অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার রাংগামাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একরামুল হক এর পদত্যাগের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ স্থানীয়রা।
রবিবার (৮ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত উপজেলার রাংগামাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক অবোরোধ করে এ মানববন্ধন করেন তারা।
এ সময় জেগেছে রে জেগেছে, রক্তে আগুন জেগেছে, এক দফা এক দাবী, হেড স্যারের পদত্যাগ, এসব স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
মানবন্ধন চলাকালে সড়কের দুপাশে শতশত যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকে। এতে সড়কের দুইদিকে প্রায় এক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয় এবং যাত্রীরা চরম দূর্ভোগে পড়েন।
মানবন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ, মারুফ , তানজিকা আক্তার, জান্নাতুন মাওয়া, জিসা, প্রাক্তন শিক্ষার্থী মোস্তাকিম, আরিফুল, রাকিব ও অভিভাবক উজ্জল, মিন্টু প্রমুখ।
আন্দোলনকারীরা বলেন, প্রধান শিক্ষক একরামুল হক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন হওয়ার পর, স্কুলের পুরোনো তিনটি ভবন টেন্ডার ছাড়াই ভেঙ্গে মালামাল গুলো আত্মসাত করেছে। স্কুল ক্যাম্পাসের শতাধিক গাছ টেন্ডার ছাড়াই বিক্রি করেছে। ফরম পূরণ ও রেজিষ্টেশনের অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করেন। এছাড়া অতি সম্প্রতি নিয়োগ বানিজ্যের ৩৫ লাখ টাকা আত্মসাত করেছে। বর্তমানে স্কুল ফান্ট ফাঁকা।
তারা বলেন, এই গরমে কষ্ট হলেও ক্লাস রুমের ফ্যান চালাতে দেননা প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ে শিক্ষার বিষয়ে ঠিকমত তদারকিও করেনা, নিজ খেয়াল খুশি মত চলেন। এত বড় বিদ্যালয়ে একটি শহীদ মিনারের ব্যবস্থা নাই, জাতীয় দিবস গুলোতে আমরা বিভিন্নভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করি। এসব ব্যাপারে প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টো আমাদের হুমকি ধামকি দেয় প্রধান শিক্ষক। এসব অনিয়ম দূর্নীতির কারণে আমরা তার পদত্যাগ চাই। এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী বরাবার দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
বিষয়টি নিয়ে রাংগামাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একরামুল হক এর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি নির্দোষ, আমার ব্যাপারে কোন অভিযোগ থাকলে তা তদন্ত করে দেখুক।
পরে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো. আল কামাহ্ তমাল ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি আমলে নেয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাসে ফিরে যায় এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মো.আল কামাহ্ তমাল বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হবে। কমিটির সদস্যরা অভিযোগ গুলো তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ততদিন প্রধান শিক্ষক ছুটিতে থাকবেন এবং বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়ত্বি পালন করবেন।