চলতি বছর জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত রেকর্ড উষ্ণতা দেখেছে বিশ্ব। এ বছরের গ্রীষ্মের গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে প্রাক-শিল্পায়ন যুগের (অষ্টাদশ শতাব্দীর আগে) তুলনায়।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, মানুষের জানা ইতিহাসে এর আগে কখনও বিশ্বের তাপমাত্রা এই উচ্চতায় পৌঁছায়নি। ইউরোপের জলবায়ু পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা সংস্থা কোপার্নিকাস এক বিবৃতিতে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। খবর সিএনএনের।
কোপার্নিকাসের উপ-পরিচালক সামান্থা বার্গেস ওই বিবৃতিতে বলেছেন, জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল থাকে, আর দক্ষিণ গোলার্ধে থাকে শীতকাল। এর আগে কখনও উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা এই পরিমাণে বৃদ্ধি পায়নি। মানুষের জানা ইতিহাস অনুসারে, ২০২৪ সালটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণ বছর।
অবশ্য গত জুন থেকে আগস্ট বিশ্বের সব জায়গায় উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়নি। কোপার্নিকাসের প্রতিবেদন অনুসারে, আলাস্কা এবং যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অংশ, পাকিস্তান এবং উত্তর আফ্রিকার সাহেল মরুভূমি এলাকায় চলতি বছরের গ্রীষ্মকালের তাপমাত্রা ছিল সেসব অঞ্চলের গড় তাপমাত্রার চেয়ে কম। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া, চীনের কিছু অংশ, জাপান এবং স্পেন রেকর্ড গরম দেখেছে জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত।
ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধির জেরে গরম বেড়েছে সাগরেও। কোপার্নিকাসের তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্ট মাসে সাগরপৃষ্ঠের গড় উষ্ণতা ছিল ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমন রেকর্ড উষ্ণতার জেরে বিশ্বজুড়ে খরা, দাবানল, ঝড়, অতিবর্ষণ, বন্যার মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। একদিকে মেক্সিকো ও ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চল গত তিন মাসে খরা এবং দাবানলের মতো দুর্যোগ দেখেছে, অন্যদিকে রাশিয়া, তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্য, চীন ও ভারতের কিছু অংশে দেখা দিয়েছে অতিবর্ষণ, বন্যা, ভূমিধসের মতো দুর্যোগ।
মানবসৃষ্ট কারণে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ এবং সেটি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতাকে বর্তমানের উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন সামান্থা বার্গেস।