের সতের বছরের দূর্ণীতিবাজ নেতাদের অনেককে রক্ষা করতে সম্প্রতি ঢালাওভাবে ৩২ জনের নামে দূর্ণীতির অভিযোগ এনে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে আওয়ামীলীগের দূর্ণীতিবাজদের অনেকের নাম নেই। অথচ তারা দুজনও সুবিধাভোগী। এদের কারণেই বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
এদিকে দলের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে আওয়ামীলীগের কাছ থেকে সুবিধা নেয়ার অভিযোগের প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা মশিউর রহমান মিঠুন বলেন, বান্দরবান জেলা বিএনপি'র শীর্ষস্থানীয় নেতা জেরী বাবুর নির্দ্দেশনায় দূর্নীতিবাজদের তালিকা করা হয়েছে।যেখানে তার ইচ্ছার কোনরুপ মূল্যায়ন ছিল না এবং আওয়ামীলীগের সাথে আতত করে ঠিকাদারী কাজ পরিচালনার বিষয়টি মিথ্যা ও দলীয় ভাবে সম্মান ক্ষুন্ন করতে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
অপর জন আব্দুল মাবুদ জানান,গত ১৭ বছর ধরে কারো নিকট থেকে কোন প্রকার সুবিধা গ্রহণ করেনি এবং দলীয় কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যের চাহিদার ভিত্তিতে প্রাথমিক পর্যায়ে জেলার দূর্নীতি গ্রস্থদের তালিকা প্রদান করা হয়েছে।পরবর্তীতে আরও দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক মো: জাবেদ রেজা বলেন, ইতিমধ্যে যারা বিএনপির নাম ব্যবহার করে স্বপ্রনোদিত হয়ে দুর্ণীতিবাজদের অনেককে রক্ষা করতে স্মারকলিপি দিয়েছেন এবং কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাঠ ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ার মত বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেন্দ্রে তথ্য প্রমাণ পাঠানো হয়েছে।